• ঢাকা রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শীতে কাঁপছে যমুনা তীরবর্তী লোকজন

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪২
ছবি : আরটিভি

গত কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন বগুড়ার সারিয়াকান্দির দুর্গম চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষরা। যমুনা নদী সংলগ্ন হওয়ায় এসব এলাকায় শীতের তীব্রতা একটু বেশি। বিভিন্ন সময়ে যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার বেশকিছু এলাকাবাসী তাদের ভিটেমাটি এবং কৃষিজমি হারিয়ে এখন নিস্ব। পেটের ভাত জোগাড় করতে তাদের প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। তাই তারা কিনতে পারেন না ভালো কোনো শীতের গরম কাপড়।

উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ নদীগর্ভে। আর ৫টি ইউনিয়নের আংশিক নদীগর্ভে। তাই এ উপজেলার বিশাল আয়তনের জনগোষ্ঠী চরবাসী। চরবাসী এসব এলাকার লোকজন বারবার যমুনা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের ভিটেমাটি এবং কৃষিজমি হারিয়ে কেউ কেউ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। কয়েক দিনের তীব্র শীতে এসব মানুষরা এখন শীতে কাঁপছে।

সজিরন বেওয়া (৭০)। জীবনে ৯ বার যমুনা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। ভিটেমাটি এবং কৃষিজমি হারিয়ে এখন বাস করছেন অন্যের জমিতে। কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া চরে তার বসবাসের অযোগ্য বাড়ি। গত কয়েকবছর আগেই তার স্বামী মারা গেছেন। ৪ ছেলের মধ্যে ১ ছেলেও মারা গেছেন চিকিৎসার অভাবে। ৩ ছেলে অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করেন। অনেক কষ্টে এলাকার লোকদের সহযোগিতায় ২ মেয়েকে তিনি বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের অভাবের সংসারে তার ভাত হয়নি। সারাদিন অন্যের জমির মরিচ তুলে দিয়ে যা আয় হতো, তা দিয়ে কিনতেন ডাল-চার। বয়সের ভারে আর মরিচ তুলতে পারেন না। এখন বিভিন্ন মানুষের কাছে দশ-পাঁচ টাকা হাত পেতে পেটের ভাত জোগাড় করেন। কয়েক দিনের প্রচণ্ড শীতে তিনি কষ্ট করছেন। শরীরে কোনো গরম কাপড় নাই। গ্রামের চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে বেশ কয়েকবার গরম কাপড় প্রার্থনা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই এ উপজেলায় গভীর রাত থেকে শুরু কওে পরদিন প্রায় দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে। কুয়াশার জন্য রাতে ৩০ ফিট দূরের কোনো কিছু চোখে দেখা যায়না। সন্ধ্যা ৭টা হতে কুয়াশা শুরু হয়ে পরদিন দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কুয়াশার জন্য উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে সকাল ১০টা পর্যন্ত। রাতে প্রচণ্ড কুয়াশার জন্য গাছের পাতা হতে টপটপ করে বৃষ্টির মতো পানি পরছে।

কৃষকরা হালকা শীতের কাপড় পরেই ছুটছে খেতের দিকে, এনজিওকর্মীরা রেইনকোট পরে মোটরবাইকে বেরিয়ে পড়েছে কিস্তি আদায়ের কাজে, গরুর মালিকরা দুধ দোহন করে নিয়ে ছুটছে বাজারের দিকে। দিনমজুর এবং শ্রমিকরা বেড়িয়ে পরেছে তাদের নিজ নিজ কাজে। তবে তাদের শরীরে গরম কাপড়ের অভাব ব্যাপকভাবে লক্ষণীয়। অটোভ্যান শ্রমিকরা শীতের বাতাসকে উপেক্ষা করেই ছুটছেন পেটের দায়ে। বয়স্ক মানুষরা প্রচণ্ড শীতে ঘরবন্দি হয়েছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, সরকারি যে কম্বলগুলো পাওয়া গিয়েছিল তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরিব-দুঃখী মানুষ খুঁজে বের করে তাদের দেওয়া হয়েছে। চরবাসীদেরও এ সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় কম্বল অপ্রতুল হওয়ার জন্য হয়তো কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। যারা বাদ পড়েছেন, তাদের জন্যও দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।


মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১
বৃষ্টির জন্য বগুড়ায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
ঢাকাস্থ বগুড়া জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি তুহিন, সম্পাদক হাবিব
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল আওয়ামী লীগ নেতার
X
Fresh