বিবাহবার্ষিকীতে বরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে যা লিখলেন আলিয়া
২০২২ সালের ১৪ এপ্রিল, সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন রণবীর-আলিয়া। রোববার (১৪ এপ্রিল) ছিল তাদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে আলিয়া পোস্ট করেন একটি অদেখা ছবি।
ক্যাপশনে আলিয়া লেখেন, ‘দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকীর শুভেচ্ছা মাই লাভ। আজকের মতোই আরও বহু বছর তোমার সঙ্গে কাটাব।
সাদা-কালো সেই ছবির সঙ্গে আলিয়া একটি বৃদ্ধ দম্পতির অ্যানিম্যাটেড ছবিও পোস্ট করেছেন। আর তারপর থেকেই অনুরাগীদের শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন কাপুর দম্পতি।
মন্তব্য করুন
আসিফ নজরুলকে যে কথা মনে করিয়ে দিলেন শাওন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সরব ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর ছাত্ররা আস্থা রেখেছেন ড. আসিফের প্রতি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, ২০২০ সালে ড. আসিফ নজরুলের দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্ট সম্প্রতি নতুন করে ভাইরাল হয়েছে। যেটি আবার নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিলেন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ পত্নী মেহের আফরোজ শাওন। পোস্টটি শেয়ার করে এই অভিনেত্রী-নির্মাতা লিখেছেন, ‘এখন নিশ্চয়ই হবে। আশায় আছি…।’
২০২০ সালে আসিফ নজরুলের দেওয়া ফেসবুক পোস্টটি ছিল এমন, যদি ক্ষমতা থাকত আইন করতাম; বর্তমান বা সাবেক প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীগণ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে পারবেন না। ক্ষমতা, চাকুরি বা ব্যবসা কোনোভাবেই তাদের সন্তানরা সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারবেন না। সপ্তাহে অন্তত একদিন তাদের গণপরিবহনে চড়তে হবে। রাস্তায় চলাকালে তারা অন্য একটি যানবাহনও থামিয়ে রাখতে পারবেন না। বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে তারা অতি-জরুরি ছাড়া কোনো সফরসঙ্গী নিতে পারবেন না, এ বিষয়ে সংসদকে জানাতে হবে।
পোস্টে তিনি আরও লিখেছিলেন, জনগণের টাকায় কোনো কিছু উদ্বোধন বা জনগণকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের নাম ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হবে। তাদেরকে মহামান্য ও মাননীয় বলা নিষিদ্ধ হবে। তাদের ও তাদের পরিবারের দেশে-বিদেশে সকল সম্পত্তি ও আয়ের বিবরণ জনগণকে জানাতে হবে। দুদকের একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন ইউনিট শুধুমাত্র তাদের বিষয়ে নজর রাখবে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও আরও বহু কিছু করতাম। যারা লুটেরা, চোর আর সন্ত্রাসী—তাদের জীবন নরক বানিয়ে ছাড়তাম।
প্রসঙ্গত, আসিফ নজরুল ও শাওনের আরও একটি পরিচয় আছে। সম্পর্কে শাওনের মেয়ে জামাই হচ্ছেন আসিফ। স্বামী হুমায়ূন আহমেদের প্রথম সংসারের তৃতীয় মেয়ে শিলা আহমেদের বর ড. আফিস নজরুল।
আমি ১৫ দিন পালিয়ে ছিলাম, এখনও ট্রমায় আছি: সজল
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন অনেক তারকাই। নিজ নিজ জায়গা থেকে কেউ রাজপথে, কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন প্রতিবাদও। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রিয়েলিটি শো ‘পাওয়ার ভয়েস’ খ্যাত গায়ক সজলও। বৈষম্যবিরোধী এ আন্দোলনে থাকার কারণে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।
এ দিকে মামলার পর দুই সপ্তাহের বেশি পালিয়ে থাকতে হয় সজলকে। এমনকি তার মহাখালীর আরজতপাড়ার বাসায় একাধিকবার ব্লক রেইড দেওয়া হয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন সজল।
সংগীতশিল্পী সজল বলেন, প্রথম দিন থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম আমি। যেদিন থেকে রাজপথে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের হামলা হয়, সেদিন থেকে। আমি একজন শিল্পী। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই আমার। শিল্পীদের কোনো সংগঠন নেই। আমি শুধু আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি, সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব, জুলুম এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে।
