৩০ জানুয়ারিতেই হবে ঢাকা সিটি নির্বাচন: হাইকোর্ট
আসন্ন ৩০ জানুয়ারি ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি হতে আর বাধা নেই।
মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো.খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে, ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
ওই তফসিল অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ভোটগ্রহণের তারিখ ধার্য করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সরস্বতী পূজার কারণে নির্বাচন পেছানোর দাবি ওঠে।
এসজে
মন্তব্য করুন
ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বিকে আবাসিক হলের সিট ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে ইমতিয়াজের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক।
এর আগে, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বির হলের সিট বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। ইমতিয়াজ হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ এ রিট দায়ের করেছেন।বুয়েটের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেনের হলের সিট বাতিল করে। এ ঘটনার সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। গত ৩০ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বুয়েট প্রশাসন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েটে মধ্যরাতে প্রবেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ছয় দফা দাবিতে সকাল থেকেই বিক্ষোভ কর সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বন্ধ থাকে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বহিরাগত কিছু নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান। ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন; যিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তাই তাকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তার সহযোগীদেরও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। পরে অবশ্য ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বির রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদেশ দেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে।
বর্ষবরণে শ্লীলতাহানি : ৯ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
২০১৫ সালে বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে পুলিশ।
এ ঘটনায় করা মামলায় সাত আসামিকে খুঁজে না পেয়ে পরের বছর কামাল নামে এক ব্যবসায়ীকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরের বছরের জুন মাসে আসামি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত। কিন্তু অভিযোগ গঠনের প্রায় ছয় বছর পরও ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও তারা সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসছেন না। সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় আলোচিত মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে রয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার প্রায় দুই বছর পর কামাল নামে একজনকে আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটিতে ৯ জনের সাক্ষী নেওয়ার পর সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এ দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামলাটি রায় ঘোষণা থেকে উত্তোলন করে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৫ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে নতুন দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আগামী পহেলা বৈশাখের আগে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ব্যবসায়ী কামালকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অন্য সাতজনকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হবে। এ মামলায় ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাংলা নববর্ষের উৎসবে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় করা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। তবে মামলাটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী বাদ পড়ায় আমরা রায় ঘোষণা থেকে উত্তোলন করে আবার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করি। আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটির পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাটিতে কিছু পুলিশ সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আসেননি। তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন জারি করা হবে। তারা সাক্ষ্য দিলে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে। আশা করছি, দ্রুতসময়ের মধ্যে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল টিএসসিতে নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এসময় সেই নারীদের বাঁচাতে গেলে নিপীড়কদের আঘাতে হাত ভাঙে তৎকালীন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লিটন নন্দী। আহত হন ছাত্র ইউনিয়নের আরও দুই নেতা। পরে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বারবার অভিযোগ করলেও পুলিশ প্রথমে স্বীকার করেনি। পরে ফুটেজ দেখে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ।
বড় মেয়েকে নিয়ে গোপনে বাংলাদেশ ছাড়লেন সেই জাপানি মা
কাউকে কিছু না বলে গোপনে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়লেন সেই জাপানি মা নাকানো এরিকো। গত ৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে যান। এমনটিই অভিযোগ জাপানি শিশুদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের।
দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে শরীফ বলেন, আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরও নাকানো এরিকো আদেশ অমান্য করেছেন। বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
জানা যায়, হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে, এ মর্মে রায় দেন। একই সাথে বলেন, মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। তবে এই রায়ের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৯ এপ্রিল স্থিতাবস্থা জারি করেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন ১৫ এপ্রিল। কিন্তু তার আগেই ৯ এপ্রিল বিকেলে নাকানো এরিকো বড় মেয়েকে নিয়ে চুপিসারে চলে যান জাপানে।
‘আদেশ অমান্য করার’ এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ। তার সেই আবেদনের ওপর সোমবার (১৫ এপ্রিল) চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। আদালত আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।
