• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভারতে বিদ্বেষের জোয়ার, নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ফেসবুক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১২:০৭
ভারতে বিদ্বেষের জোয়ার, নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ফেসবুক
ভারতে নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ফেসবুক, ছবি : সংগৃহীত

ভারতে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ নানা ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে অসংখ্য গুজব। ফেক নিউজ আর সাম্প্রদায়িকতার উস্কানিমূলক পোস্টের দৌড়াত্মে প্রায়ই ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। ফেসবুক যেন হয়ে উঠেছে দেশটির বিদ্বেষের আঁতুরঘর!

এ ব্যাপারে ২০১৯ সালে ফেসবুকের রেকমেনডেশন অ্যালগোরিদম নিয়ে কাজ করা ভারতের একজন ফেসবুক গবেষক বলেন, ‘গত তিন সপ্তাহে আমি যত মরদেহের ছবি দেখেছি, আমার সারা জীবনেও আমি তা দেখিনি।’

সম্প্রতি ওই গবেষকের সেই রিপোর্টসহ বেশ কিছু দলিলপত্র নিয়ে ‘ফেসবুক পেপারস’ নামের নথি সংগ্রহ করেছে নিউইয়র্ক টাইমসসহ আরও কিছু সংবাদমাধ্যম।
‘ফেসবুক পেপারস’অনুযায়ী, ফেক নিউজ, বিভ্রান্তিমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টে সয়লাভ ফেসবুকের সবচেয়ে বড় বাজার ভারত। ভার্চুয়াল জগতের এই বিদ্বেষের জোয়ার ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিশাল কোম্পানি ফেসবুক।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে ফেসবুক ভারতের ২২টি স্বীকৃত সরকারি ভাষায় যথেষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ না করায়। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতার অভাবও এর জন্য দায়ী।

এ ব্যাপারে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র জানান, গবেষণায় এসব ফলাফল উঠে আসার পর ভারতে তাদের রেকমেনডেশন প্রক্রিয়াটি আরও গভীরভাবে মূল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে কোম্পানিটি। তারা পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে পদক্ষেপও নিয়েছে।

গুজব থেকে প্রকৃত সত্য আলাদা করতে ভারতে ফেসবুকের ১০টি ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান পার্টনার হিসেবে কাজ করে। ইংরেজি ও আরও ১১টি ভাষায় ফেসবুকে ফ্ল্যাগ করা কনটেন্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এটাই ফেসবুকের সবচেয়ে বড় ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক।

একটি ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘কিন্তু আমরা কোনো ফেক নিউজ বা পোস্ট ট্যাগ করার পর ফেসবুক কী করবে সেটা দেখার মতো নৈতিক বা আইনগত অধিকার আমাদের থাকে না।’

ভারতে ব্যক্তিগতভাবে এবং পেইজ কিংবা গ্রুপ থেকেও নানা গুজব ও বিদ্বেষ ছড়ানো হয়ে থাকে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সম্পর্কিত অসংখ্য ফেক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য ইউজার পেজ ও গ্রুপ মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষমূলক কনটেন্ট ছড়িয়ে দেওয়ায় কাজ করে। সাধারণত ‘বাক স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা’বজায় রাখতে রাজনৈতিক নেতাদের ভাষণ এবং মতামতের বিষয়ে কোনো ফ্যাক্ট-চেক করে না ফেসবুক। এর ফলে পরিস্থিতি চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

ভারতের নিরপেক্ষ ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান অল্ট নিউজ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা বলেন, ‘ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্যের একটা বড় উৎস হচ্ছে শাসক দলের রাজনীতিবিদরা। এদের এসব পোস্ট সত্য না ভুয়া, ফেসবুক কখনও এসব যাচাই করে না।’

ফেসবুকের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি নিরাপত্তার জন্য ২০১৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩০০ কোটি ডলার অর্থ ব্যয় করেছে এবং ৪০ হাজার লোক নিয়োগ করেছে। ফেসবুকের একজন মুখপাত্র জানান, বিশ্বের ৭০টিরও বেশি ভাষায় ১৫ হাজারেরও বেশি লোক বিভিন্ন কনটেন্ট নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করছেন। এর মধ্যে ২০টি ভারতীয় ভাষাও রয়েছে।

ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘হিন্দি ও বাংলাসহ নানা ভাষায় ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ করতে কোম্পানিটি প্রযুক্তি খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। এর ফলে মানুষ আগে যতগুলো ঘৃণাসূচক পোস্ট দেখত, এখন দেখতে পাচ্ছে তার অর্ধেক। আজ এটা নেমে এসেছে ০.০৫ শতাংশে। বিশ্বজুড়েই মুসলিমসহ সব প্রান্তিক মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক বক্তব্য বাড়ছে। এজন্য আমরা আইন প্রয়োগ করছি বেশি করে। অনলাইনে ঘৃণাসূচক বক্তব্য ছাড়ানোর কায়দা বদলে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের নীতিমালাতেও আমরা পরিবর্তন আনছি।

ফেসবুকের সাবেক ডেটা বিজ্ঞানী রডি লিন্ডসে বলেন, (অ্যালগোরদিম) এটা নিশ্চিত করে যে এসব নিউজ ফিড থেকে ক্রমাগতই সবচেয়ে সুড়সুড়ি দেওয়া, সবচেয়ে জ্বালাময়ী কনটেন্টগুলোকে তুলে ধরবে। এটা মডারেটরদের জন্য তৈরি করে বিরাট এক সমস্যা। শত শত ভাষায়, শত শত দেশে রাজনৈতিক ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে যেসব কনটেন্ট ভাইরাল হয়ে যায়, তার ওপর নজরদারি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ডব্লিউএস/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মোদি ও রাহুলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ, ইসির নোটিশ
বাংলাদেশ-চীনের সামরিক মহড়া, যে প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত
ভারতীয় হৃদয়ে প্রাণ বাঁচল পাকিস্তানি তরুণীর
ভারতের পাটনায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৬
X
Fresh