পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু, ৩ হাজার টাকার অক্সিজেন ২০ হাজার টাকা
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিবেশি ভারতে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার ফলে হাসপাতালগুলোতেও চাপ বাড়ছে। অক্সিজেনের অভাবে প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে সেখানে।
কিন্তু এই মহামারির মধ্যে বাজারে দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সঙ্কট। অনেক ওষুধের দোকানই এখন অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি করতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। আর এ সুযোগে শুরু হয়েছে কালোবাজারি।
কলকাতায় করোনায় নিহতের অনেকেরই অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। যে কারণে অক্সিজেন সঙ্কট আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার জেরে কালোবাজারিও বাড়তে পারে বলে অনুমান।
হলদিয়ার সুপ্রিয় শাসমল তার কোভিড আক্রান্ত মায়ের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন। কোথাও সিলিন্ডার পাননি। আবার উত্তর কলকাতার অনুসূয়াদে-র কাছ থেকে সিলিন্ডারের জন্য যে পরিমাণ মূল্য চাওয়া হয়েছে, সেটা জোগাড় করার আগেই রোগীর মৃত্যু ঘটে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাতে টাকা থাকলেও মিলছে না সিলিন্ডার। এ চিত্র কমবেশি সর্বত্র। সঙ্কট আঁচ করতে এক অক্সিজেন সরবরাহকারীর সঙ্গে কথা বলে ডয়চে ভেলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই সরবরাহকারী জানান, সিলিন্ডারের জন্য জমা রাখতে হবে ২০ হাজার টাকা। ইনস্টলেশন খরচ ৫৮০০ টাকা। দৈনিক ভাড়া ১৫০ টাকা।
কালোবাজারির জেরে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকা হচ্ছে সিলিন্ডারের। ১৫০০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার সাধারণত হাজার তিনেক টাকায় ভাড়া পাওয়া যায়। মাসে একবার রিফিল-এর খরচ আড়াইশো টাকা।
আর এখন এর জন্য এখন দিতে হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ডি-টাইপ সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে খরচ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে, যা সাধারণ সময়ের দশগুণ।
বাম যুবদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ভলান্টিয়ার্স-এর সদস্য ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ পর্যাপ্ত নেই। এ ছাড়া মেডিক্যাল অক্সিজেন প্লান্ট-এ পূর্ণমাত্রায় এর উৎপাদন হচ্ছে না অক্সিজেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবের অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলিও কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।
তবে রাজ্য সরকারের দাবি, তাদের হাতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। শীর্ষ আদালতে হলফনামায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, রাজ্যের অক্সিজেন উৎপাদন ক্ষমতা ৪৯০ মেট্রিকটন। এখন ৩৬২ মেট্রিকটন উৎপাদন হচ্ছে। রাজ্যের বর্তমান চাহিদা ২৫০ মেট্রিক টন। তবে জুনে এই চাহিদা ৬০০ মেট্রিক টনে পৌঁছাতে পারে। তখন সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে
টিএস
মন্তব্য করুন