• ঢাকা রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

প্রান্তিক গ্রাহক পর্যায়ে বাড়ছে না গ্যাসের দাম

আরটিভি নিউজ

  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৪৬
গ্যাস
সংগৃহীত

বরাবরের মতোই আরও একবার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্ট হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমের শিরোনামকে কেন্দ্র করে। কিন্তু দেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত বা সার উৎপাদন ও সিএনজির স্টেশনের জন্য ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে না।

শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। অর্থাৎ সরাসরি প্রান্তিক গ্রাহক পর্যায়ে বাড়ছে না গ্যাসের দাম।

বাংলাদেশে গ্যাস ব্যবহারকারী বা গ্রাহকদের মোট আট শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩৭%, শিল্পে ২৩%, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ১৮%, গৃহস্থালিতে ১০%, সার উৎপাদনে ৭%, সিএনজিতে ৪% এবং বাণিজ্যিক ও চা শিল্পে ১% গ্যাস ব্যবহৃত হয়। তবে যেই গ্রাহক শ্রেণীর কাছাই গ্যাস সরবরাহ করা হোক না কেনো, প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন, আমদানি এবং সরবরাহের মোট ব্যয়ের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের পার্থক্যের কারণে সরকারকে এ খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি প্রদান করতে হয়। এই গ্রাহক শ্রেণীগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুতে বাড়ানো হচ্ছে গ্যাসের মূল্য।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, দেশের স্থানীয় উৎপাদন গড়ে প্রায় ২ হাজার ৫১ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন ঘনফুট দৈনিক) ও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে কাতার ও ওমান থেকে বাৎসরিক ৫৬টি কার্গো ও স্পট হতে ২৫টিসহ মোট ৮১টি কার্গো হিসেবে আমদানিকৃত এলএনজি হতে গড়ে ৬৮৫ এমএমসিএফডি রিগ্যাসিফাইড এলএনজিসহ দৈনিক গড়ে ২ হাজার ৭৩৬ এমএমসিএফ (মিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আর্থিক ক্ষতি/ ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬ হাজার ৫৭০ কোটি টাকার বেশি।

কৃষি সেচ মৌসুমে, রমজান মাসে ও গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা থাকে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী চলতি বছরের এপ্রিল মাস হতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য গড়ে ১৩০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেখানে বর্তমানে গ্যাস ভিত্তিক গ্রিড-কানেক্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য গড়ে ৮৫০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

চলতি বছরে বিদ্যুৎ শ্রেণিতে এই বাড়তি গ্যাসের চাহিদা মেটাতে পেট্রোবাংলা দেশের অভ্যন্তরীণ গ্যাসের সরবরাহের পাশাপাশি স্পট মার্কেট হতে বর্ধিত সংখ্যক কার্গো আমদানি ও এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থানের জন্য অনুরোধ করেছে।

কৃষি সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান মাস ও গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় সরবরাহ চ্যানেল ঠিক রাখতে আগামী ১ এপ্রিল থেকে দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ এবং রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) এর সর্বোচ্চ রিগ্যাসিফিকেশন ক্ষমতা ব্যবহার করে দৈনিক ১০০০-১১০০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহ করতে হলেও এ বছর জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে অতিরিক্ত ১০টি স্পট কার্গো আমদানি করার প্রয়োজন হবে।

কিন্তু কেনো গ্যাসের প্রতি নির্ভরশীলতা? অন্যান্য জ্বালানির দিকে কেনো ঝুঁকছে না বিদ্যুৎ বিভাগ? এর মূল কারণ বিকল্প জ্বালানিগুলোর মূল্য আরও অনেক বেশি। গ্যাসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয় ডিজেল ও ফার্নেস ওয়েল। উভয়ের দাম গ্যাসের তুলনায় বেশি। এ ছাড়াও ফার্নেস ওয়েল ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাড়তি ডলার খরচ করতে হয়, যার অভাব বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই কমবেশি ভোগাচ্ছে। আর এ কারণেই অন্য জ্বালানির বদলে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতের অনুরোধ জানায় বিদ্যুৎ বিভাগ।

তবে গ্যাস ব্যবহারকারীদের পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি না হলেও অতিরিক্ত ভর্তুকি হ্রাসের জন্য এবং রাজস্বে চাপ কমাতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সার্বিক বিবেচনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের বিক্রয়মূল্য প্রতি ঘনমিটার ১৪.৭৫ টাকা (বৃদ্ধির হার ৫.৩৬%) এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা হতে ৩০.৭৫ টাকা (বৃদ্ধির হার ২.৫০%) নির্ধারণ করা হয়েছে। এই অতিরিক্ত মূল্যের কারণে প্রতি মাসে প্রায় ৮৬.২৫ কোটি টাকা আয় বাড়বে যেটি বাড়তি এলএনজি ক্রয়ে সহায়ক হবে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজধানীর যেসব এলাকায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না আজ
বিদ্যুৎ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না
শনিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
ভারতের পাটনায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ৬
X
Fresh