• ঢাকা শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

লকডাউন হতে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকা 

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ

  ০৮ জুন ২০২০, ২২:৩৬
Manikganj municipal area is going to be locked down
ছবিঃ সংগ্রহীত

মানিকগঞ্জে আশংকাজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সরকারি হিসেব মতে, জেলায় এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৪৫ জনের দেহে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায়। যা সংখ্যায় ১০০ জন। এর মধ্যে শুধু পৌর এলাকায় রয়েছেন ৬৮ জন। এ কারণে পৌর এলাকাকে করোনা সংক্রমণের হট স্পট ধরা হচ্ছে। এই এলাকায় আশংকাজনক হারে অব্যাহতভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন করোনা স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকাকে যেকোনো দিন লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় আক্রান্ত ১০০ জনের মধ্যে ৬৮ জনই রয়েছেন মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার। অন্য ৩২ জনের মধ্যে বেতিলা মিতরা ইউনিয়নে ১৫ জন, জাগীর, গড়পাড়া ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ৪ জন করে, হাটিপাড়া ইউনিয়নে ৩ জন এবং আটিগ্রাম ইউনিয়নে রয়েছেন ২ জন।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ৬৭০টি নমুনা পরীক্ষায় ১০০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ জন পুরুষ এবং ২৩ জন নারী। আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন হাসপাতালে ও ৭০ জন নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। আর অন্য ২৪ জন সুস্থ হয়েছেন। তবে, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় এ পর্যন্ত কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। আক্রান্তদের শরীরের অবস্থা ভালো বলে জানান তিনি।

জনসংখ্যা এবং পরীক্ষার আনুপাতিক হারে আক্রান্তের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মানিকগঞ্জ পৌর এলাকাকে হট স্পট ধরা হচ্ছে। এ কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির প্রধান এবং জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস। আজ (সোমবার) জেলা প্রশাসকের আহ্বানে তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সভায় পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলেই মানিকগঞ্জের অব্যাহত করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার পাশাপাশি সাটুরিয়া উপজেলায় ৬৯ জন, সিংগাইর উপজেলায় ৬৫ জন, ঘিওর উপজেলায় রয়েছেন ৪৯ জন আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত হয়েছে হরিরামপুর উপজেলায় ২৮, শিবালয় উপজেলায় ২৫ জন ও দৌলতপুর উপজেলায় রয়েছেন ৯ জন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৪৮৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে তিন হাজার ৯০টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। যাতে পজিটিভ পাওয়া গেছে ৩৪৫ জনের।

পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। ১৯ এপ্রিল মানিকগঞ্জ জেলাকে লকডাউন করার পর আক্রান্তের হার কিছুটা কমে যায়। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ১ জন ও ২য় সপ্তাহে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। কিন্তু লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হলে আক্রান্তের হার আবার বাড়তে থাকে। মে মাসের ৩য় সপ্তাহে ৩৬ জন, শেষ সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হয় ৮১ জনের। অর্থাৎ মে মাসে আক্রান্ত হয় ১২৮ জন। ফলে এপ্রিল ও মে মাসে করোনা শনাক্তের সংখ্যা হয় ১৪৯ জন। এরপর ৩১ মে থেকে লকডাউন খুলে দেয়ার পর আক্রান্তের হার বাড়ছে আশংকাজনক হারে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৯৬ জন।

এস এম ফেরদৌস বলেন, সরকারি বিধিভঙ্গ করে মানুষজন বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছেন। অনেকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন না এবং সামাজিক দূরত্বও মেনে চলছেন না। নানাভাবে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সচেতন করা হলেও তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না। করোনা প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে জনসাধারণকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে তিনি অভিযানেও নেমেছেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
আরও ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় প্রাণ গেলো আরও ১ জনের, শনাক্ত ৪৯
কর্মস্থলে না থাকায় চিকিৎসককে বরখাস্ত করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
X
Fresh