• ঢাকা বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শুটকি এখন বিশ্বজুড়ে

আইফাত ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

  ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:০৮

জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী গ্রাম লালপুরের শুটকির খ্যাতি এখন দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরণ করে এখানকার শুটকি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। কোনও প্রকার রাসায়নিক উপাদান মেশানো ছাড়া ফরমালিনমুক্ত দেশি প্রজাতির মাছ থেকে এ শুটকি উৎপাদন করায় এর স্বাদ হয় আলাদা। তাই এই শুটকির সুনামও রয়েছে দেশ-বিদেশে। প্রতি বছরই এখান থেকে বিদেশে রপ্তানি হয় শত কোটি টাকার শুটকি।

সরেজমিনে দেখা যায়, এরইমধ্যে লালপুরে শুরু হয়েছে শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। এরই প্রেক্ষিতে নদীর পাড়ে তৈরি করা হয়েছে শত শত ডাঙ্গি। আর এসব ডাঙ্গিতে চলছে শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ। এখানে শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে কাজ করছে প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নিরলস কাজ করছেন তারা।

নদী থেকে মাছ ধরে এনে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু শুটকি। কোনওরকম ক্যামিকেল বা ফরমালিন ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে এসব শুস্বাদু শুটকি। আর এসব শুটকি দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরণ করে পাঠানো হয় বিদেশে। ভারত, নেপাল, সৌদি আরব, আমেরিকা, লন্ডনসহ বেশ কয়েকটি দেশে পাঠানো হয় এখানে উৎপাদিত শুটকি। বিদেশে এই শুটকির কদরও রয়েছে অনেক। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় শত কোটি টাকার শুটকি এই মেঘনার পাড় লালপুর থেকে সরবরাহ করা হয়।

তবে এখানে শুটকি প্রক্রিয়াজাতকারীরা পাচ্ছেন না কোনও সরকারি পৃষ্টপোষকতা। স্থানীয় আড়তদার বা মহাজনদের কাছ থেকে দাদন হিসেবে তাদের পুঁজি সংগ্রহ করতে হয়।

তাই কম সুদে জামানতবিহীন ব্যাংক ঋণ চান শুটকি প্রক্রিয়াজাতকারীরা।

লালপুরের শুটকি প্রক্রিয়াজাতকারী শিখা রানি দাস জানান, প্রায় একশ’ ডাঙ্গিতে প্রতিদিন শুটকি উৎপাদনের কাজ করছে শ্রমিকরা। এখন পুরোদমে শুটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ সহযোগিতা পাওয়া গেলে আরও বেশি পরিমাণে শুটকি উৎপাদন করা সম্ভব হতো।

অপর এক শুটকি ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, পুঁজির অভাবে আমরা এখন আর আগের মতো ব্যবসা করতে পারছি না। আগে মাছের দাম কম ছিল। দিন দিন মাছের দাম যেমন বাড়ছে তেমনি শ্রমিকের মজুরিও বাড়ছে। এখন আর অল্প টাকায় এই ব্যবসা চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। অনেকেই এই ব্যবসা করে পথে বসেছে।

লালপুর ইউনিয়নের বাকের আহমেদ জানান, লালপুরের শুটকি দেশব্যাপী প্রসারিত। পুঁজির অভাবে প্রান্তিক শুটকি প্রক্রিয়াজাতকারীরা তাদের ন্যায্য মূল্য পায় না। সরকার শুটকি উৎপাদনকারীদের ব্যাংক ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি শুটকি উৎপাদন দ্বিগুণ হতো।

আশুগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, লালপুরের শুটকির চাহিদা দেশ-বিদেশে অনেক বেশি। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঋণ সুবিধা পেলে এই ব্যবসা আরও প্রসারিত হবে। শুটকি প্রক্রিয়াজাতকারীদের ঋণ দেয়ার ব্যাপারে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবো।

আরও পড়ুন :

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh