• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্রের নামফলক ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে

নরসিংদী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:১৮
ছবি : সংগৃহীত

নরসিংদীর শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ‘সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র’ নামের এক সংগঠনের নামফলক ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওন খান নেতাকর্মীদের নিয়ে শত শত শিক্ষার্থীর সামনেই সংগঠনটির নামফলক ভেঙে গুড়িয়ে দেন। ওই সংগঠনে কলেজটির বিভিন্ন বর্ষে পড়ুয়া দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী গান-কবিতা-বিতর্ক চর্চা করে আসছেন।

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, একযুগ ধরে কলেজটির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সালাউদ্দীন মর্তুজা শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক বিকাশে কাজ করছেন। প্রতিবছর রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, বর্ষবরণ ও বসন্তবরণ আয়োজনের পাশাপাশি তিনি নিয়মিতভাবে শহীদ মিনার কেন্দ্রীক সংস্কৃতিচর্চায় ব্যস্ত রাখেন শিক্ষার্থীদের। সংস্কৃতিচর্চাকে আরও উদ্বুদ্ধ করতে গত দুই মাস আগে কলেজ কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে সালাউদ্দীন মর্তুজাকে আহবায়ক করে ‘সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র’ নাম দিয়ে এর সাংগঠনিক রূপ দেওয়া হয়। বিজ্ঞান ভবনের নিচতলার দুইটি কক্ষ এবং বাদ্যযন্ত্র কেনা ও সাজসজ্জার জন্য দুই দফায় ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন অধ্যক্ষ কল্যাণী ব্যানার্জী।

সোমবার উদ্বোধনের কথা থাকায় দেয়াল খোদাই করে একটি সুদৃশ্য নামফলক সাটানো হয়। আজ দুপুরে ওই নামফলকটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওন খান নেতাকর্মীদের নিয়ে বিজ্ঞান ভবনের সামনে আসেন। সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্রের নামফলকটি দেখেই উত্তেজিত হয়ে যান তারা। এ সময় শাওন খানের নির্দেশে তার নেতাকর্মীরা ওই নামফলক ভেঙে গুড়িয়ে দেন। তাদের বলতে শোনা যায়, লেখাপড়ার নামে খবর নাই, আবার গানবাজনা। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে আসার পূর্বমুহূর্তে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চলে যান।

জানতে চাইলে সংগঠনটির আহবায়ক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সালাউদ্দীন মর্তুজা বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে গত একযুগে রক্ত পানি করা পরিশ্রমে, বাধার পর বাধা পেরিয়ে সংগঠনটিকে এই জায়গায় এনেছি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, এমন একটি মডেল তৈরি করা যা এক সময় দেশের সব কলেজে অনুসরণ করা হবে। এবার যখন চর্চার জন্য কক্ষ পেলাম, বাদ্যযন্ত্র কেনার জন্য বরাদ্দ পেলাম, তখন নামফলক ভেঙে দেওয়ার নামে আবার বাধা এল। জামাত-শিবির যদি এ কাজ করত, কষ্ট পেতাম না।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওন খান বলেন, ঘটনার সময় আমি কলেজেই অবস্থান করছিলাম। আমি নিজে তো নয়ই, ছাত্রলীগের কোন কর্মীও এতে জড়িত নন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাই ক্ষুব্ধ হয়ে এই কাজ করেছেন।

‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেন এই কাজ করবেন’ জানতে চাইলে শাওন খান বলেন, ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে কলেজের অধ্যক্ষ কল্যাণী ব্যানার্জী অবসরে যাবেন। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে তাকে বলেছিলাম, অবসরে যাওয়ার আগে ছাত্রদের কমনরুম ও কিছু ক্লাসরুমের সাউন্ড সিস্টেম সংস্কার করে দিতে। তিনি বলেছিলেন, সব হিসেব ক্লোজ করে ফেলেছেন, এখন আর কিছু করা সম্ভব নয়। পরে শুনলাম, গান-কবিতা-বিতর্কের জন্য নাকি কক্ষ ও টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি আমাদের এখনও পর্যন্ত কিছু জানাননি। এরই প্রেক্ষিতে আজ ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই সংগঠনের নামফলক ভেঙে দিয়েছে।

শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের অধ্যক্ষ কল্যাণী ব্যানার্জী এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শত শত শিক্ষার্থীর সামনেই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওন খান দলবল নিয়ে এই নামফলক ভেঙেছে। কেন সে এমনটা করল, তা আমরা নিশ্চিত নই। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনা জানিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন বলেন, ঘটনা শুনেছি, কিন্তু কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ জানায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সেবায় ববি ছাত্রলীগ 
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
দুবাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
ঢাবিতে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুমে’ অচেতন শিক্ষার্থী, তদন্ত কমিটি গঠন
X
Fresh