সরকারি খরচে সাড়ে ৫ লাখ দরিদ্র-অসহায় মানুষকে আইনি সহায়তা

গেল ১০ বছরে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৬৬৮ জন দরিদ্র-অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা দিয়েছে সরকার। ২০০৯ সাল থেকে এই বছরের অক্টোবর পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে এ সহায়তা দেয়া হয়। এ সময়ে সংস্থাটি ৪৪ কোটি ৬২ লাখ ২৩ হাজার ৩৯৬ টাকা দরিদ্র-অসহায় মানুষকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দিতে পেরেছে।

সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রাপ্তিতে অসমর্থ জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে তাদেরকে আইনি সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন’ প্রণয়ন করে।

সংস্থাটি বিগত ১০ বছরে ৬৪টি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৬৬৪ জনকে, সুপ্রীমকোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ২১ হাজার ১৯৪ জনকে, জাতীয় হেল্প লাইন কলসেন্টারের ১৬ হাজার ৪৩০ নম্বরে ফোন কলের মাধ্যমে ৯৬ হাজার ৩৯৪ জনকে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলের মাধ্যমে ১৯ হাজার ৪১৬ জনকে আইনগত সহায়তা দিয়েছে।

একই সময়ে সংস্থাটি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪১টি লিগ্যাল এইড মামলা নিষ্পত্তি করেছে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমেও (এডিআর) ৩৩ হাজার ৩৭৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার জাতীয় হেল্প লাইন কলসেন্টার (১৬৪৩০) বর্তমানে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হয়েছে এবং জনগণকে আইনি পরামর্শ সেবা দেয়া হচ্ছে।

সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ২৪ ঘণ্টাই এ সেবা চালু রাখা হয়েছে। এছাড়া ‘ডিজিটাল লিগ্যাল এইড’ সেবা প্রদানের জন্য ২০১৮ সালের অক্টোবরে ‘বিডি লিগ্যাল এইড’ নামে একটি অ্যাপ চালু করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এতে দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে অ্যাপটির সাহায্যে ঘরে বসেই বিনা খরচে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন অসহায় ও অসচ্ছল বিচারপ্রার্থী জনগণ।

গুগল প্লেস্টোর থেকে বিডি লিগ্যাল এইড নামের এ্যাপ/অ্যাপ্লিকেশন স্মার্টফোনে ইনস্টলের পর সহজেই বাংলা বা ইংরেজি ভাষায় এটি ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপটি ওপেনের সঙ্গে সঙ্গে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাওয়ার হেল্প লাইন নম্বর ‘১৬৪৩০’ দেখা যাবে। এখান থেকে লিগ্যাল এইড অফিসে ফোন বা মেসেজ পাঠিয়ে আইনি সহায়তা চাওয়া ও পাওয়া যাবে। এরপর অ্যাপটির দ্বিতীয় অপশন থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা লিগ্যাল এইড অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাওয়া যাবে।

আদালতে মামলার আপডেট জানতে লিগ্যাল এইড অফিসে দায়ের করা অভিযোগ কিংবা মামলাটির নম্বর সার্চ করে এর সর্বশেষ তথ্য জানা যাবে অ্যাপটির তৃতীয় অপশনটি থেকে। চতুর্থ অপশনের সাহায্যে আবেদনপত্রের প্রয়োজনীয় ঘরগুলো পূরণ করে ঘরে বসেই আপনার অভিযোগ লিগ্যাল এইড অফিসে পাঠিয়ে দেয়া যাবে। এর পরবর্তী অপশনেই থাকছে জাতীয় লিগ্যাল এইড, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট, দেশের বিচার বিভাগীয় পোর্টাল এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট। এখান থেকে ক্লিক করে ওই সব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাবে।

ষষ্ঠ অপশনটি কানেক্টেড রয়েছে লিগ্যাল এইডের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে। অ্যাপটির সর্বশেষ অপশনের সঙ্গে লিগ্যাল এইডের ফেসবুক পেইজ কানেক্টেড রাখা হয়েছে। এতে অ্যাপটির মাধ্যমে যে কেউ সরাসরি লিগ্যাল এইডের ফেইসবুক পেইজে গিয়ে সেখান থেকে মেসেজ অপশনে যেতে পারবেন এবং অভিযোগ জানাতে পারবেন। সূত্র: বাসস।

এসএস