দুই যুগ আগের হত্যা মামলায় ১৩ জনের ফাঁসি
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় বিল্লাল ওরফ বিলু হত্যা মামলায় ১৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি বিচারক প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি মকবুল হোসেন কাজল জানান, ১৯৯৫ সালে কালীগঞ্জের ঈশ্বরপুর গ্রামে বিল্লাল হোসেন বিলুকে (৪৫) হত্যা করেন আসামিরা। এ ঘটনায় তার স্ত্রী কালীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ১৩ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে বিচারক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে।
এসএস
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়েছে সরকার।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ২৫ মার্চ থেকে তার সাজা স্থগিত কার্যকর হবে। এ সময় তিনি নিজ বাসায় থেকেই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করবেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারবেন না।
এর আগে, গত ২০ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হচ্ছে। সে সময় আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে মত দেওয়া হয়। এরপর খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে করা আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়।
৭৮ বছর বয়সী বিএনপির এই নেত্রী হার্টের সমস্যা, লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এরইমধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। এরপর দেশে করোনা শুরু হলে ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। তখন থেকে তিনি গুলশানের বাড়িতে রয়েছেন এবং প্রতি ছয় মাস পরপর সরকার থেকে তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
নবীন জজ ও আইনজীবীদের সংবর্ধনা দিলো হক ল’ একাডেমি
আইন শিক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান হক ল’ একাডেমি থেকে নবীন সহকারী জজ ও আইনজীবীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর কাওরান বাজারে একটি কনভেনশন সেন্টারে এ সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় একাডেমির প্রথম স্মরণিকা ‘আইনের বাতিঘর’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে একাডেমির পরিচালক অ্যাডভোকেট নূরুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নব নির্বাচিত সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক।
এ ছাড়া একাডেমির শিক্ষার্থী রুমি নোমান ও খাদিজা মুন্নির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. শাজাহান মণ্ডল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আরিফুল ইসলাম, মিল্টন হোসেন, মোতাছিম বিল্যাহ, সাবেক যুগ্ম জেলা জজ সাজ্জাদ হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মেফতাহুল হাসান, কান্ট্রি এডিটরস ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, হক ল' একাডেমির চেয়ারম্যান বুশরাত মাসুমা নিপা ও প্রায় ৫০০ সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থী।
এ সময় প্রায় ২০ জন সুপারিশপ্রাপ্ত সহকারী জজ ও ২০০ আইনজীবীকে গাউন ও কেস্ট দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক বলেন, বিচারক ও আইনজীবীদের হতে হবে সৎ, মানবিক ও দয়ালু। কেউ যেন তাদের কাছে হয়রানি না হয় কিংবা অবিচার না পায়। আমি তাদের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি।
একাডেমির পরিচালক অ্যাডভোকেট নূরুল হক বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দক্ষ বিচারক ও আইনজীবী তৈরির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আইন অঙ্গনের নতুন এ সদস্যদের উৎসাহিত করতেই আমাদের এ আয়োজন।
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলবে : হাইকোর্ট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে, আজ সকালে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি করার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়।
২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বুয়েট কর্তৃপক্ষের দেওয়া ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ বৈধতা নিয়ে বুয়েটের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রিটটি করেন।
এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, বুয়েট কর্তৃপক্ষ তাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ করে যে নোটিশ দিয়েছিল সেটিই স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
এদিকে বুয়েটের উপাচার্য বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ক্যাম্পাসে ফের ছাত্ররাজনীতি চালু করা যেতে পারে।
আদালতের নির্দেশ না মানায় পিএসসি চেয়ারম্যানকে নোটিশ
হাইকোর্টের নির্দেশ না মানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ও সদস্য সচিবদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের পক্ষে সোমবার (১ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মারুফ হোসেন এই নোটিশ পাঠান।
তিনি বলেন, গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি ৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু পিএসসি বিষয়টি পাত্তাই দেয়নি। এজন্য অবমাননার অভিযোগে তাদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ পাওয়ার আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে নন-ক্যাডার উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ না করলে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই আইনজীবী।
এর আগে, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি এমন ৫০০ জন চাকরিপ্রার্থী ২৯ জানুয়ারি একটি রিট করেন। রিটে পিএসসি চেয়ারম্যান ও জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
সাজেকে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সাজেক পর্যটন এলাকায় পাহাড় কেটে রিসোর্টের সুইমিংপুল নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে অননুমোদিত পাহাড় কাটায় জড়িতদের কেন বিচারের আওতায় আনা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এর করা এ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এইচআরপিবি’র চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
