করোনায় না, বেলা শেষে শূন্য হাতে বাড়ি ফেরার ভয় শ্রমিকদের
আটবার নদী ভাঙার পর বর্তমানে ঘাটের পাশেই বেড়ীর কোলে বসবাস। দুই ছেলে চার মেয়েসহ ৭ সদস্যের পরিবারের প্রধান তিনি। প্রতিদিন উপার্জন করে নেয়া অর্থ দিয়ে চলে তার সংসার। ভালোই চলছিল তার দৈনন্দিন। করোনাভাইরাসের সংক্রামণ রোধে নদী কেন্দ্রিক সকল যানবাহনে সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় অনেক বড় সংসারটি যেন তারে কাছে বিশাল বোজা বলে মনে হচ্ছে এখন। নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে ৩৫ বছর ধরে কর্মরত ঘাট শ্রমিক কামরুল ইসলামের (৫৮) বক্তব্য এটি। হাতিয়া নলচিরা ও তমরদ্দি ঘাটে প্রায় দেড় শত ঘাট শ্রমিক সবার বক্তব্য প্রায় কামরুল ইসলামের মতোই।
নলচিরা ঘাটের শ্রমিক সর্দার আসফাক উদ্দিন (৪০) জানান, নদীতে যাত্রীবাহী নৌ চলাচল সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু মালবাহী ট্রলার চলাচলে নিষেধ আদেশ না থাকলে ও বিভিন্ন পণ্যের ডিলাররা মালামাল আনা নেয়া করছে না। কারণ তাদের কারখানার শ্রমিক সংকট, পণ্য পরিবহনে চালকদের অনিহা ও বিভিন্ন হাট বাজারে দোকানিদের দিনের অধিকাংশ সময় দোকান বন্ধ থাকায় বেচাকেনা কম হচ্ছে। এতে করে ঘাটের শ্রমিকরা দিনের অধিকাংশ সময় ঘাটে অলস সময় পার করতে হচ্ছে।
ঘাট শ্রমিক ইলিয়াস (৫৫) বলেন, করোনার ভয়ে অনেকে বাড়িতে নিরাপদে থাকছে, কিন্তু আমাদের ঘাটে আসতে হচ্ছে কিছু উপার্জনের আশায়। বেলা শেষে প্রতিজন যে টাকা পাই তাতে চাল হলে ডাল কেনা যায় না আবার ডাল হলে পেঁয়াজ কেনা যায় না। খুব কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে আমাদের।
ঘাটের শ্রমিকদের কেরানি (হিসাব রক্ষক) কাশেম জানান, টিভিতে দেখছি গেল কয়েকদিন সরকার বিভিন্ন জেলায় উপজেলায় গরীব অসহায় দুস্থদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে। কিন্তু হাতিয়াতে কোথাও কোনও সাহায্য সহযোগিতার খবর পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, সরকারিভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে হাতিয়ার জন্য ১০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি, এখনো কাগজপত্র হাতে পায়নি। পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করে দেয়া হবে।
এসএস
মন্তব্য করুন