বাংলাদেশ আইএমওতে কাউন্সিল সদস্য হওয়ায় উদযাপন
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কাউন্সিলে ‘সি’ ক্যাটাগরির সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি উদযাপনের লক্ষ্যে রাজধানীর সোনারগাও হোটেলে আলোচনা অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল। নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোঃ মাকসুদ আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
আইএমও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশ সমমর্যাদার কিন্তু ভিন্ন ক্যাটাগরির এ, বি ও সি এর মধ্যে “সি” ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছে। গত বছরের ১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শিপিং সংক্রান্ত বিশেষায়িত এই এজেন্সির ৩৩তম অধিবেশনে আইএমও কনভেনশনের ১৬ ও ১৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনটি ক্যাটাগরিতে কাউন্সিল সদস্যপদে গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে ২০২৪-২০২৫ সালের জন্য ৪০ সদস্যের নতুন আইএমও কাউন্সিল সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়।
আন্তর্জাতিক শিপিং পরিষেবা প্রদানে সর্বাধিক আগ্রহী এমন ১০ টি দেশ ‘এ’ ক্যাটাগরিতে, আন্তর্জাতিক সমুদ্রবাহীত বাণিজ্যে সর্বাধিক আগ্রহী এমন ১০ টি দেশ ‘বি’ ক্যাটাগরিতে এবং ‘এ’ ও ‘বি’তে নির্বাচিত নয় অথচ যাদের সামুদ্রিক পরিবহন বা নেভিগেশনে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে এবং যাদের কাউন্সিলে নির্বাচন বিশ্বের সব প্রধান ভৌগলিক অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে এমন ২০ টি দেশকে “সি” ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত করা হয়।
এবারের “সি” ক্যাটাগরির কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনে মোট ২৫টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৬৮টি বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৮টি ভোট পেয়ে ১৬তম হয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে। “সি” ক্যাটাগরিতে জয়লাভ করা অন্য দেশগুলো হলো- সিঙ্গাপুর, মাল্টা, সৌদি আরব, তুরস্ক, মিসর, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, মালায়শিয়া,বাহামা, সাইপ্রাস, মরোক্কো, ডেনমার্ক, কাতার, কেনিয়া, পেরু , ফিনল্যান্ড এবং জ্যামাইকা।
আইএমও জাতিসংঘের শিপিং সংক্রান্ত সর্বোচ্চ বিশেষায়িত সংস্থা। এটি শিপিং সুরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং জাহাজ দ্বারা সামুদ্রিক ও বায়ুন্ডলীয় দূষণ প্রতিরোধের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করে। আইএমও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সহায়তা করে। বৈশ্বিক সামুদ্রিক শিল্প ও সরকারের সকল নিয়ন্ত্রক, আর্থিক, আইনগত ও কারিগরি সহযোগিতার সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ১৭৫টি সদস্য রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত একটি মর্যাদাপূর্ণ সংস্থা আইএমও, যার হেডকোয়ার্টার লন্ডনে অবস্থিত। নৌপরিবহন অধিদপ্তর বাংলাদেশের আইএমও এর ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে।
সভায় বক্তারা বলেন, এ বিজয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এক বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য এবং বৈশ্বিক মেরিটাইম সেক্টর ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাপক সমর্থনের একটি প্রমাণ। গত বছরের জুনে নিরাপদ জাহাজ পুনর্ব্যবহার সংক্রান্ত হংকং কনভেনশনে বাংলাদেশের অনুসমর্থন যা আন্তর্জাতিক মেরিটাইম মানদন্ড বজায় রাখতে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার প্রতিফলিত করেছে তা এই নির্বাচনে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। এই নির্বাচন মেরিটাইম সেক্টরকে সুগঠিত,সুশৃঙ্খল এবং শুসংগঠিত করবে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ পরিচালনা এবং জাহাজ পুনর্ব্যবহার সেক্টরের দক্ষতা বৃদ্ধি করে বৈশ্বিক খ্যাতি অর্জন করবে।
মন্তব্য করুন