• ঢাকা শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মাশরাফি ভাই আমার গ্লাভস কেটে দেন: তামিম

স্পোর্টস ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:৪৮

এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন ৪টি বল, রান করেছেন ২। কিন্তু তাতেই ক্রিকেট বিশ্বে মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন তামিম ইকবাল। ক্রিকেট যে ব্যাট-বলের খেলা থেকে অনেক বেশি কিছু সেটিই দুবাইয়ের মাঠে দেখিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের এই ওপেনার।

ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই লঙ্কান পেসার লাকমলের বল পুল করতে গিয়ে কব্জিতে চোট পান তামিম। তখনকার মতো ক্রিজ ছাড়তে বাধ্য হন। তার আগেই মাত্র ১ রানে দলের দুই উইকেট পড়ে যায়। তামিম যখন মাঠ ছাড়ছেন ড্রেসিংরুমের বারান্দায় গোটা বাংলাদেশ দলকে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। স্টেডিয়াম থেকেই ২৯ বছর বয়সী তারকাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায় তার কব্জির হাড় ভেঙেই গেছে।

ম্যাচ তখন ধীরে ধীরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যস্ত মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন। এসময় খবর আসে পুরো টুর্নামেন্টে থেকেই ছিটকে গেছেন তামিম। হাতে তখনকার মতো ব্যান্ডেজ বেঁধে ড্রেসিং রুমে ফিরে এসেছিলেন এই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান।

বাংলাদেশের ইনিংসের ৪৬.৫ ওভারে নবম উইকেটের পতন। অপরাজিত রয়েছেন মুশফিক। তখন দলের সংগ্রহ ২২৯ রান। ভাঙা হাত নিয়ে মাঠে নামতে পারবেন না তামিম! তাই ওখানেই ইনিংসের সমাপ্তি ধরে নিয়েছিলেন সবাই। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে মাঠে নামলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান করা এই ব্যাটসম্যান।
-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : অপেক্ষা শেষ হলো রোনালদোর
-------------------------------------------------------

একহাতেই ব্যাট নিয়ে ক্রিজে দাঁড়িয়ে গেলেন। এমনকি ক্রিজে থাকা ব্যাটসম্যান মুশফিকও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। ৪৬তম ওভারের শেষ বলটি তামিম একহাতেই ঠেকিয়ে দেন।

দলের স্বার্থে তার এই আত্মত্যাগকে যোগ্য সম্মান জানান মুশি। শেষ তিন ওভার তিনি একদিকে তামিমকে আড়াল করেছেন, অন্যদিকে লঙ্কান বোলারদের শাসনও করেছে। ওই তিন ওভারে আরও ৩২ রান যোগ করেন। ২২৯ থেকে বাংলাদেশের রান পৌঁছায় ২৬১তে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি বিশাল ব্যবধানে জিতে নেয় টাইগাররা।

নায়কোচিত এই ঘটনার পর প্রথমবারের মতো কথা বলেছেন তামিম। ইএসপিএনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, আবেগের বশেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

বাম-হাতি এই ব্যাটসম্যান বলেন, এই এশিয়া কাপ নিয়ে আমার অনেক উচ্চাশা ছিল এবং আমি ওই মুহূর্তে আবেগের বশেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যদি আমি এক বল খেললে দল আরও ৫-১০ রান করতে পারে এবং সেটা দলের উপকারে আসে, তাহলে কেন নয়? কেউ হয়তো আশা করেনি যে আমি ১ বল খেললে অপর প্রান্ত থেকে ৩২ রান আসবে। মুশফিক অসাধারণভাবে শেষ দিকটা সামলেছে।

২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশের হয়ে ১৮৩ ম্যাচ খেলা এই ব্যাটসম্যান বলেন, আমার মনে হয় না আমার জীবনে এমন অভিজ্ঞতা আগে হয়েছে। এখন আমি সবার প্রতিক্রিয়া দেখছি, কিন্তু আমি যখন ব্যাট করতে নামছিলাম এসব কোন কিছুই তখন আমার মাথায় ছিল না। আমি শুধু আমার দল এবং দেশের কথা ভেবেই মাঠে নেমেছিলাম।

জাতীয় দলের জার্সিতে ওয়ানডে ৬ হাজারের বেশি রান করা এই ওপেনার আরও বলেন, এখন মনে হচ্ছে খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল কাজটা। আঘাতপ্রাপ্ত হাতটা আমার পেছনে ছিল, যদি খেয়াল করে থাকেন শট খেলার সময় হাত সামনে চলে এসেছিল আর বলটি মিস করলেই আমার ওই হাতেই আবার লাগতো।

তামিম বলেন, ড্রেসিং রুমে মাশরাফি ভাই প্রথমে ব্যাটিং করার বিষয়ে কথা তুলেছিলেন। ভেবেছিলাম তিনি মজা করছেন। পরে আমি নিজেই সিদ্ধান্ত নেই। রুবেল ক্রিজে থাকাকালীন প্যাড পরা শুরু করি। মাশরাফি ভাই আমার গ্লাভস কেটে দেন। জীবনের প্রথম কেউ (মুমিনুল) আমাকে গার্ড পরিয়ে দেয়। সবাই আমাকে সাহস দিচ্ছিলেন।

মাঠে নামার সময় দর্শকদের প্রতিটি চিৎকার আমাকে সাহস যোগাচ্ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি হয়তো আউট হয়ে যেতে পারতাম বা যেকোনো কিছুই হতে পারতো, তবে ওই মুহূর্তে আমি দল এবং দেশের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম।

আরও পড়ুন :

ওয়াই/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এশিয়া কাপ আয়োজন করতে পারবে না ভারত-পাকিস্তান!
৪৫৫ রানের লিডে দিন শেষ করল শ্রীলঙ্কা
ভালো শুরুর পর ফিরলেন জয়
ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, হাসানের অভিষেক
X
Fresh