মাদকবিরোধী অভিযানে ডিএমপিতে গ্রেপ্তার ৭৪
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল আসাদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ৬৫০২ পিস ইয়াবা, ১৮২ গ্রাম ১৭৫ পুরিয়া ১০০ পাতা হেরোইন, ৮৫ কেজি ৯১০ গ্রাম গাঁজা ও ১০৩ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়।
আসামিদের নামে ডিএমপির থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৫৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কেএফ/এসকে
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে মেসেজ, ভুয়া রাষ্ট্রপতি গ্রেপ্তার
একটি অপরিচিত নম্বর থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে দুই নার্সকে বদলির সুপারিশ করা হয়। মন্ত্রী মেসেজগুলো ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে পাঠান। পরবর্তীতে ডিবি তদন্ত করে দেখে সেগুলো ভুয়া। এরপর অভিযান চালিয়ে পাবনার সুজানগর থেকে সিরাজ নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
বুধবার (৩ এপ্রিল) এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবিপ্রধান বলেন, যে দুই নার্সকে বদলির জন্য রাষ্ট্রপতি পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হয় তারা সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোসা. নবীনা খাতুন ও মোসা. পারভীন আক্তার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেসেজ দুটি আমার কাছে পাঠালে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখি। রাষ্ট্রপতির মোবাইল থেকে অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোবাইলে কোনো মেসেজ দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ নার্সের বদলির সুপারিশের মেসেজটি ভুয়া। তদন্তের এক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক সিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, সিরাজ একাধিক এমপির ভুয়া ডিও লেটার দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বদলির জন্য তদবির করেছেন। সিরাজ অষ্টম শ্রেণি পাস হলেও তিনি প্রতারণার বিষয়টি ভালোভাবে লব্ধ করেছেন। তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে একজন নার্স, একজন শিক্ষক রয়েছেন। ৮ মাস আগে তিনি আরেকটি বিয়ে করেছেন। রাষ্ট্রপতি ছাড়াও সিরাজ বিভিন্ন এমপি ও মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করেছেন।
হারুন অর রশীদ বলেন , সিম কেনার পর ট্রু-কলারে নম্বর সেভ করতেন রাষ্ট্রপতির নামে। তদবিরের জন্য যে সিম দিয়ে সিরাজ তদবিরের জন্য মেসেজ দিতেন সেই সিমটি পানিতে ফেলে দিতেন। এরপর তিনি থানায় জিডি করেন তার সিম হারিয়ে গেছে। নতুন সিম কিনে আবার একইভাবে প্রতারণা করতেন। সিম পানিতে ফেলে জিডি করার অর্থ হলো, পুলিশ তাকে ধরলে তিনি বলতেন তার সিম হারিয়ে গেছে, তাই জিডিও করেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সিরাজ রাষ্ট্রপতির নাম কেন ব্যবহার করলেন? জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে জানতে রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এপিএস-২, মন্ত্রী, এমপি এবং বড় বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে প্রতারণাকারী চক্রের অনেক সদস্যকে ডিবি সাইবার আইনের আওতায় নিয়ে এসেছিল বলে জানান হারুন অর রশীদ।
আটা-ময়দা-সুজি দিয়ে তৈরি হতো অ্যান্টিবায়োটিক
দেশে যেসব ওষুধ কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে, অথবা যে কোম্পানি দেশে নেই, সেসব কোম্পানির ওষুধ একটি অসাধু চক্র নকল করে বাজারজাত করে আসছে। নকল মোড়কে এসব ওষুধ বাজারে ছাড়া হতো। মোড়কের ভেতরে থাকত আটা–ময়দা ও সুজি দিয়ে তৈরি ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট। ভয়ংকর এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (৩১ মার্চ) মতিঝিল ও বরিশাল কোতোয়ালি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— শহীদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, শাহীন, হৃদয় ও হুমায়ুন। তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ পিস নকল অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
সোমবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, চক্রটি ঢাকার সাভার ও কুমিল্লায় কারখানা তৈরি করে এ ট্যাবলেট তৈরি করত। পরে সেগুলো নিয়ে বরিশালে গুদামজাত করত। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় কুরিয়ারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হতো। চক্রটি গত ৮-১০ বছর ধরে এ প্রতারণা করে আসছিলে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয়কর্মীর চাকরির পাশাপাশি এ প্রতারণা করছে। যেসব ওষুধের ভালো বাজার ছিল, কিন্তু কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর পাওয়া যায় না, সেসব ওষুধ তারা টার্গেট করত। নকল মোড়কে আসল ওষুধ বলে বিক্রি করত। এ ছাড়া যেসব ওষুধ কোম্পানি বাংলাদেশে নেই, বাজারে নেই, সেগুলোই তারা তৈরি করে বাজারজাত করত।
হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার শহীদুল দীর্ঘদিন ধরে বরিশালের নথুল্লাবাদ এলাকায় নকল বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক মজুত করে শাহীনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করে আসছিলেন। হুমায়ুন অপসোনিন কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্মেসিতে নকল অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় করতেন। এ ছাড়া সিরাজুল ও হৃদয় নকল ওষুধ বিক্রয়ের যাবতীয় কাজ করতেন। কারখানায় নকল ওষুধ তৈরি করে সেগুলো কুমিল্লার আবু বক্কর বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ করতেন। এভাবেই চক্রটি নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করত। এর আগেও এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। জামিনে বের হয়ে তারা আবার একই কাজ শুরু করেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, চক্রটি বাজারে থাকা ও বাজার থেকে বিলুপ্ত এমন ওষুধের মধ্যে রিলামক্স-৫০০ ট্যাবলেট, মক্সিকফ-২৫০, সিপ্রোটিম-৫০০ এমজি, এমোক্সস্লিন, জিম্যাক্স, মোনাস-১০ নকল করে বাজারে ছাড়ত। তারা কাফকা ফার্মাসিউটিক্যালস, ডক্টর টিমস ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস, কুমুদিনী ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধ নকল করত। চক্রটি ১০ বছর ধরে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আসছে। তাদের নামে এ পর্যন্ত ১৫টি মামলা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮০টি ইউনানি ওষুধ কোম্পানির ভেজাল ওষুধ তৈরির বিষয়ে তথ্য তারা ওষুধ প্রশাসনকে দিয়েছেন। চক্রটির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীতে ঈদ বকশিশের নামে চলছে চাঁদাবাজি
ঈদ বকশিশের নামে বিভিন্ন উপায়ে রাজধানীতে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। বিভিন্ন এলাকায় ঈদ উপলক্ষে আলোকসজ্জার নামেও চাওয়া হচ্ছে চাঁদা। এর শিকার হচ্ছেন শিল্পপতি, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি, ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক এবং দোকানদাররা। বকশিশের নামে হাসিমুখে এ চাঁদা চাওয়ায় কারও বিরুদ্ধে অভিযোগও করা যাচ্ছে না। অনেকে আবার বিপদে পড়ার আশঙ্কায় পুলিশের দ্বারস্থও হতে পারছেন না।
সরেজমিনে রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, ইসলামপুর কাপড়বাজার, কেরানীগঞ্জ কাপড়বাজার, খিলগাঁও তালতলা মার্কেট, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, এলাকায় মার্কেট ও ফুটপাতে ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবারের রোজার সময়ে এমনিতেই কাপড় কেনাবেচা কম হচ্ছে, তার ওপর ভর করেছে বকশিশ। এক ব্যবসায়ী বলেন, ভবিষ্যতে এই জায়গায় ব্যবসা করে খেতে হবে। এই কারণে থানা পুলিশের দ্বারস্থ না হয়ে নীরবে আবদার পূরণ করি।
রাজধানীর মিরপুরে ঈদ উপলক্ষে আলোকসজ্জার নামে কার্ড ছাপিয়ে বাড়ির মালিকদের কাছে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক বাড়ির মালিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, এলাকা লাইটিং করার নামে আমার কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। পরে তাদেরকে ৫০০ টাকা দিয়েছি।
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হিসাবে রাজধানীতে প্রায় ১৪৭টি শপিংমল রয়েছে। তবে বাস্তবে এর সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে। আর এসব শপিংমলে অন্তত লাখখানেক ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। এসব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সর্বনিম্ন ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার, এক লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী এবং কৌশলে বড় অঙ্কের চাঁদাবাজিতে যুক্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ভুক্তভোগীদের নেই। মূলত এ কারণেই নীরবে চাঁদাবাজি বিস্তার লাভ করছে।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত বছরগুলোর ঈদের তুলনায় এবারের ঈদে চাঁদাবাজদের উৎপাত একটু কম। বিশেষ করে টপটেররদের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেলিফোনে চাঁদাবাজি অনেকটা কমে এসেছে। তবে সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে মাস্তানদের বকশিশ চাঁদাবাজি চলছে খুবই নীরবে।
ইতোমধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না। সব ধরনের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে সংকট কাটছে না।
এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে র্যাবের নীতি জিরো টলারেন্স। চাঁদাবাজসহ অন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলমান রয়েছে।
মাদক কারবারে সংশ্লিষ্ট বদির দুই ভাই, জানালো সিআইডি
মাদক কারবারের মাধ্যমে সম্পদ গড়ার বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়ার কাছ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সিআইডি প্রধান বলেন, মাদক মামলার মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা ওই পরিবারের অবৈধভাবে অর্জিত ৬ দশমিক ৯ একর সম্পত্তি শনাক্ত করেছি, আরও সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন।
তিনি বলেন, বদির বিরুদ্ধেও যদি আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ পাই, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। যার বিরুদ্ধেই তথ্য প্রমাণ পাবো তাকেই ধরা হবে।
শুধু বদিই নয়, পর্যায়ক্রমে মাদকের সব গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসার মাধ্যমে যারা অবৈধভাবে সম্পদ ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে তাদের অবৈধ সম্পদ আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারি কোষাগারে চলে যাবে।
মন্দিরে সিঁদুর পরিয়ে নারীকে ধর্ষণ, অতঃপর....
