পুলিশ মায়ের কুচকাওয়াজে পা মিলালো শিশু, ভিডিও ভাইরাল
মাঠে নারী পুলিশের প্রশিক্ষণ চলছিল। সেখানে এক নারী পুলিশের সঙ্গে তার শিশু সন্তানও আসে। কিন্তু বাহিনীর সদস্যরা যখন কুচকাওয়াজের ছন্দে আগ-পিছ করছিলেন তখন মাঠের এক পাশে থাকা শিশুটি দ্রুত দৌড়ে এসে তাদের অনুকরণ করতে থাকে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) মাত্র ২১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি ফেইসবুকে পোস্ট করেছেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পিবিআই-এর এসপি রহমান শেলী।
ক্যাপশনে শেলী লেখেন, মা এসেছেন প্রশিক্ষণে। আমি মাকে দেখতে এসেছি। মায়ের সঙ্গে এট্টুখানি আমিও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করি। মা অনেক কঠিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। মা দেশ ও দশের কল্যাণের জন্য তৈরি হচ্ছেন। আই লাভ মা। আই লাভ বাংলাদেশ পুলিশ।
অবশ্য ভিডিওটি কোথায় বা কখন ধারণ করা হয়েছে- এর কিছুই উল্লেখ করেনি এ পুলিশ কর্মকর্তা।
আরএ/টিআই
মন্তব্য করুন
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করতে সাবেক আইজিপির ফেসবুকে পোস্ট
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করার কথা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজের ভেরিফাইড পেজ থেকে এ তথ্য জানান সাবেক এই পুলিশ প্রধান।
সেখানে তিনি লিখেছেন- প্রিয় সুহৃদ বৃন্দ, আগামীকাল ২০ এপ্রিল, শনিবার সকাল ১১:৩০ টায় এই পেজ এ কিছু তথ্য শেয়ার করবো ইনশাল্লাহ। ব্যস্ত না থাকলে আপনাকে/আপনাদেরকে পাবো প্রত্যাশা থাকছে। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও প্রত্যেকের জন্য শুভ কামনা।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের একজন সাবেক কর্মকর্তা যিনি পুলিশের ৩০তম মহাপরিদর্শক ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপূর্বে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আত্মপক্ষ সমর্থনে যা জানালেন বেনজীর আহমেদ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসে নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদকে অসত্য বলে দাবি করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে এক ভিডিও বার্তায় নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে এ দাবি করেন তিনি।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আমার পরিবার ও আমার নামে অসত্য প্রকাশিত হয়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যাচার।
সবাইকে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, আপনারা জানেন যে আমি প্রায় দুই বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এই অবসরকালীন সময়ে আমি নিরিবিলি জীবন কাটাচ্ছি। চাকরিকালীন সময় বিগত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক অবিরত এবং ক্রমাগত অপপ্রচার এবং ব্যক্তিগত চরিত্রহননের অপচেষ্টার শিকার হয়েছি।
তিনি জানান, সম্প্রতি পত্রিকায় আমি এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কিছু খুবই আপত্তিজনক, মানহানিকর, অসত্য এবং বিকৃত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই সংবাদের সূত্র ধরে অন্যান্য কতিপয় আউটলেট একই রকমের সংবাদ পুনরাবৃত্তি ক্রমে পরিবেশন করেছে। তবে দেশের মূলধারার প্রিন্ট এবং মিডিয়া এই অসত্য, মানহানিকর এবং বিকৃত সংবাদ পরিবেশনে কোন আগ্রহ দেখায়নি। এজন্য মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি আমি এবং আমার পরিবারের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
সাবেক আইজিপি বলেন, আমার অবসর গ্রহণের প্রায় দুই বছর পরে আকস্মিকভাবে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে এই ধরণের একটি সংবাদ কেন পরিবেশন হল আমি সচেতন ভাবেই সেই আলোচনায় যাব না। তবে এর কারণ রাজধানীর সব সাংবাদিক ও সচেতন মহলের মুখে মুখে।
