• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
logo

দীর্ঘ ১৬ বছর পর চালু হচ্ছে রেলপথটি

ফেরদৌস জুয়েল, গাইবান্ধা

  ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:৫৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর চাপ কমাতে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাশীঘাট ও জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদঘাট নৌরুটে রো রো ফেরি চালুর মাধ্যমে বাস-ট্রাক চলাচলের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

এরই প্রেক্ষিতে বালাশীঘাট ও বাহাদুরাবাদঘাটে চলছে নানা কর্মযজ্ঞ। ফেরি ও লঞ্চ সার্ভিস চালু হলে দীর্ঘ ১৬ বছর পর রেলওয়ে বিভাগের পক্ষ থেকে ২০২০ সালের দিকে আবারও দিনাজপুর-কাউনিয়া-বালাশীঘাট ও শান্তাহার-বালাশীঘাট রুটে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চালু করা হবে বলে জানা গেছে।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে গেছে গাইবান্ধার বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথের অসংখ্য কাঠের স্লিপার। এসব কাঠের স্লিপার বদলানোসহ রেলপথ সচল করতে প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছে রেল বিভাগ।

রেলওয়ে বিভাগ জানায়, ১৯৩৮ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধার ফুলছড়ির তিস্তামুখঘাট-বাহাদুরাবাদ এবং পরে বালাশী-বাহাদুরাবাদ নৌরুট ব্যবহার করে গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, বগুড়া, শান্তাহার জংশন, নাটোর জেলার মানুষ রেলপথে অল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশি জেলায় যাতায়াত করতে পারতো। এতে দূরত্ব যেমন কমে যেত তেমনি সময় সাশ্রয়, অল্প টাকায় মালামাল পরিবহন ও জ্বালানির অপচয় রোধ হতো। তখন সাত আপ ও আট ডাউন এবং ১১ আপ ও ১২ ডাউন নামে ট্রেনগুলো চালু ছিল।

১৯৮৬ সাল থেকে দিনাজপুর-তিস্তামুখঘাট ও দিনাজপুর-বালাশীঘাট রুটে আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ও পরে একতা এক্সপ্রেস এবং সাত আপ ও আট ডাউন নামে একটি মেইল ট্রেন চালু ছিল। ওই সময় রেলপথে অল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে উত্তরাঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করতে পারতো। মালামাল পরিবহন হতো ওয়াগান ফেরি পারাপারের মাধ্যমে।

এক সময় গাইবান্ধার ফুলছড়ির তিস্তামুখঘাট-বাহাদুরাবাদ ঘাটের মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের চ্যানেলে নাব্য সংকট দেখা দিলে তিস্তামুখঘাট গাইবান্ধার বালাশীতে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাসে গাইবান্ধার ত্রিমোহিনী স্টেশনকে জংশন করে ত্রিমোহিনী থেকে বালাসীঘাট পর্যন্ত রেলপথ চালু করা হয়। পরবর্তীতে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা চ্যানেলে নাব্য সংকটের কারণ দেখিয়ে ২০০৪ সালে বালাশী-বাহাদুরাবাদ নৌরুটে যাত্রীবাহী ফেরি ও ওয়াগান ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে বালাশীঘাট থেকে উত্তরাঞ্চলের সব যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ থেকে ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মধ্যে সব ট্রেন চলাচল অব্যাহত আছে।

বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথ সরেজমিনে দেখা গেছে, এ রেলপথের অসংখ্য স্থানে কাঠের স্লিপার পচে নষ্ট হয়ে গেছে। রেললাইনের নিচের মাটি বৃষ্টির পানিতে সরে গেছে। বেশকিছু স্থানে মরিচা পড়ে গেছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে বালাশীঘাট ও আনন্দবাজার রেলস্টেশনের টিনের তৈরি ঘর ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি। এখন বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথে শুধু রেললাইন ছাড়া আর কিছুই নেই।

বালাশীঘাটে মালবাহী বগি পড়ে রয়েছে ১২টি। রয়েছে একটি লোহার যন্ত্র। যা রোদে-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই রেলপথের নয়টি রেল ব্রিজে দায়িত্ব পালন করেন নয়জন কর্মচারী। রেল সেতু পাইলিংগুলোও মেরামত করতে হবে।

খালাসী জয়নাল হক বলেন, রেললাইনের অসংখ্য কাঠের স্লিপার পাল্টাতে হবে। বেশ কয়েকটি রেল সেতুর পাইলিং মজবুত করতে হবে। এসব কাজ না করলে রেল চলাচল ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট রেল বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাফিজার রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বালাশী-বাহাদুরাবাদ নৌরুট চালু হলে আবারও দিনাজপুর-বালাশী ও শান্তাহার-বালাশী রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার কারণে বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তা মেরামত করার পরই ট্রেন চলাচল শুরু করা হবে।

আরও পড়ুন :

জেবি/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh