আজিজুর রহমান পায়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
১২ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:০১
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:৩৪
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:৩৪
৫ দিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারালেন সুমন, মাহিমা হারালো মাকে

৫ দিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারালেন সুমন, মাহিমা হারলো মাকে
স্ত্রীর মরদেহ নিতে এসে মাঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সিলেটের শাহজালাল (র.) মাজারে মানত ছিল তাদের। সেই মানত পূর্ণ করতে কাকলী ও মাহিমাসহ তাদের কয়েকজন স্বজন সিলেটে যান। সেখান থেকেই উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ফিরছিলেন তারা। ট্রেন দুর্ঘটনায় কাকলী মারা গেছেন। এ ঘটনায় মাহিমা আহত হয়েছেন। মাহিমাকে বিকেলে আহত অন্য জনের সঙ্গে ঢাকা সিএমএইচ-এ প্রেরণ করা হয়। ---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: শিশুটিকে দেখে কাঁদছে সবাই
--------------------------------------------------------------- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন জানান, মাহিমা মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তার কপালে সেলাই দেয়া হয়েছে। কপালের বাম পাশ থেকে মাথার পেছন পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় ৩ জন শিশুও প্রাণ হারিয়েছেন। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল আমিন, তার ভাই মো. শামীম, আর মামা মনু মিয়া নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন চট্টগ্রামে। মো. শামীম জানান, ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়লে দরজা লাথি দিয়ে বের হন। তার মামাও রক্ষা পান। কিন্তু ভাই আল আমিন বাঁচতে পারেননি। আল আমিনের মামা মনু মিয়া বলেন, ‘আমি তখন তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলাম। হঠাৎ দেখি সব ভেঙে মাথায় পড়ছে’। ট্রেন দুর্ঘটনায় চাঁদপুরের মজিবুর রহমান আর তার স্ত্রী কুলসুম বেগম দুজনেই মারা যান। ছেলে কাউসার বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাবা-মা’র লাশ সনাক্ত করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মন্দভাগ রেলস্টেশনের পাশেই চান্দখোলা গ্রাম। ভোররাতে যখন বিকট শব্দে এই দুর্ঘটনা ঘটে তখনই ঘুম থেকে উঠে বেড়িয়ে আসেন ওই গ্রামের অর্ধশত যুবক। চানখোলা গ্রামের স্কুলছাত্র মোজাম্মেল হোসেন জানান- শব্দ হওয়ার ২ মিনিটের মধ্যেই তার ঘুম থেকে উঠে বেড়িয়ে আসেন। এই গ্রামের শরীফুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরাই সবাইকে উদ্ধার করি। ৪টি পিকআপে করে আহতদের হাসপাতালে পাঠাই। উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সোমবার রাত পৌনে ৩টার দিকে দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধ শতাধিক। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনটি ইউনিট এবং পুলিশ সদস্যরাও যোগ দেন। দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক লাখ এবং আহতদের ১০ হাজার টাকা করে দেয়ার হবে বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এছাড়া নিহতদের মরদেহ দাফনে সহযোগিতার জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন। এসএস