সজল আরও বলেন, ১৫ দিন বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে ছিলাম আমি। বিজয়ের দিন ফিরে আসছি। এখনও ট্রমায় আছি। এরপর আমি আর কোথায়ও আন্দোলনে অংশ নিতে পারিনি। কারণ, আমার এলাকা থেকে জানতে পারি, আমাকে দেখামাত্রই নাকি গুলি করার হুকুম ছিল।
তিনি বলেন, আমার বাসায় যখন পুলিশ হামলা-ভাঙচুর করেছে, তখন তারা বন্দুক উঁচিয়ে বলেছিল, সজলকে দেখামাত্র গুলি করা হবে। আমার অপরাধ, আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে, রাজপথে থাকা মানুষ।
সবশেষে সজল বলেন, ১৯৯০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সিস্টেম ছিল, এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে আমরা একটা নতুন প্রক্রিয়ার বাংলাদেশ চাই। অবশ্যই গণতান্ত্রিক এবং রাজতন্ত্র নয়, সেটা প্রজাতন্ত্রের হতে হবে।
‘আরাফাতকে খুঁজছি, সে আমার জেতা আসন ছিনতাই করেছে’
ঢাকা-১৭ আসনে ২০২৩ সালের উপনির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে খুঁজছেন আলোচিত-সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম। প্রার্থী হওয়ায় সে সময় তাকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জিতে প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন আরাফাত।
সেদিন তার ওপর হামলাকারীদের মোহাম্মদ আলী আরাফাতের লোক বলে দাবি করেছিলেন আলম। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন আমি ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রতিমন্ত্রী আরাফাতের নির্দেশে কিছু লোক আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। দায়িত্বরত পুলিশও আমার পাশে দাঁড়ায়নি। কোনো মতে বেঁচে ফিরেছিলাম। সেই বিচার আমি আজও পাইনি। এখন আমি আরাফাতকে খুঁজছি, তাকে পেলে ধরে মামলা করবো। সে আমার জেতা আসন ছিনতাই করেছে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে একতারা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন হিরো আলম। নৌকা প্রতীক নিয়ে আরাফাত পেয়েছিলেন ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট, এবং হিরো আলম পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট। গুলশান, বনানী, বারিধারা এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে এই আসন। এই দুই প্রতীদ্বন্দ্বী ছাড়াও বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে ৮ প্রার্থী অংশ নিলেও উপনির্বাচনে ছিল না বিএনপির কোনো প্রার্থী।
‘টাকা যত চাস তত পাবি, ভিডিওটা সুন্দর কইরা কর’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা, নির্যাতন ও গুলি চালানোর ঘটনার কথা সবার জানা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শেষ পর্যন্ত দমিয়ে রাখতে পারেনি শিক্ষার্থীদের। শেষ পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থী ও মানুষের রোষানলে পড়ে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন দেশের বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় তরুণ সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান। কখনো পরোক্ষভাবে আবার কখনো প্রত্যক্ষভাবেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জুগিয়েছেন তিনি। যে কারণে বিভিন্ন মহলের চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল এই গায়ককে। সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তাসরিফ জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। এমনকি রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় কুড়েঘর ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে।
যেসব ঘটনার পরে নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তাসরিফ। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে সেই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
‘কিছু নির্মম ইতিহাস টাইমলাইনে থাকুক’ শিরোনামে সেই পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
