বজ্রপাত রোধে ঢাবি শিক্ষার্থীর আড়াই হাজার তাল বীজ রোপণ
তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে বজ্রপাতের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে ভালো ভূমিকা পালন করতে পারে তালগাছ। সেই ভাবনা থেকেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাত রোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে এগিয়ে এলেন মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের তরুণ সমাজ। গ্রামের রাস্তার দুপাশে রোপণ করা হয়েছে ২৪৩০টি তালের বীজ। এই উদ্যোগে সমন্বয় করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. রুবেল হোসেন।
রুবেল হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, তাল গাছের বীজ লাগানোর প্রধান উদ্দেশ্য হলো বজ্রপাত থেকে গ্রামের কৃষকদের বাঁচানো এবং একই সাথে পরিবেশ রক্ষা করা। বর্তমান বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বাড়ছে, যাকে বজ্রপাতের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বজ্রপাত সাধারণত উঁচু জায়গায় ঘটে। তাই স্থানীয় প্রযুক্তি হিসেবে তালগাছকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। তালগাছ তাপমাত্রা কমিয়ে বাতাসকে শীতল রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়া তালগাছ গ্রামের মানুষদের ছায়া, ফল, জ্বালানি ইত্যাদির চাহিদা মেটায়। বর্তমান মাগুরা জেলা বজ্রপাত প্রবণ জেলায় রুপ নিচ্ছে। তাই আমরা সতর্কতার অংশ হিসেবে তালবীজ রোপণ করছি। প্রতি বছর আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বজ্রপাত নিরসনে তালগাছ খুবই উপকারী। আমাদের শিক্ষার্থীর এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বজ্রপাত নিরসনে কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী তালগাছ রোপণের নির্দেশ দিয়েছেন। তাল গাছ রোপণ করলে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে, অন্যদিকে বজ্রপাতের ঝুঁকিও কমে যাবে। পরিবেশবান্ধব কাজে এগিয়ে আসায় শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন।
গত এক দশকে দেশে বজ্রপাতে মোট মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৮১ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে ২০১৮ সালে। ওই বছর বজ্রপাতে মারা গেছে ৩৫৯ জন। চলতি বছরের কেবল এপ্রিলেই মারা গেছেন ৭০ জন, মে মাসে ৬০ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীতে বজ্রপাতে যত মানুষ মারা যায়, তার এক-চতুর্থাংশই বাংলাদেশে। হাওর, বাঁওড় ও বিল এলাকার জেলাগুলোয় বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি।
পি
মন্তব্য করুন