এ ব্যাপারে শিশুদের বাবা ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা স্বত্বেও বড় সন্তানকে নিয়ে নাকানো এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে চট্টগ্রাম আদালতে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবিরের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে ২০২২ সালের ১৪ জুন নুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার ইয়াসির আরাফাত তানিম।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে সিআইডির চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল করিম তদন্ত করে গত ৬ ফেব্রুয়ারি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে আসামির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (১), ২৯ (১) ও ৩১ ধারায় অপরাধ আমলে নিতে আবেদন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সিআইডির দাখিল করা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আজ (সোমবার) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল, আসামি নুরুল হম নুর ২০২২ সালের ১ জুন বাংলাদেশ ছাত্র যুব অধিকার পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ করেন। এতে নুর নিজেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে গুন্ডালীগ বলে আখ্যায়িত করেন। একই সমাবেশে নুর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুনি এবং তৎকালীন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে চট্টগ্রামের আরেক গুন্ডা, উন্মাদ বলে মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়াল
শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জামিনের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে গিয়ে ড. ইউনূস স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত আগামী ২৩ মে পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এই মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিন শীর্ষ কর্মকর্তার জামিনের মেয়াদ একই সময়ের জন্য বৃদ্ধি করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ আউয়াল।
তারা হলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও এস এম মিজানুর রহমান।
এর আগে, গত ৩ মার্চ এই মামলায় তাদের জামিনের মেয়াদ বাড়ান আদালত। সেদিন পরবর্তী শুনানির জন্য ১৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়। এরপর গত বছরের ৬ জুন মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। একই বছরের ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ৯ নভেম্বর। গত ২৪ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। পরে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শ্রম আইন ২০০৬ ও শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয়নি। গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি।
এনটিআরসিএ / গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩৫ ঊর্ধ্বদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ
সদ্য প্রকাশিত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২০ এ ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আইনজীবী শাহীনুজ্জামান শাহীন আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালত একই সঙ্গে ২০২২ সালে জারিকৃত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বয়সসীমা আবেদনকারীদের অনুকূলে নির্ধারণ কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
এদিন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন।
প্রসঙ্গত, ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২০ উত্তীর্ণ বয়স ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রার্থীদেরকে আবেদনের সুযোগ দিতে ২০০ জন প্রার্থী হাইকোর্টে রিট করেন।
‘নাসিরকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন পরীমণি’
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে হত্যা করতে গ্লাস ছুড়ে মেরেছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। এমনটাই জানিয়েছেন বোটক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এই কথা জানান তিনি।
আইনজীবী বলেন, ঘটনার দিন রাতে পরীমণি মদ্যপ ছিলেন। ফ্রিতে মদ না পেয়ে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর করেন নায়িকা পরীমণি। নাসিরকে মেরে ফেলতে ভাঙা গ্লাস ছুড়ে মেরেছিলেন পরীমণি।
এ বিষয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, ধর্ষণচেষ্টার মামলা দিয়ে আমাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছিল। মানুষ এখন জানবে আমি নিরপরাধ ছিলাম। হত্যাচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভালো লাগত।
এদিন পরীমণির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন বাদীপক্ষ। আদালত প্রতিবেদন গ্রহণ করে এ বিষয়ে আদেশ পরে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
গত ১৮ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলার পিবিআই পরিদর্শক মো. মনির হোসেন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে পরীমণিসহ জুনায়েদ বোগদাদী জিমিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মেলেনি। বুধবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে পিবিআই বলছে, ২০২১ সালের ৮ জুন রাতে আসামি পরীমণি অসৎ উদ্দেশে বাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে ফাঁদে ফেলে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করে ঢাকা বোট ক্লাবের নিয়ম উপেক্ষা করে ফ্রিতে তিন লিটারের ব্লু লেবেল মদ পার্সেল নিতে না পেরে বাদীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি প্রদান করেন।
পরীমণি ইচ্ছাপূর্বকভাবে বাদীর দিকে এসট্রে ছুড়ে মেরে তার ডান কানের ওপরে মাথায় আঘাত করে জখম করেন। এ ছাড়া আসামিদের ছোড়া ভাঙা গ্লাসের টুকরায় বাদীর বুকে লাল চিহ্নিত স্ক্র্যাচ মার্কযুক্ত জখম করে ও ক্লাবের বারের ভেতরে যত্রতত্র গ্লাস, কাচের বোতল এসট্রে ইত্যাদি ছুড়ে ফেলে তাণ্ডব করে। যার ফলে আসামি পরীমণির বিরুদ্ধে বাদীর আনা ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধ করেছে মর্মে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বারের ভেতরে তাণ্ডব করতে থাকলে সাক্ষী তুহিন সিদ্দিকীকে বাদী নাসির আসামিদের নিয়ে বার থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। তখন আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমি তেড়ে এসে বাদী নাসির মাহমুদকে গালমন্দ করতে করতে এবং হুমকি প্রদর্শনপূর্বক ২/৩টা কিল-ঘুষি মারেন। এতে আসামি জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ মতে ৩২৩/৫০৬ ধারার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে বাদীর আনা কোনো অভিযোগের সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর আগে, ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির উদ্দিন মাহমুদ। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে একই বছরের ১৮ জুলাই এ মামলাটি গ্রহণ করে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন দামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান।
২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন।
এতে নাসির উদ্দিন মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। মামলায় আরও বলা হয়, পরীমণি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন। এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমণি সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।