২৩ জুলাই রাত রাত ১টার কথা বলছি। একজন সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সার কল দিয়ে বললেন, ‘তাসরিফ, তোর বাসার নিচে নাম, চা খাইতে আসতেছি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আছে।
৫ জুলাই থেকে ছাত্রদের পক্ষে বিভিন্ন পোস্ট করা, কবিতা লিখতে থাকা এবং ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’ গানটা ফেসবুকে চলতে থাকায় সরকারি গুণ্ডা বাহিনীর থ্রেটে আমি তখন বাসার বাইরে অবস্থান করছিলাম। ওই সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সারের কথায় বিশ্বাস করে আমি তখন বাসার সামনে আসি উনার সঙ্গে দেখা করতে। গাড়ি থেকে ৬-৭ জনের মতো নেমে আসে। ইনফ্লুয়েন্সার সাহেব আমাকে একটু সাইডে নিয়ে আস্তে করে বুঝিয়ে বলেন, সাথে যারা আছে তারা একটা এজেন্সির লোক এবং আইন প্রয়োগ সংস্থার বাহিনীর কয়েকজনও আছে এখানে।
আমি তখন উনার কাছে জানতে চাই যে, উনারা কেন এসেছেন, কী চাচ্ছেন মূলত! উনি তখন বুঝায়ে বলেন, সরকারি একটা কাজ আছে, এই সরকার আরও ৭-৮ বছর ক্ষমতায় থাকব। আমরা ঠিকমতো বাঁচতে চাইলে সরকারের পক্ষে কাজ করতে হইব, এর বাইরে কোনো রাস্তা নাই।
এই কথা বলে উনি (ইনফ্লুয়েন্সার) আবার আমাকে গাড়ির কাছে নিয়ে যান। সেই ৬-৭ জনের মধ্য থেকে একজন আমাকে বলে, তাসরিফ, তোমাকে আমরা চিনি। আমরা তোমাকে একটা স্ক্রিপ্ট দিতেছি, ছোট্ট একটা ভিডিও করতে হবে। এই ভিডিওটা আমাদের কালকের মধ্যে লাগবে। পরশু সরাসরি প্রধানমন্ত্রী এই ভিডিওটা দেখবেন এবং তারপর তুমি আপলোড করবা।
সেই ইনফ্লুয়েন্সার তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমাকে বলেন, দেখ তাসরিফ, পিএমের চোখে পড়ার এটাই সুবর্ণ সুযোগ, ভিডিওটা ভালো করে কর, সরকার যতদিন আছে সুবিধা পাবি।’ কথা শেষ করার আগেই উনি পকেট থেকে এক লাখ টাকার তিনটা বান্ডেল, মোট তিন লাখ টাকা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, এইটা সামান্য ছোট একটা গিফট! টাকা যত চাস, তত দেওয়া হবে, ভিডিওটা সুন্দর কইরা কর।
ঠিক এই সময় আমার ফোনে আমার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তর নম্বর থেকে একটা কল আসে। ফোন রিসিভ করতেই শান্ত আমাকে কাঁদতে কাঁদতে বলে, তাসরিফ! পাঁচ-ছয়জন পুলিশ এবং সিভিল ড্রেসের কয়েকজন মিলে আমাকে রোল দিয়া সারা শরীরে মারছে!
শান্তর কথা শুনে আমার হাত-পা একরকম কাঁপতে থাকে। আমি বোঝার চেষ্টা করি, এই মাইর খাওয়াটা কি আমাকে এদিকে রাজি করানোর জন্য ভয় দেখানো? নাকি কেবলমাত্র একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা? শান্তর লাইন কেটে যায়।
আমি আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয় দেওয়া তাদেরকে বলি, ‘ভাই, এইমাত্র কয়েকজন মিলে আমার ভাই, আমার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে প্রচুর মারছে!’ ওরা জাস্ট আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, ‘আরেহ! দেশের যে অবস্থা, এটা এখন কিছু করা যাবে না। ওরে বলো বাসায় চলে যাইতে।’
আমার তখন মাথায় আসে, এখন যদি আমি ওদেরকে টাকা ফিরিয়ে দিই অথবা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানাই, তবে তারা আমাকে চাইলেই গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে ভিডিও করে জোরপূর্বক আপলোড করাতে পারে। আমি তাই মাথা ঠাণ্ডা করে ওদেরকে বলি ঠিক আছে আমি দেখতেছি কী করতে পারি, কালকের মধ্যে জানাচ্ছি। ওরা আমাকে তখনও একরকম থ্রেট দিয়ে বলে, ‘ভাই জানাচ্ছির সুযোগ নাই! সিচুয়েশন তো বুঝেনই। ভিডিও কালকেই লাগবে।’ সাথে ওই ইনফ্লুয়েন্সারও আমাকে বলে, ‘তাসরিফ, ভিডিওটা তো পিএম দেখবে সো বুইঝা-শুইনা সুন্দর কইরা করিস।’
ওদের সাথে কথা শেষ করে আমি বাসায় ফেরত যাই। বাসায় সবাইকে সব সিচুয়েশন জানিয়ে আমি আমার ম্যানেজার আয়মান সাবিতকে ফোন দিয়ে বলি, ‘আয়মান, আমি বাসা ছেড়ে দিচ্ছি, এই এই ঘটনা ঘটছে। আমি তোকে নম্বর দিচ্ছি, তুই ওই এজেন্সিকে আমার বাসা থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে ওদেরকে দিয়ে দিবি কালকেই। আমি আপাতত বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছি, কারণ আমি বাসায় থাকলে ওরা আমাকে তুলে নিয়ে যাবে।’
