• ঢাকা সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাসপাতাল রেখে বনভোজনে ৩৫ চিকিৎসক, ভোগান্তিতে রোগীরা

আরটিভি নিউজ

  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:১৯
হাসপাতাল রেখে বনভোজনে ৩৫ চিকিৎসক, ভোগান্তিতে রোগীরা
ছবি : আরটিভি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানের মৃত্যুর দুদিন না যেতেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা গেলেন পিকনিকে। হাসপাতালের ৩৫ জন চিকিৎসক ও তাদের পরিবার পরিজন সরকারি অফিস খোলার দিন চিকিৎসা কার্যক্রম অনেকটা অচল করে পিকনিকের জন্য হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরি পাহাড়ে পাঁচতারকা মানের দ্য প্যালেস রিসোর্টে যান।

ডা. ওয়াহিদুজ্জামানের মৃত্যুর দুদিন না যেতেই তাদের এ আনন্দ ভ্রমণ জনমনে ও সাধারণ রোগীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ ও রোগীরা বলছেন, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অফিস চলাকালীন সময়ে আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। দুদিন না যেতেই চিকিৎসকরা জেলা আধুনিক হাসপাতালের কার্যক্রম অনেকটা অচল করে পিকনিকের আয়োজন করায় সাধারণ মানুষ তাদের সমালোচনা করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, আমাদের তত্ত্বাবধায়ক স্যারের মৃত্যুর দুদিন না যেতেই চিকিৎসকদের এ ধরনের পিকনিক আয়োজন কোনো অবস্থাতেই ঠিক হয়নি। এতে মানবতা আর কোথায় রইল?

তিনি বলেন, সদর হাসপাতাল খোলার দিন ২৫ সদস্যের চিকিৎসকদের একটি দল তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মঙ্গলবার সকালে পিকনিকের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং বিকেলে আরো ১০ জন চিকিৎসক সেখানে অংশ নেন। সব মিলিয়ে তাদের পরিবার পরিজনসহ প্রায় ২ শতাধিক লোক পিকনিকে অংশ নেন এবং সেখানে খাবার দাবার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সবকিছুর আয়োজন করা হয়। গতকাল যেহেতু ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন ছিল তাই অনেকটা নিরবেই পিকনিকে চলে যান চিকিৎসকরা।

এ দিকে হাসপাতালের একজন স্টাফ জানান, অন্যান্যবার এ ধরনের পিকনিক আয়োজন করা হলেও আমরা জানতাম কিন্তু এবার অনেকটা লুকিয়ে পিকনিকে চলে যান চিকিৎসকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক জানান, তত্ত্বাধায়ক স্যার যেদিন মারা যান সেদিনও ওই চিকিৎসকরা স্যারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা করেছিলেন। কিন্তু তিনি নীতিতে অটল ছিলেন। কোনো প্রকার আপস করেননি। তার মতো একজন চিকিৎসকের অকালে বিদায় নেওয়া বর্তমানে শুধু চিকিৎসক সমাজ নয় দেশেরও অপরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তিনি এ হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে কখনো ছাড় দেননি। এ কারণেই কিছু সংখ্যক চিকিৎসক তা মেনে নিতে পারেননি।

এ দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানরত হাসপাতালের আরএমও রানা নূরুস সামস ও ডা. ফায়েজুর রহমানকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আরএমও ফাইজুর রহমান বলেন, আমি ও ডা. নূরুস সামস বদলির আদেশ পেয়েছি। আমরা এখন ঢাকায় আছি। পিকনিকের বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর বলেন, অফিস খোলার দিন এত চিকিৎসক পিকনিকে যাওয়ায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পিকনিকে যাওয়া সঠিক হয়নি। এ ছাড়া হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে না উঠতেই দুদিনের মাথায় এ ধরনের পিকনিকের আয়োজন নিঃসন্দেহে অমানবিক। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক একজন ভালো মানুষ এবং সদর হাসপাতালে তিনি এক আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তার এ অবদানের জন্য রোগীসহ সাধারণ মানুষ আজ শোকাহত। তবে চিকিৎসক সমাজের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার মৃত্যুর রেশ না কাটতেই এ ধরনের আনন্দফুর্তির আয়োজন করে সাধারণ মানুষ আশা করেননি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

এ বিষয়ে বাহুবল উপজেলা পুটিজুরি পাহাড়ে পাঁচতারকা মানের দ্য প্যালেস রিসোর্টের সুপারভাইজার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হোটেলটি ৩ বেলা খাবারসহ একদিনের ভাড়া ২১ হাজার টাকা। হল আগেই বুকিং দিতে হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিকিৎসকদের পিকনিকের জন্য এ হোটেল বরাদ্দ নেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

তবে এর বেশি আর কোনো তথ্য জানাতে পারবেন না বলে অপরাগতা প্রকাশ করেন রিসোর্টের সুপারভাইজার।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাঙ্গামাটিতে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু, আহত ৭
ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারও নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভিটামিন ডি খাওয়ার উপযুক্ত সময় রাতে নাকি দিনে
‘আমি যেমন চিকিৎসকের মন্ত্রী, ঠিক তেমনি রোগীদেরও মন্ত্রী’
X
Fresh