সাবরিনা গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য! (ভিডিও)
প্রতারণার মামলায় চিকিৎসক ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী গ্রেপ্তারের পর বেড়িয়ে আসছে তার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতার সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ আছে ডাক্তার কামরুল হাসান মিলনের মদদে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে রামরাজত্ব করেন সাবরিনা। এক বছর আগে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব শেষ হলেও ক্ষমতার দাপটে এখনো তা ধরে রেখেছেন ডাক্তার মিলন। তবে এসব অনিয়মের কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেন ইন্সটিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. খন্দকার শহীদ হোসেন।
কর্মক্ষেত্রে দিনের পর দিন অনুপস্থিত থেকেও হাজির দেখানো, নিজ প্রতিষ্ঠান ওভাল গ্রুপকে কাজ পাইয়ে দেয়াসহ হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন বহিষ্কৃত চিকিৎসক সাবরিনা। আর এসব অপকর্মের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অভিযোগের আঙুল সার্জারি ইউনিটের সাবেক প্রধান ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. কামরুল হাসান মিলনের দিকে।
সাবরিনা গ্রেপ্তারের পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন সহকর্মীরা। জানা যায়, দুজনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সম্প্রতি সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরী হাসপাতালেই তাদের ওপর চড়াও হন। যা নিয়ে গত মাসে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ডা. মিলন।
এ বিষয়ে ডা. কামরুল হাসান মিলন বলেন, তারা কোনো কারণ ছাড়াই একদিন আমার রুমে আসেন। তারা ঝগড়া করছিলেন। আমি বলি আপনারা বাইরে যান। এটা আপনাদের পারিবারিক ব্যাপার। ওই লোক (সাবরিনার স্বামী) চিৎকার করছিলেন। তখন আমাদের ডাক্তারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এসে তাকে বের করে দেন। যাওয়ার সময় তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে যান। তিনি আমারে মারতেও আসছিলেন।
ডাক্তার মিলনের কর্মকাণ্ড নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন। কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের প্রধান কে তা নিয়ে রীতিমতো গোলকধাঁধায় পড়তে হয়। ১ বছর আগে ডা. রামাপদ সরকারকে বিভাগীয় প্রধান করা হলেও তা মেনে নেননি কামরুল হাসান মিলন। তাই এখনো বিভাগীয় প্রধানের কক্ষটি ছাড়েননি। আদালতে মামলা করে কক্ষটি ধরে রেখেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডা. মিলন বলেন, তিনি আমার আন্ডারে ছিলেন পাঁচ বছর। এখন আমি তার আন্ডারে চলে যাব। তার বিভাগীয় প্রধান আমি। এটা হতে পারে না। আমাকে বঞ্চিত করা হলো, আমাকে অপমান করা হলো। তাই আমি আদালতে রিট করি। এটা এখনও বিচারাধীন। আমি যখন থেকে বিভাগীয় প্রধান তখন থেকে আমি এই রুমে।
ডা. মিলনের প্রভাবে কোণঠাসা বর্তমান প্রধান অধ্যাপক ডা. রামাপদ সরকার আগের ছোট্ট কক্ষেই অফিস করেন। অধ্যাপক ডা. রামাপদ সরকার বলেন, ডা. মিলন অবসরে যাবেন ২০২৮ সালে, আর আমি অবসরে যাব এইবছরে। এটা আর ভেঙে বলতে হয় না। আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি দায়িত্ব পালন করছি। আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তার পরেও চালিয়ে যাচ্ছি।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. খন্দকার শহীদ হোসেন বলেন, ডা. মিলন বিভাগীয় প্রধান নন। তারপরও কিভাবে তিনি বিভাগীয় প্রধানের নামফলক ব্যবহার করেন তা আমার জানা নেই। ডা. সাবরিনার অপকর্ম নিয়েও আমি আগে কিছু জানতাম না। তাছাড়া সাবরিনাকে দেখার জন্য তার ইউনিট চিফ আছে, হেড অব ডিপার্টমেন্ট আছে। তাকে দেখার দায়িত্ব আমার নয়।
সম্প্রতি ডা. সাবরিনাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তবে তার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এসএ/পি
মন্তব্য করুন