• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জেলখানার গল্পে বেরিয়ে এলো খুনের রহস্য

আরটিভি নিউজ

  ০২ মার্চ ২০২৪, ২৩:৫৪
ছবি : সংগৃহীত

দুই বছর আগে নিখোঁজ হয় ছেলে। মা-বাবা ধরেই নিয়েছিলেন তাদের সন্তান হারিয়ে গেছে। অনেকটা ভুলেই গিয়েছিলেন সন্তান হারানোর বেদনা। তবে দুই বছর পর জানতে পারলেন তাদের সন্তানকে খুন করা হয়েছে। পুতে রাখা হয়েছে একটি মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে। আর জেলখানার গল্প থেকে ওই খুনের রহস্য জানতে পেরেছে তারা।

শুক্রবার (১ মার্চ) নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার খলিফাপাড়া মাফিজুল ইসলামের খুনের কথা জানতে পারে তার পরিবার। শনিবার (২ মার্চ) সকাল থেকে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন পৌরসভার খলিফাপাড়া মাফিজুল ইসলাম। প্রায় দুই বছর পর পরিবারটি জানতে পারে, তাকে খুন করা হয়েছে। পুঁতে রাখা লাশ রয়েছে চাঁচকৈড় পুরানপাড়ার একটি বালিকা মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে।

আসামিদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানিয়েছে, বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে চাকরির সময় নিহত মাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মাদ্রাসার নৈশপ্রহরীর মেয়ের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে আবু তাহের খলিফার কাছে অভিযোগ করে জামাতা আল হাবিব সরকার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবু তাহের কৌশলে মাফিজুলকে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল তার বাসায় ডেকে নেয়। রাতে তাকে নিজের কর্মস্থল চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। সেখানে মাফিজুলকে হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ দিয়ে হত্যা করে তারা।

হত্যাকাণ্ডের পর লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখে। ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় মাফিজুলের মা গুরুদাসপুর থানায় একই বছরের ৭মে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর দম্পতির পারিবারিক কলহ বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করে মেয়েটি। এ মামলায় জেলহাজতে রয়েছে আল হাবিব।

এরপর হাবিব কারাগারে থাকা অবস্থায় গুরুদাসপুরের খলিফাপাড়ার জাকির মুন্সির (৪০) সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তাকে জানায় সে। জাকির জামিনে মুক্তি পেয়ে মাফিজুলের পরিবারকে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে পুলিশকে জানান পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত মেয়ে ও তার বাবা আবু তাহেরকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করে তারা।

এ ঘটনায় র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের সদস্যরা আসামি আশরাফুলকে শনিবার সিরাগঞ্জের গোলচত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জ্বল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী আবু তাহের খলিফা (৫৫), তার মেয়ে (২৮), মেয়ের স্বামী আল হাবিব সরকার (৩৫) ও স্বজন আশরাফুল ইসলামকে (৪২) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার চারজনসহ আরও তিন থেকে চারজনকে সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম।

শনিবার (২ মার্চ) আদালতের অনুমতি না মেলায় মরদেহ উত্তোলন করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাজাহারুল ইসলাম বলেন, রোববার মরদেহ উত্তোলন করা হবে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বউভাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, একে একে মারা গেলেন ৩ ভাই
ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু
৩০ বছর বয়সে ১৪ নারীর স্বামী সাঈদ
নাটোরে হিটস্ট্রোকে কৃষকের মৃত্যু
X
Fresh