মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: ছাত্র অধিকারের ৩০ নেতাকর্মী রিমান্ড শেষে কারাগারে
রাজধানী ঢাকায় মোদিবিরোধী বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ৩০ নেতাকর্মীকে ২ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী এ আদেশ দেন।
রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সফিকুল ইসলাম আকন্দ। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম, খাদেমুল ইসলাম ও তৌফিক শাহরিয়ার জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠান।
একইদিনে সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার ইলিয়াস মিয়া নামে অপর এক আসামিকে ১ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ২৬ মার্চ ছাত্র অধিকারের ৩০ নেতাকর্মীর ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
কেএফ
মন্তব্য করুন
আদালতের নির্দেশ না মানায় পিএসসি চেয়ারম্যানকে নোটিশ
হাইকোর্টের নির্দেশ না মানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ও সদস্য সচিবদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের পক্ষে সোমবার (১ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মারুফ হোসেন এই নোটিশ পাঠান।
তিনি বলেন, গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি ৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু পিএসসি বিষয়টি পাত্তাই দেয়নি। এজন্য অবমাননার অভিযোগে তাদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ পাওয়ার আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে নন-ক্যাডার উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ না করলে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই আইনজীবী।
এর আগে, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও ক্যাডার পদে সুপারিশ পাননি এমন ৫০০ জন চাকরিপ্রার্থী ২৯ জানুয়ারি একটি রিট করেন। রিটে পিএসসি চেয়ারম্যান ও জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণদের তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
সাজেকে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সাজেক পর্যটন এলাকায় পাহাড় কেটে রিসোর্টের সুইমিংপুল নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে অননুমোদিত পাহাড় কাটায় জড়িতদের কেন বিচারের আওতায় আনা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এর করা এ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এইচআরপিবি’র চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
তিনি জানান, ‘মেঘপল্লী রিসোর্ট’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাজেকে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণের কাজ করছে। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট ও পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে সুইমিংপুল নির্মাণ কাজ বন্ধসহ সাজেক ও আশপাশ এলাকায় অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটা বন্ধের আদেশ দিয়েছেন আজ। এছাড়া অননুমোদিত পাহাড় কাটায় যারা জড়িত আছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাহাড় কেটে সুইমিংপুর নির্মাণের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য যুগ্ম সচিবের নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানিয়েছেন, প্রাথমিক শুনানি শেষে সাজেকসহ আশপাশের এলাকায় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করেছে আদালত। পরিবেশ ও বন ও মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রুইলুই, হামারি এবং কংলাক এই তিনটি পাড়া নিয়ে সাজেক পর্যটনকেন্দ্র। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৮০০ ফুট উপরে অবস্থিত এ পর্যটনকেন্দ্রে পাহাড় কেটে সুইমিংপুল নির্মাণ করছে মেঘপল্লী রিসোর্ট। এতে একদিকে যেমন সাজেকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে পাহাড় ধসের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
জামিন পেলেন ট্রান্সকমের শীর্ষ তিন কর্তা
হত্যাসহ প্রতারণার চার মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) আসামিরা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহবুব আহমেদ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ট্রান্সকম গ্রুপের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম।
পৃথক চারটি মামলা দায়েরের সময় ট্রান্সকম গ্রুপের তিন শীর্ষ কর্তা বিদেশে ছিলেন। যাতে তারা কোনো ধরনের বাধা ছাড়া দেশে ফিরে আইনিভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন, সে জন্য উচ্চ আদালতে পৃথক রিট আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত তাদের কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই দেশে ফেরা এবং ফেরার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্তা দেশে ফিরেই আজ বুধবার সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হন। এরপর তারা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ ও জামিন আবেদন করেন। পরে শুনানি নিয়ে আদালত চারটি মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
ট্রান্সকম গ্রুপের সম্পত্তি ও শেয়ারসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হক তার বড় বোন ও ট্রান্সকম গ্রুপের বর্তমান সিইও সিমিন রহমান এবং গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান ও তাদের মা শাহনাজ রহমানসহ ট্রান্সকমের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছেন।
এর মধ্যে একটি মামলায় শাযরেহ হক তার বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যার অভিযোগ এনেছেন সিমিন রহমানসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে।
গত ২১ মার্চ রাতে গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন ট্রান্সকমের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ।
২০২৩ সালের ১৬ জুন ঢাকার গুলশানের বাসায় নিজের শোয়ার ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ১ জুলাই লতিফুর রহমানের মৃত্যু হলে এক মাসের মাথায় ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন লতিফুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ রহমান, বড় মেয়ে সিমিন হোসেন পান সিইওর দায়িত্ব।
সাড়ে তিন বছরের মাথায় ছোট মেয়ে শাযরেহ হক মামলার পথে হাঁটায় এই পরিবারের কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে।
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বারের দায়িত্ব নিচ্ছেন ব্যারিস্টার খোকন
পুনর্নিবাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নেওয়া দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই সুপ্রিম কোর্ট বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে যাচ্ছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ (১ নম্বর হল রুমে) হলে নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন ও তার সমর্থকরা এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান। পরে ব্যারিস্টার খোকন নিজে সংবাদ সম্মেলন করে বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন বলে জানান।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. গিয়াস উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়ালি উর রহমান খান, সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ও অ্যাডভোকেট এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা।
এর আগে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের নতুন বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দিয়েছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত ওই চিঠির অনুলিপিটি দলের মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের (দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত) কাছে পাঠানো হয়।
