ইলিশের দেখা নেই সমুদ্রে হতাশ জেলেরা
পৌনে দুই লাখ টাকার বাজার নিয়ে ৭ দিন সমুদ্রে চষে ইঞ্জিনের ত্রুটি নিয়ে ঘাটে ফিরছে এফ.বি জিহাদ নামের একটি মাছ ধরা ট্রলার। ১৬ কেজি ইলিশ, ৪টি গোলপাতাসহ সামান্য কিছু টোনাফিস নিয়ে ঘাটে ফিরে ৪০ হাজার টাকা বিক্রয় করেছেন।
বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম মৎস্য বন্দর আলীপুর আড়ৎ পল্লীতে কথা হয় ট্রলারের মাঝি আ. জলিলের সঙ্গে। চোখে মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধ শেষে বড় আশা নিয়ে সমুদ্রে গিয়ে ছিলাম। কিন্তু ফিরে এসে ৪০ হাজার টাকা বিক্রয় করেছি। ট্রলারের ১৮ জন জেলের পরিবার কেমনে চলে?
ইলিশের ভরা মৌসুমে বুক ভরা আশা নিয়ে সমুদ্রে গেছে জেলেরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইলিশের দেখা পায়নি কোন ট্রলার। সাগর চষে ইতোমধ্যে কয়েকটি ট্রলার ঘাটে ফিরে এসেছে শূন্য হাতে। দীর্ঘ ৬৫ দিনের অবরোধের পর সমুদ্রে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পরার স্বপ্ন ছিল জেলেদের। কারো জালেই বড় ইলিশ ধরা পড়েনি। সামান্য কিছু ছোট সাইজের ইলিশ পেয়েছে কয়েকটি ট্রলার। তাতে বাজার খরচ ওঠেনি কারো। তার পরেও লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ফের সমুদ্রে যাচ্ছে ফিরে আসা ট্রলারগুলো।
জানা গেছে, ৬৫দিনের অবরোধ শেষ হয়েছে গত ২৩ জুলাই। ২৪ জুলাই জেলেদের সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে যেতে পারেনি। এরপর গত ২৭ থেকে ২৮ জুলাই মাছ ধরা ট্রলারগুলো সমুদ্রে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ট্রলারই ইলিশের সন্ধান পায়নি। গত রোববার রাতে দেড় লাখ টাকার বাজার সওদায় নিয়ে পাথরঘাটা ঘাট থেকে সমুদ্রে যায় এফ.বি.তাওহীদ নামের একটি মাছ ধরা ট্রলার। দুই দিন সমুদ্র চষে ইঞ্চিয়ের নাট ভেঙে আলীপুর ঘাটে এসে ৫৫ হাজার টাকার ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রয় করেছে।
আলীপুর ঘাটেনর এফ.বি. তাওহীদ নামের মাছ ধরা ট্রলারের মিস্ত্রি ছগির হোসেন গাজীর আরটিভি নিউজকে বলেন, ‘দেড় লাখ টাকার বাজার নিয়ে গেলাম সমুদ্রে। আর মাছ বিক্রয় করলাম ৫৫ হাজার টাকা। এই লসের (লোকসান) বোঝা মাথায় নিয়ে আবার সমুদ্রে যাবো।’
ট্রলার মালিক মো.আল-আমিন হাওলাদার আরটিভি নিউজকে বলেন, ‘আমার একটি ট্রলার সমুদ্রে আছে। গত সাত দিনে ১০টি ইলিশ পেয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে ট্রলার বিক্রয় করা ছাড়া উপায় থাকবে না।’
মৎস্য ব্যবসায়ী মো.মিজানুর রহমান আরটিভি নিউজকে বলেন, ‘আড়ৎ পল্লীর আড়ৎদাররা তাদের স্ত্রীর স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে বর্তমানে ব্যবসা ঠিক রাখছেন। এখন মাছ না পেলে পালিয়ে এলাকা ছাড়তে হবে।’
জিএম
মন্তব্য করুন