স্বামী পরিত্যক্তা নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সখ্যতা গড়ে তোলেন যুবক অনুপ কুমার চাকীর (৩০)। এরপর ওই নারীকে মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পরিয়ে বিয়ের নাটক সাজিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন তিনি। তবে সংসার করতে চাইলে ওই নারীকে স্ত্রী বলে অস্বীকার করেন অনুপ। এরপর আদালতের মামলা হলে পলাতক ছিলেন তিনি। অবশেষে র্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) র্যাব-৩ এর অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর তেঁজগাও এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি অনুপ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাগুরা সদর উপজেলার অনুপ লম্পট প্রকৃতির ধুরন্ধর লোক। ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় তার। জানতে পারেন আট বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ওই নারীর বিচ্ছেদ হয়। এ সুযোগে নারীর বাড়িতে আসা যাওয়া করেন অনুপ।
শামীম বলেন, ঝিনাইদহে একটি মন্দিরে নিয়ে সিঁদুর পরিয়ে বিয়ের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেন ওই যুবক। সংসার করতে নারী অনুপের বাড়ি গেলে বিয়ের কথা অস্বীকার করেন তিনি। নারীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন তিনি।
তিনি বলেন, অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেন অনুপ। বিষয়টি জানাজানি হলে মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করে নারীর পরিবার। আদালতের নির্দেশে ২ ফেব্রুয়ারি মাগুরা সদর থানায় অনুপের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হয়।
সনদ বাণিজ্য / এবার গ্রেপ্তার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী
সনদ বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে এবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি সূত্র।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, কারিগরি বোর্ডের সনদ বাণিজ্য মামলার প্রধান আসামি এ টি এম শামসুজ্জামান এবং সহযোগী আসামি সানজিদা আক্তার ওরফে কলি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই জবানবন্দির ভিত্তিতে শেহেলা পারভীনকে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবিতে আনা হয়েছে।
এদিকে প্রাথমিকভাবে শেহেলার বিরুদ্ধে এ টি এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে টাকা-পয়সা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়েছে ডিবির একটি সূত্র।
এর আগে একই মামলায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান, সাবেক কর্মচারী ও বর্তমানে শামসুজ্জামানের সনদ তৈরির নিজস্ব কারখানায় নিয়োজিত কম্পিউটারম্যান ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।
গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জানান, গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একাধিক দল ১ এপ্রিল ভোররাত থেকে নজরদারিতে রেখে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিরপুরের দক্ষিণ ও মধ্য পীরেরবাগ এবং আগারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান এবং তার সহযোগী ফয়সাল হোসেনকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারের সময় কাছাকাছি দুটি বাসায় তাদের হেফাজত থেকে একাধিক কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে চুরি করে নেওয়া হাজার হাজার অরিজিনাল সার্টিফিকেট এবং মার্কশিটের ব্লাঙ্ক কপি, তৈরি করা শতাধিক সনদ এবং ট্রান্সক্রিপ্ট, বায়োডাটা ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ল্যাপটপ দিয়ে গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি আসল সনদ, মার্কশিট বানিয়ে ভুয়া লোকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান ডিসি মশিউর রহমান।
এছাড়া সরকারি ওয়েবসাইট, সরকারি পাসওয়ার্ড ও অথরাইজেশন ব্যবহার করে ভুয়া লোকদের কাছে বিক্রি করা সনদগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যেকোনো দেশে বসে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বরগুলোকে সার্চ করলে সার্টিফিকেটগুলো সঠিক বলে প্রমাণিত হবে।
