নিথর দেহে ফিরলেন রইশুদ্দীন, সন্তানদের নিয়ে চিন্তা স্ত্রীর
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের রইশুদ্দীন, এইচএসসি পাসের পর যোগ দিয়েছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে। সীমান্তে দায়িত্ব পালন কালে রইশুদ্দীনের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তার পরিবার। ছোট দুই সন্তান নিয়ে আগামী দিনগুলো কেমনে কাটবে সে চিন্তা রইশুদ্দীনের স্ত্রী নাসরিন বেগমের।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ৪টার দিকে রইশুদ্দীনের মরদেহবাহী হেলিকপ্টার এসে পৌঁছায় শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামে। পরে বিজিবি সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে নিথর রইশুদ্দীনকে নিয়ে ৫টার দিকে আসেন তার গ্রামের বাড়ি শ্যামপুরে। এ সময় কান্নায় ভারী হয়ে আসে পরিবেশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ হোসেন পরিবার সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন। এ সময় তিনি শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে স্থানীয় শ্যামপুর ভবনীপুর করবস্থানে রইশুদ্দীনের দাফন সম্পন্ন হয়।
দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন নাসরিন
রইশুদ্দীনের এমন অকাল মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তার পরিবার। ছোট দুই সন্তান নিয়ে আগামী দিনগুলো কেমনে কাটবে সে চিন্তা এখন রইশুদ্দীনের স্ত্রী নাসরিন বেগমের।
সাড়ে তিন বছর আগে রইশুদ্দীনের বিয়ে হয় নাসরিন বেগমের সঙ্গে। তাদের ঘরে দুই বছরের মেয়ে রাফিয়া আখতার, চার মাসের ছেলেসন্তান মোহাম্মদ হাসান আলী।
রইশুদ্দীনের স্ত্রী নাসরিন খাতুন জানান, গত রোববার রাতে সর্বশেষ তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় রইশুদ্দীন বলেছিলেন, পরের দিন ডিউটি আছে তাই ঘুমিয়ে পড়বেন। পরদিন সোমবার সকালে স্ত্রী নাসরিন ফোন দেন, রিং হলেও সেই ফোন আর কেউ ধরেননি। পরে ফেসবুকের পোস্ট দেখে তিনি জানতে পারেন তার স্বামী বিএসএফের গুলিতে মারা গেছেন।
নাসরিন বলেন, আড়াই মাস আগে ১০ দিনের ছুটিতে এসেছিলেন তার স্বামী। সেই সময় বলেছিলেন, এবার ছুটিতে এলে বাড়ির কাজ শুরু করবেন। তবে তার আর ফেরা হলো না।
রইশুদ্দীনের স্ত্রী নাসরিন বেগম জানান, আগামীতে তার দুই সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব যেন নেয় সরকার, সেই সঙ্গে তাদের বসবাসের জন্য একটি বাড়ি যেন বানিয়ে দেওয়া হয়, এটা রইশুদ্দীনের শেষ ইচ্ছা ছিল।
মন্তব্য করুন