সীতাকুণ্ডে গরুর ন্যায্য দাম না পাওয়ার শঙ্কা খামারিদের
পবিত্র ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে এখনো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পশুর হাট বসেনি। তাই এবারে খামারিরা গরুর ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তারা বলছেন, গরু ও খামারের সংখ্যা বাড়লেও সে তুলনায় বাড়েনি গরুর চাহিদা। তাই তারা গরুর ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবেন।
জানা যায়, এমনিতে দেশে করোনার প্রভাবে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। এর পাশাপাশি প্রয়োজনের তুলনায় সীতাকুণ্ডের খামারগুলোতে গরুর সংখ্যা বেশি। আবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে হাটে ক্রেতা কম আশার শঙ্কা রয়েছে। এসব বিবেচনায় এবার গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা।
উপজেলার প্রাণীসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের কুরবানির জন্য সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৩৭ হাজার ৪৪৩টি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু (ষাঁড়) ১৭ হাজার ৮৪৮টি, (বলদ) ৭ হাজার ৬৫৬টি, গাভী ১ হাজার ৬৫৫টি, মহিষ ২ হাজার ১৭৪টি, ছাগল ৫ হাজার ৬৭৭টি ও ভেড়া ২ হাজার ৩৩৪টি পশু রয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে এবারের কুরবানির ঈদের বাজার তেমন ভাল যাবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও খামারিরা। কুরবানির হাটে গবাদি পশুর দাম কম থাকলে খামারিদের সঙ্গে মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়বেন।
করোনাভাইরাসের কারণে এবার পশুর হাট ক্রেতা শূন্য থাকবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক ইজারাদার। তবে কোথাও কোথাও হাট বসলেও এখনো জমে উঠেনি বেচা-কেনা। বেশির ভাগ মানুষই এবার গ্রাম থেকে কুরবানির গরু কিনতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
আর যারা হাট থেকে পশু কিনবেন তারা ঈদের দুই-একদিন আগে কিনবেন। মূলত গরু রাখার ঝামেলা এড়াতেই তারা কুরবানির আগেই কিনবেন। আগামী ২৫ তারিখের পর থেকে জমে উঠতে পারে বেচা-বিক্রি।
টেরিয়াল এলাকার মোহাম্মদ রাসেল নামে এক খামারি জানান, এক মাস আগে এক বস্তা (৩৫ কেজি) গমের ভুসির দাম ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪০০ টাকা। শুধু গমের ভুসি নয়, সব গো-খাদ্যের দাম গড়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
কুমিরা এলাকার আরেক খামারি মোহাম্মদ খুরশেদ জানান, আমি গত বছর থেকে খামার করা শুরু করেছি গত বছর আমি সেই রকম লাভ করতে পারিনি। আশাকরি এবছর আমি লাভ করতে পারব। আমরা সারা বছর কমবেশি গরু বিক্রি করি। কুরবানিকে সামনে রেখে কয়েকটি গরুকে ভালভাবে মোটাতাজা করেছি। তবে করোনার কারণে আমরা একটু শঙ্কায় আছি পশুর হাটগুলোতে ঠিকমত ক্রেতা আসবে কিনা।
কুমিরা গরুর বাজার ইজারাদার মোহাম্মদ তসলিম জানান, আমরা সরকারের কাছ থেকে যে পরিমাণ টাকা দিয়ে পশুরহাট ইজারা নিয়েছি তার তিন ভাগের দুই ভাগ লোকসান হবে। করোনাভাইরাসের কারণে বাজারে গরু বিক্রেতারা গরু আনছে না। অপরদিকে করোনার কারণে ক্রেতারাও ভয়ের মধ্যে আছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহ জালাল মো. ইউনুচ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কুরবানির বাজার কিছুটা মন্দা হতে পারে। আমরা হাট ইজারাদারদের বলবো প্রতিটি হাটের মুখে স্প্রে মেশিন বসানোর জন্য। যারা হাটে প্রবেশ করবেন তারা অবশ্যই মুখে মাস্ক পড়ে ঢুকতে হবে। এছাড়াও আমাদের তিনটি মেডিকেল টিম সবসময় পশুর হাটগুলোতে থাকবে।
এজে
মন্তব্য করুন