তিনি জানান, ‘মেঘপল্লী রিসোর্ট’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাজেকে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণের কাজ করছে। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট ও পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে সুইমিংপুল নির্মাণ কাজ বন্ধসহ সাজেক ও আশপাশ এলাকায় অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটা বন্ধের আদেশ দিয়েছেন আজ। এছাড়া অননুমোদিত পাহাড় কাটায় যারা জড়িত আছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাহাড় কেটে সুইমিংপুর নির্মাণের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য যুগ্ম সচিবের নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানিয়েছেন, প্রাথমিক শুনানি শেষে সাজেকসহ আশপাশের এলাকায় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করেছে আদালত। পরিবেশ ও বন ও মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রুইলুই, হামারি এবং কংলাক এই তিনটি পাড়া নিয়ে সাজেক পর্যটনকেন্দ্র। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৮০০ ফুট উপরে অবস্থিত এ পর্যটনকেন্দ্রে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণ করছে মেঘপল্লী রিসোর্ট। এতে একদিকে যেমন সাজেকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে পাহাড় ধসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
জামিন পেলেন ট্রান্সকমের শীর্ষ তিন কর্তা
হত্যাসহ প্রতারণার চার মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) আসামিরা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহবুব আহমেদ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ট্রান্সকম গ্রুপের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম।
পৃথক চারটি মামলা দায়েরের সময় ট্রান্সকম গ্রুপের তিন শীর্ষ কর্তা বিদেশে ছিলেন। যাতে তারা কোনো ধরনের বাধা ছাড়া দেশে ফিরে আইনিভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন, সে জন্য উচ্চ আদালতে পৃথক রিট আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত তাদের কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই দেশে ফেরা এবং ফেরার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্তা দেশে ফিরেই আজ বুধবার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হন। এরপর তারা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ ও জামিন আবেদন করেন। পরে শুনানি নিয়ে আদালত চারটি মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
ট্রান্সকম গ্রুপের সম্পত্তি ও শেয়ারসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হক তার বড় বোন ও ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান সিইও সিমিন রহমান এবং গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান ও তাদের মা শাহনাজ রহমানসহ ট্রান্সকমের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছেন।
এর মধ্যে একটি মামলায় শাযরেহ হক তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন সিমিন রহমানসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে।
গত ২১ মার্চ রাতে গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন ট্রান্সকমের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ।
২০২৩ সালের ১৬ জুন ঢাকার গুলশানের বাসায় নিজের শোয়ার ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ১ জুলাই লতিফুর রহমানের মৃত্যু হলে এক মাসের মাথায় ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন লতিফুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ রহমান, বড় মেয়ে সিমিন হোসেন পান সিইওর দায়িত্ব।
সাড়ে তিন বছরের মাথায় ছোট মেয়ে শাযরেহ হক মামলার পথে হাঁটায় এই পরিবারের কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বারের দায়িত্ব নিচ্ছেন ব্যারিস্টার খোকন
পুনর্নিবাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নেওয়া দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই সুপ্রিম কোর্ট বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে যাচ্ছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ (১ নম্বর হল রুমে) হলে নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন ও তার সমর্থকরা এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান। পরে ব্যারিস্টার খোকন নিজে সংবাদ সম্মেলন করে বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন বলে জানান।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. গিয়াস উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়ালি উর রহমান খান, সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ও অ্যাডভোকেট এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা।
এর আগে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের নতুন বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দিয়েছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত ওই চিঠির অনুলিপিটি দলের মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের (দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত) কাছে পাঠানো হয়।
গত ৬ ও ৭ মার্চ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এবারের বার নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী হয় বিএনপি-জামায়াতপন্থি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য নীল প্যানেল। অন্যদিকে সম্পাদকসহ ১০টি পদে জয় পায় আওয়ামী লীগপন্থি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সাদা প্যানেল।
নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে (নীল প্যানেল হিসেবে পরিচিত) সভাপতি পদে বিজয়ী হন এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। এছাড়া সদস্য পদে নির্বাচিত হন সৈয়দ ফজলে এলাহী, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম শফিক।
মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ এই চারজনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পাঠানো ২৭ মার্চের চিঠিতে বলা হয়, বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করেছে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দুজন প্রার্থী প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মঞ্জুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের মারধর ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দুজন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিনজন আইনজীবী ফোরামের নেতাকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ মামলায় ওসমান চৌধুরী, সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তারা দুই সপ্তাহের মতো কারাভোগ করেছেন। তাদের কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে।
চিঠিতে এরপর বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে ২৪ মার্চ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এবং সম্পাদকদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ৯ মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের (খোকনসহ চারজন) এ মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এ সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।