ওই সময় আমার মনের অবস্থা আমি জানি। আমার বাসার অবস্থা, ডায়াবেটিসের রোগী আমার আম্মুর অবস্থা, আব্বুর টেনশন, গুম হয়ে যাওয়ার চিন্তা এবং দেশের সাথে বেইমানি করতে ওরা আমাকে বাধ্য করতে চাচ্ছে। সব কিছুই আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সাথে বারবার আমার কানে বাজছে শান্তর ওই কান্না ভরা আর্তনাদ।
কষ্টের ব্যাপার কী জানেন? এই ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগে শান্ত আমাকে ফোন দিয়ে বলছিল, খান, আমার বাসায় আম্মা নাই। এদিকে কারফিউ চলছে, দুপুরের খাওয়া হয় নাই, একটা দোকানও খোলা নাই আমার প্রচণ্ড ক্ষুধা লাগছে, কী করব?’ আমি শান্তকে বলছিলাম, এক বড় ভাই ফোন দিয়েছে, আমার বাসার সামনে যাওয়া লাগছে, তো তুমি আমার বাসায় চইলা আসো, দুই ভাই একসাথে খাব।
ছেলেটা চেয়েছিল আমার বাসায় এসে ভাত খাইতে অথচ তাকে রাস্তায় বেধড়কভাবে মাইর খাইতে হইল। মার খাওয়ার পরে ফোনকলে ও আমাকে এটাও বলছিল যে, ‘খান! সবাই আমারে একসাথে রোল দিয়ে মারতেছিল আর একজন বন্দুক তাক করে চিল্লায়ে বলছিল, চুপচাপ মাইর খা অমুকের পোলা নাইলে গুলি কইরা মাইরা ফালামু, লাশ খুঁজে পাইব না তোর পরিবার!’
শান্ত এই কথাটা বলতে বলতে কাঁদতেছিল যে, আমাকে ছাত্র বইলা বইলা ওরা মারছে আর বারবার বলতেছিল যে এই অমুকের পোলা ছাত্র! ওরে মার!’ ওই রাতে আমি বাসা থেকে পালিয়ে যাই।
আমি জানি কয়েকটা পোস্ট, কবিতা লেখা আর ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’-এর মতো কিছু গান করা ছাড়া দেশের জন্য তেমন কিছুই করতে পারি নাই। আমি জানি, আমি আবু সাঈদের মতো পথে গিয়ে বুক পেতে দিতে পারি নাই। হয়তোবা এতটুকু সাহস আমার তখন হয় নাই। তবে, আল্লাহ জানেন আর আমি জানি, আমি টাকার কাছে বিক্রি হয় নাই আর দেশের সাথে বেইমানি করি নাই।
এই পোস্ট, পোস্টে শান্তর ছবিগুলো এবং ওদের নির্মমতার কথাগুলো আমি লিখে পোস্ট করছি এই কারণে, যেন ভবিষ্যতে কখনও এই স্বৈরাচারের প্রতি আমার ঘৃণা এতটুকু পরিমাণও কমে না যায়।
বন্যার্তদের সহযোগিতার কথা বলে তোপের মুখে চঞ্চল
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার ও লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি জেলা এখন বন্যায় বিপর্যস্ত। বসতভিটা ভেসে যাওয়াসহ মূল্যবান সব হারিয়ে এখন অসহায় এসব অঞ্চলের মানুষ। জীবন রক্ষায় প্রাণপন ছুটে চলছেন তারা।
মাথার ওপর একমাত্র আকাশ ছাড়া কিছুই নেই তাদের। কিন্তু সেই আকাশ থেকেই আবার কিছুক্ষণ পরপর বৃষ্টি পড়ছে। বাড়ির কোমলমতি শিশুসন্তান এবং গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে এ অবস্থায় বাকরুদ্ধ তারা। একটু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আর্তনাদ তাদের।
এদিকে বন্যার এই পরিস্থিতিতে দেশের অন্যসব অঞ্চলের মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ আবার এগিয়ে আসছেন। সাধারণ শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে রয়েছেন শোবিজ ও সংগীত তারকা। এদেরই একজন ছোট ও বড়পর্দার অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টায় ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে এ অভিনেতা লিখেছেন, ‘আসুন, আমরা সবাই বানভাসি মানুষের পাশে দাড়াই।’ এরপর কিছু আশ্রয়কেন্দ্রের ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখের পর লিখেছেন, ‘সবাই সাবধান থাকুন, আবহাওয়া খুবই খারাপ। জলাবদ্ধতা বেশি হলে আশ্রয়কেন্দ্রে উপস্থিত হোন। বাড়িতে অবস্থান করতে পারলে প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার, পানি, স্যালাইন ও মোম মজুত রাখুন। পারলে পাশের আশ্রয় কেন্দ্রে ও প্রতিবেশীদের শুকনা খাবার দিয়ে সাহায্য করুন।’
বানভাসিদের নিয়ে অন্য তারকাদের উদ্যোগ প্রশংসায় ভাসালেও চঞ্চলের ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টো। তার কথায় কেউ কর্ণপাত করেননি। রীতিমতো এক হাত নিয়েছেন বেশির ভাগ মন্তব্যকারী। কটাক্ষ ও আক্রমণাত্মক মন্তব্যে জর্জরিত করেছেন অভিনেতাকে।
একজন লিখেছেন, ‘মীরজাফরদের খাতায় নাম থাকবে সারাজীবন।’
অন্য এক নেটাগরিক লিখেছেন, ‘এই তো সুযোগ মানুষের সহানুভূতি অর্জনের। কাজে লাগা ভাই কাজে লাগা।’ অন্য একজনের কথায়, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময় কি পাশে দাঁড়ানোর জন্য পোস্ট দিতে ভুলে গিয়েছিলেন?’
