ব্যবসায়ীকে তুলে এনে ঢাবি হলে নির্যাতন, তিন ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
পাওনা টাকা দিতে দেরি হওয়ায় দুই ব্যবসায়ীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আটকে রেখে তিন দিন ধরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই নেতা ও সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন ছাত্রলীগ নেতাসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিন ছাত্রলীগ নেতা হলেন মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদক মোনতাছির হোসাইন, একই হলের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপসম্পাদক আল শাহরিয়ার মাহমুদ ওরফে তানসেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল হাসান সাঈদি। এ ছাড়াও ঘটনায় সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা মোনতাছিরের আত্মীয় মো. শাহাবুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসার কথা বলে ছাত্রলীগ নেতা মোনতাছির হোসাইনের আত্মীয় মো. শাহাবুদ্দীনের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন আবদুল জলিল। তিনি সময়মত টাকা ফেরত দিতে পারছিলেন না। পরবর্তীতে ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত দুইটার দিকে শাহাবুদ্দীন ১০ থেকে ১২ জনের দল নিয়ে আবদুল জলিল ও তার বন্ধু হেফাজ উদ্দীনকে হাতিরঝিলের হাজীপাড়ার বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসেন।
প্রথমে তাদের বিজয় একাত্তর হল ও পরে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।ওই দলে ছাত্রলীগের গ্রেপ্তার তিন নেতাও ছিলেন।
ঘটনার পর আবদুল জলিল ও হেফাজ উদ্দীনের পরিবারের পক্ষ থেকে হাতিরঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর শনিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় পুলিশের অভিযানে মুহসীন হলের ৫৪৪ নম্বর কক্ষ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহাবুদ্দীন ও তিন ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে হাতিরঝিল থানার পুলিশ।
আবদুল জলিল বলেন, শাহাবুদ্দীন আমার কাছে ৩৫ লাখ টাকা পান। মাঝে কিছুদিন তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত দুইটায় দলবল নিয়ে আমাকে বাসা থেকে তুলে আনা হয়। আমার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে।
নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন বলেছেন, আবদুল জলিলের শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আওলাদ হোসেন রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় হওয়া মামলায় শাহাবুদ্দীন ও অভিযুক্ত তিন ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি জিরো টলারেন্স। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের থানায় পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বিধি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে জানান মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হোসেন। গ্রেপ্তার হওয়ায় এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বক্তব্য জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন