• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সন্দ্বীপে রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে খাসজমির মাটি 

সন্দ্বীপ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২২ মার্চ ২০২৪, ১২:২৭
ছবি : আরটিভি

সন্দ্বীপের রাতের আঁধারে খাসজমির মাটি কেটে বিক্রি করছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। সন্দ্বীপ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাত ১০ টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত আইন অমান্য করে এস্কেভেটর দিয়ে বেড়িবাঁধ এর বাহির থেকে ও ফসলি জমির থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি এলাকায় সিন্ডিকেট করে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে।

পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় একাধিক চক্র দেদারছে রাতে মাটি কেটে বিক্রি করলেও তেমন কোনো আইনি পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মধ্যে দু’য়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করলেও তা আমলে নিচ্ছেন না মাটি ব্যবসায়ীরা। এসব অভিযান আর জরিমানা তার গায়ে মাখছে না।

এতে চুনোপুঁটিরা আইনের আওতায় আসলেও অধিকাংশ মাটিখেকো রাঘববোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। গত ১৮ মার্চ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম অবৈধ মাটি কাটার দায়ে ২টি ট্রাক জব্দ করে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন বলে জানান।

তিনি বলেন, অবৈধ মাটি কাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে ট্রাক মালিকদের জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। তবুও থামছে না মাটি কাটা।

২০-৩০ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে ধীরে ধীরে ফসলি জমি পুকুরে পরিণত হচ্ছে। সন্দ্বীপের বিভিন্নপ্রান্তে এভাবে লাগামহীন মাটিকাটা হলে পুনরায় ভাঙ্গন শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ ও মানবতাবাদী আইজীবী অ্যাডভোকেট আকবর মাহমুদ বাবর বলেন, মৃত্তিকার (মাটি) এভাবে ক্ষতি করা মারাত্নক ধরনের অপরাধ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সন্দ্বীপের প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

উপজেলার রহমতপুর, মগধরা, আজিমপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সরকারি খাস জমি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা রাতের সময়কে উত্তম সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ও পাহাড়, ফসলি জমি এবং টিলা কর্তন বা বিলুপ্ত করা নিষিদ্ধ থাকলেও মাটিখোকে সিন্ডিকেটরা তা মানছে না।

এ বিষয়ে সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সভাপতি হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি বলেন, বালিমহাল ও মাটিব্যবস্থাপনা আইন অতিক্রম করে দিনে রাতে মাটিকাটছে একটি চক্র। কাঁচা-রাস্তাগুলো ধ্বংস করে ও রোজাদারদের ঘুম হারাম করার পরও কেউ যেন দেখার নেই। উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মাটিকাটা বন্ধে আমরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

অধিকাংশ এলাকায় প্রকাশ্যে রাতে ও দিনে দেদারছে মাটি মাটলেও রহস্যজনক কারণে ওইসব স্থানে কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয় না। জনস্রোতি আছে মাটি ব্যবসায়ীরা এসব করছেন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে।

এ বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন পিপিএম বলেন, মাটি কাটার জন্য এখন আর কেউ বলে কয়ে কাটে না। আমরা যতটুকু পারছি ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিগ্যান চাকমা বলেন, সরকারি খাসজমির মাটি কাটা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তবে ব্যক্তি নিজের জমিতে থেকে কী পরিমাণ মাটি কেটে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে সেটা আইনে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। কিন্তু কোনো অবস্থায়ও সে মাটি বিক্রি করা যাবে না। তিনি সদ্য যোগদান করেছেন উল্লেখ করে বলেন, সার্বিক বিষয়ে জেনে তিনি সরকারি খাসজমি ও বেড়িবাঁধের বাইরের জমি থেকে মাটি কাটা ও বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সন্দ্বীপে শতাধিক অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ 
সন্দ্বীপে বিদেশি মদসহ অটোরিকশাচালক গ্রেপ্তার 
সন্দ্বীপে যাত্রী বোটে ডাকাতি
সন্দ্বীপ থানার ওসির পিপিএম পদক লাভ
X
Fresh