পাশাপাশি ‘দালাল’ ও ‘সুবিধাবাদী’ বলেও অনেকে সম্বোধন করেছেন অভিনেতাকে। মানুষের আবেগ নিয়ে খেলার প্রয়োজন নেই বলেও সাবধান করেছেন অভিনেতাকে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নীরব ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী। ফলস্বরুপ দেশের অধিকাংশের কাছে খলনায়কে পরিণত হন তিনি। সেসময় চঞ্চল জানান মায়ের অসুস্থতার কারণে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। যদিও তার এ ব্যাখ্যা সন্তুষ্ট করতে পারেনি নেটিজেনদের। অন্যদিকে চঞ্চলও নীরব হয়ে যান।
খালেদা জিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি জায়েদ-জয়-সাজুসহ ৫০ জন
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চিত্রনায়ক জায়েদ খান, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়, সাজু খাদেমসহ ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবীর আদালতে ব্যান্ড শিল্পী আসিফ ইমাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মতিঝিল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন, শেখ সেলিম, শেখ হেলাল, কর্নেল ফারুক খান, ফজলে নূর তাপস, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাবের হোসেন চৌধুরী, মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সাইদ খোকন, বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, আবু আহম্মেদ মন্নাফী, মতিঝিল জোনের তৎকালীন এডিসি মেহেদী, একে এম মমিনুল হক সাঈদ, মোস্তফা জামান পপি।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পথসভায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা অস্ত্রসহ তার গাড়িবহরে আসামিরা হামলা চালান। এ সময় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের ১২-১৪ টি গাড়ি ভাঙচুর করে, ৪টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় এবং নেতাকর্মীদের মারধর করেন। এ সময় খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা আহত হন। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে আসামিরা ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে সাধারণ পথচারীরা আহত হন।
চিত্রনায়িকা মাহিকে দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিদেশে পাড়ি দিতে বিমানবন্দরে গিয়ে আটক হয়েছেন অনেক নেতাকর্মী। সেই ধারাবহিকতায় এবার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বিমানবন্দরে।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে এই নায়িকাকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষায় রেখে বিশেষভাবে চেক করা হয় নথিপত্র। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে তার নাম আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তায় বিষয়টি নিজেই জানিয়েছেন মাহি।
ওই ভিডিওতে মাহি বলেন, এক থেকে দেড় ঘণ্টা হবে, আমি জাস্ট বসেছিলাম। কারণ, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হতে চাইছিল আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে কি না। ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট ভালোভাবে চেক করার পরই ফ্লাই করতে পেরেছি।
মূলত একদিনের জন্য দেশের বাইরে গিয়েছিলেন মাহি। এরপর সেখানের কাজ সেরে আবারও ঢাকায় ফিরেছেন এই নায়িকা।
প্রসঙ্গত, অভিনেত্রী পরিচয়ের বাইরেও রাজনীতিতে বেশ সরব ছিলেন মাহি। আওয়ামী লীগের হয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দলের সমর্থন না পাওয়ায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি এই চিত্রনায়িকা। শেষমেশ নির্বাচনে বড় ব্যবধানেই হেরেছেন তিনি।