গত ৬ ও ৭ মার্চ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এবারের বার নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী হয় বিএনপি-জামায়াতপন্থি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য নীল প্যানেল। অন্যদিকে সম্পাদকসহ ১০টি পদে জয় পায় আওয়ামী লীগপন্থি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সাদা প্যানেল।
নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে (নীল প্যানেল হিসেবে পরিচিত) সভাপতি পদে বিজয়ী হন এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। এছাড়া সদস্য পদে নির্বাচিত হন সৈয়দ ফজলে এলাহী, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম শফিক।
মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ এই চারজনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পাঠানো ২৭ মার্চের চিঠিতে বলা হয়, বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করেছে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দুজন প্রার্থী প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মঞ্জুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের মারধর ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দুজন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিনজন আইনজীবী ফোরামের নেতাকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ মামলায় ওসমান চৌধুরী, সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তারা দুই সপ্তাহের মতো কারাভোগ করেছেন। তাদের কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে।
চিঠিতে এরপর বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে ২৪ মার্চ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এবং সম্পাদকদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ৯ মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের (খোকনসহ চারজন) এ মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এ সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।
ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় করা ধর্ষণ মামলায় জামিন পেয়েছেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানির সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক। আদালতে তার পক্ষে জামিন আবেদন করে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রকিবউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। পরে ওই রিসোর্ট ভাঙচুর করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেন তার অনুসারীরা। একই বছরের ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।
এ ঘটনার ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন তার সঙ্গে থাকা ওই নারী। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বিকে আবাসিক হলের সিট ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে ইমতিয়াজের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক।
এর আগে, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বির হলের সিট বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। ইমতিয়াজ হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ এ রিট দায়ের করেছেন।বুয়েটের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেনের হলের সিট বাতিল করে। এ ঘটনার সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। গত ৩০ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বুয়েট প্রশাসন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েটে মধ্যরাতে প্রবেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ছয় দফা দাবিতে সকাল থেকেই বিক্ষোভ কর সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বন্ধ থাকে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বহিরাগত কিছু নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান। ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন; যিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তাই তাকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তার সহযোগীদেরও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। পরে অবশ্য ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বির রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদেশ দেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে।
বর্ষবরণে শ্লীলতাহানি : ৯ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
২০১৫ সালে বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে পুলিশ।
এ ঘটনায় করা মামলায় সাত আসামিকে খুঁজে না পেয়ে পরের বছর কামাল নামে এক ব্যবসায়ীকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরের বছরের জুন মাসে আসামি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত। কিন্তু অভিযোগ গঠনের প্রায় ছয় বছর পরও ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও তারা সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসছেন না। সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় আলোচিত মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে রয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার প্রায় দুই বছর পর কামাল নামে একজনকে আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটিতে ৯ জনের সাক্ষী নেওয়ার পর সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এ দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামলাটি রায় ঘোষণা থেকে উত্তোলন করে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৫ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে নতুন দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আগামী পহেলা বৈশাখের আগে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ব্যবসায়ী কামালকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অন্য সাতজনকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হবে। এ মামলায় ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাংলা নববর্ষের উৎসবে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় করা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। তবে মামলাটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী বাদ পড়ায় আমরা রায় ঘোষণা থেকে উত্তোলন করে আবার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করি। আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটির পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাটিতে কিছু পুলিশ সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আসেননি। তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন জারি করা হবে। তারা সাক্ষ্য দিলে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে। আশা করছি, দ্রুতসময়ের মধ্যে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল টিএসসিতে নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এসময় সেই নারীদের বাঁচাতে গেলে নিপীড়কদের আঘাতে হাত ভাঙে তৎকালীন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লিটন নন্দী। আহত হন ছাত্র ইউনিয়নের আরও দুই নেতা। পরে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বারবার অভিযোগ করলেও পুলিশ প্রথমে স্বীকার করেনি। পরে ফুটেজ দেখে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ।