• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বেইলি রোড ট্রাজেডি

মায়ের জন্মদিনে মেয়ের জন্ম, মৃত্যুও একই দিনে

আরটিভি নিউজ

  ০২ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩৪
ফাইল ছবি

তিন বছরের শিশু ফাইরুজ কাশেম জামিরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাসা থেকে বের হন খাগড়াছড়িতে ঘুরতে যাবেন বলে। সে রাতে বাসের টিকেটও কেটে রেখেছিলেন ফাইরুজের বাবা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ফাইরুজের খাগড়াছড়ি ঘুরে দেখা হলো না আর।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাবা শাহজালাল উদ্দিন (৩৪) ও মা মেহেরুন্নেছা জাহান হেলালীর (২৪) সঙ্গে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে গিয়েছিল ফাইরুজ। সেখানে আগুনে প্রাণ গেছে তার। অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেছে তার মা-বাবারও।

শাহজালালের পরিবারের কেউই জানতেন না এই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন তাদের পরিবারের তিন সদস্য। প্রতি শুক্রবার শাহজালাল বাড়িতে ফোন করে সবার খোঁজখবর নিতেন। কিন্তু এই শুক্রবার ফোন না পেয়ে পারিবারের সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

শাহজালালকে ফোনে না পেয়ে তার শ্বশুর মুক্তার আলম হেলালী চলে আসেন ঢাকা মেডিকেলে। খুঁজতে থাকেন তার মেয়ে, জামাই ও নাতনিকে। অবশেষ রাত সাড়ে ১০ টায় খোঁজ মেলে তাদের। ততক্ষণে ঢাকা মেডিকেলের মর্গের হিমাগারে চিরনিদ্রায় ফাইরুজরা।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের ওই ভবনে আগুন লাগে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর গতকাল রাত ১০টার দিকে শিশুটির নানা মুক্তার আলম হেলালি ফাইরুজকে শনাক্ত করেন। তিনি জানান, তিন বছরের শিশুটির নাম ফাইরুজ কাশেম জামিরা। মায়ের নাম মেহেরুন নিসা জাহান হেলালি (২৪) এবং বাবা শাহজালাল উদ্দিন (৩৪)।

জানা গেছে, মা মেহেরুন্নেছা জাহান হেলালীর জন্মদিন ১৪ সেপ্টেম্বর। একই দিন জন্ম হয় মেয়ে ফাইরুজের। জন্মের পর থেকে মা-মেয়ে একসাথে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের মৃত্যুও হলো একই দিনে।

শিশুটির খালা মুক্তারুন নিসা হেলালী আজ গণমাধ্যমকে জানান, সকাল ৭টা থেকে তারা মর্গের সামনে অপেক্ষা করেছেন। তিনজনের মরদেহ নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা কক্সবাজারের উখিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সেখানে পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে তিনজনের দাফন সম্পন্ন হবে।

কক্সবাজার উখিয়া থানার পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবুল কাশেমের ছেলে শাহজালাল। তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও কার্যালয়ে শুল্ক বিভাগে তিনি কর্মরত ছিলেন।

বেইলি রোডের ওই ভবনের আগুনে এই পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১১ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা কেউ ‘শঙ্কামুক্ত’ নন। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।

আগুনের ভয়াবহতা ও মৃত্যুর পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন গতকাল বেইলি রোডে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানিয়েছে, ভবনটিতে রেস্তোরাঁ বা পণ্য বিক্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজধানী এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ফরিদপুরে বজ্রপাতে ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১
ধামরাইয়ে কালবৈশাখীতে দেয়ালচাপায় ২ জনের মৃত্যু
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে: ফায়ার সার্ভিস
কক্সবাজারে পাহাড়ি ছড়ায় গোসলে নেমে ২ শিশুর মৃত্যু
X
Fresh