ডিসি মশিউর রহমান জানান, একে এম শামসুজ্জামানের বাড়ি দিনাজপুরে। তিনি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে যোগদান করেছেন ২০০৯ সালে। বর্তমানে তার পদ সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার বিভিন্ন থানার আনাচে-কানাচে অবস্থিত কারিগরি বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখা করা হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন, রোল নম্বর, সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি, সেগুলোকে নির্দিষ্ট সার্ভারে আপলোড দেওয়া, ভেরিফিকেশন নিশ্চিত করা, কম্পিউটার সিস্টেম কোড সংরক্ষণ গোপনীয়তা বজায় রাখাসহ বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সকল প্রকার ডিজিটালাইজেশন এবং কম্পিউটারাইজেশন মূল দায়িত্ব তার কাঁধে।
সিস্টেম অ্যানালিস্ট হওয়ার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতি বছর কত হাজার পরীক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে, কতজন ফরম ফিলআপ করে রোল নম্বর পেয়েছে, কতজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি আবার কতজন কৃতকার্য ও অকৃতকার্য হয়েছে তার সব তথ্যই শামসুজ্জামানের কাছে থাকতো। এ বিশাল তথ্যভাণ্ডার, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কর্তৃপক্ষ, সিস্টেম কোড ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার সনদ ও মার্কশিট বাণিজ্য করেছেন শামসুজ্জামান এবং তার সহযোগীরা।
ডিবির এ কর্মকর্তা আরও জানান, ২০১৭ সালেও মার্কশিট ও সনদ বিক্রির অভিযোগে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী একে এম শামসুজ্জামানকে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের মাধ্যমে আবার চাকরিতে পুনর্বহাল হয়ে তিনি এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার সনদ-মার্কশিট বিক্রি করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
বেনজীরের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চান ব্যারিস্টার সুমন
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান দাবি করেছেন। এ সময় তিনি হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এ নিয়ে এক আবেদন জমা দেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে আবেদন করেছি। সবাইকে আল্লাহ বাঁচাইছে, ‘বেনজীর সাহেব বেশিদিন সময় পাননি। আর কিছুদিন সময় পেলে গোপালগঞ্জ কিনে নিতেন। পুলিশে যারা অসৎ হবেন বেনজীর সাহেবকে আদর্শ ধরে নেবেন।’
দুদক চেয়ারম্যান বরাবর করা আবেদনে বলা হয়, ৩৪ বছর পর ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর বেনজীর আহমেদ অবসরে যান। অবসরের পর বেনজীর আহমেদ চাকরিকালীন স্ত্রী ও মেয়ের নামে অনেক সম্পদ গড়েছেন। যা তার জ্ঞাত-আয়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
আবেদনে আরও বলা হয়, বেনজীর ও তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ এবং কন্যাসন্তান তাদের বৈধ আয়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে বেনজীর তার পদের অপব্যবহার করে উল্লিখিত সম্পত্তি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে অর্জন করেছেন। আবেদনে তিনি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, কন্যা ফারহিন রিশতা বিন্তে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের অবৈধ সম্পদ বিষয়ে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করছি।
পরে সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার সুমন বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসেছে। এটার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো ইনকোয়ারির ব্যবস্থা না দেখে আমি দুদকের দ্বারস্থ হয়েছি।
দুদক আমলে না নিলে হাইকোর্ট আছে মন্তব্য করে সুমন বলেন, সাবেক আইজিপির এতো সম্পদ দেখে সৎ পুলিশ অফিসার খুব বেশি ফ্রাস্ট্রেটেড হবেন। সৎ নাগরিকদের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এটা যদি সত্য হয়, যারা অসৎ আছে তারা প্রতিযোগিতায় নামবে, আমরা সবাই বেনজির হতে চাই। এর জন্য মনে হয়েছে এটা দেশের জন্য ভয়ানক বিষয়। এটা ইনকোয়ারি হওয়া দরকার।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করেন ২০ এপ্রিল। ভিডিওতে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এসবের দালিলিক প্রমাণ দিতে পারলে প্রমাণদাতাকে সেই সম্পদ বিনামূল্যে দিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।