• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সিনিয়র অফিসারের নির্দেশে পালিয়ে ছিলাম: এসআই আকবর (ভিডিও)

সিলেট প্রতিনিধি

  ০৯ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৫৫
police, death,Si akbor
সাবেক এসআই আকবর হোসেন

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে 'নির্যাতনে' রায়হান আহমদ নিহতের প্রায় এক মাস পর এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত বহিষ্কৃত এসআই আকবর হোসেন কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে ওই ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ আকবর হোসেন স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়েন। স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পরার সময়ে তার একটি ভিডিও করা হয়। ভিডিওতে আকবর কান্নার সুরে বলছিলেন রায়হানের মৃত্যুর পর তাকে একজন সিনিয়র অফিসার পালিয়ে যেতে বলেছিলেন। তাই তিনি পালিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায় অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করেছে স্থানীয় লোকজন।

ভাইরাল হওয়ায় ভিডিওতে আকবর’কে বলতে শোনা যায়, আমি একা মারিনি। পাঁচ ছয়জন মারছিল। এজন্যে মরে গেছে। তুমি কেন পালিয়ে গেলে স্থানীয়দের এমন প্রশ্নের জবাবে বহিস্কৃত এসআই আকবর ভুঁইয়া বলেন, সাসপেন্ড করছে এরেস্ট হতে পারি। আরও বলেন, আমাকে সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছিল, তুমি পালিয়ে চলে যাও, কয়েক মাস পরে আইসো।

দুই মাস পরে সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আবার সব হ্যান্ডেল করা যাবে। তবে কারা এমনটি বলেছিলেন বা কার নির্দেশে তিনি পালিয়ে যান এ সম্পর্কে কিছু বলেননি। এসময় ভিডিওতে দেখা যায় আকবরের হাত পা বাঁধতে বাঁধতে যুবকরা বলছেন- মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য সে মানুষকে মেরে ফেলেছে।

ওই যুবগুলো বাংলায় কথা বললেও তাদের কণ্ঠস্বর ছিলো অবাঙালিদের মতো। ভিডিও দেখে কানাইঘাটের স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, ভিডিও’র যুবকদের কথাবার্তা ও এলাকার দেখে বুঝা গেছে তারা ভারতের খাসিয়া আদিবাসী হতে পারেন।

এদিকে সিলেটের এএসপি আব্দুল করিম জানিয়েছেন, ভারতে পালানোর সময় কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিকেল ৫টায় তাকে নিয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এরআগে অবশ্য গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছিলো আকবর ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পালিয়ে গেছেন।

উল্লেখ্য গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে নগরীর কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। পরদিন ১১ অক্টোবর ভোরে ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হানের পরিবারের অভিযোগ ফাঁড়িতে ধরে এনে রাতভর নির্যাতনের ফলে রায়হান মারা যান। ১১ অক্টোবর রাতেই রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত্বাবধানে মহানগর পুলিশের তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়।

এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকে প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর পলাতক ছিলেন।

তাকে পালাতে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগে ২১ অক্টোবর ফাঁড়ির আরেক এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তখন গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দুইদিন পরই আকবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে যান। এদিকে গত ১৩ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন।

পরে গত ১৫ অক্টোবর পিবিআই সিলেটের আখালিয়া নবাবি মসজিদ কবরস্থান থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন কাজ শেষ করে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায় ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়।
পিবিআই এঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুন উর রশিদকে দুই দফায় আটদিন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
তবে তারা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হননি। এছাড়া রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী সাইদুর শেখ নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চাঁদপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি গ্রেপ্তার 
অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা উধাও, গ্রেপ্তার ৩
টেকনাফে ১০ কৃষক অপহরণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
রাজধানীতে পুলিশ ক্যাম্পে আগুন
X
Fresh