এরপর তিনি নিজের বিভিন্ন অর্জনের কথা জানিয়ে বলেন, যেহেতু আমি পাবলিকের টাকায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছি, প্রায় ৩৫ বছর রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কর্তব্য পালন করেছি, সেহেতু ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার অবস্থান থেকে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে সত্য তুলে ধরার তাগিদ অনুভব করেছি। সেই সঙ্গে এই সংবাদের কারণে যারা ব্যথিত হয়েছেন তাদের প্রতি সম্মান রেখে প্রকৃত সত্য ও তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে তাদেরকে আশ্বস্ত এবং তাদের বিশ্বাসের জায়গাটা সুদৃঢ় করতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা প্রকাশিত দুই কিস্তির সংবাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছি। এতে সব মিলিয়ে ৪৫টি তথ্য, অভিযোগ এবং অপমানজনক বক্তব্য রয়েছে। তার মধ্যে ২৪টি তথ্য বা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কল্পনাপ্রসূত। দুইটি বিষয়কে সাত বার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে এবং দুইটি তথ্যকে ভুল প্রেক্ষাপটে বিকৃতভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। বাকি দশটি তথ্যকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে, শুধু তিলকে তাল নয়, তালগাছের ঝাড় সমেত বানয়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজের ভেরিফাইড পেজ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানোর ঘোষণা দেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান।
ফেসবুকে হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মাকে খুঁজছে মেয়ে, ফারাজ করিমের পোস্ট
ফেসবুকে হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মাকে খুঁজে পেতে মেয়ের আবেদন সাড়া ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মা মোসা. রোকেয়া খাতুন রুমিকে খুঁজে পেতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন মেয়ে ফাবিহা জাহারা প্রিয়মি। প্রিয়মির করা সেই পোস্টে, এখন তার মাকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন অনেকেই।
এই মানবিক আবেদনটি আলোচিত তরুণ রাজনীতিবিদ ফারাজ করিম চৌধুরীর চোখে পড়লে, তিনিও আলাদাভাবে পোস্ট করেন। যা এরইমধ্যে শেয়ার করা হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি।
প্রিয়মি গণমাধ্যমকে জানান, তার মা পঞ্চাশোর্ধ মোসা. রোকেয়া খাতুন (রুমি) ঈদের পরদিন, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এসময় তার পড়নে ছিল কমলা রঙের থ্রিপিস। রোকেয়া খাতুন স্মৃতিশক্তিতে ও শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন। তাই পরিবারের আশংকা তিনি পথিমধ্যে হারিয়ে গেছেন।
প্রিয়মি আরও বলেন, এ ব্যাপারে নিউমার্কেট থানায় শনিবার (১৩ এপ্রিল) একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডি নং- ৫৯৩। পরবর্তীতে ফোন ট্র্যাকিং করার চেষ্টা করে পুলিশ। তিনি জানান, তার মার মোবাইল ফোনটি ঈদের আগেই হারিয়ে গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুজিত কুমার সরকার। তিনি বলেন, এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চলমান রয়েছে।
প্রিয়মির দাবি, পুলিশ রাজধানীর কিছু পয়েন্টের সিসি ক্যামেরা চেক করলে মাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। ফারাজ করিমসহ অন্য সবাই শুধুই মানবিক দিক থেকে পোস্টটি শেয়ার করে মাকে খুঁজতে চেষ্টা করছেন।
আমেরিকার পর ইউরোপেও চাপের মুখে টিকটক
মার্কিন কংগ্রেস চীনা মালিকানার অ্যাপ টিকটকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ প্রস্তুত করছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নও অ্যাপের লাইট সংস্করণের কারণে কম বয়সীদের ক্ষতির আশঙ্কায় কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে৷
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে টিকটকের রমরমা উপেক্ষা করা সম্ভব নয়৷ চীনা মালিকানার এই অ্যাপ অসংখ্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরের আয়ের উৎসও বটে৷ কিন্তু ভারতের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে সেই অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে৷ কয়েক মাসের জটিলতার পর গত শনিবার মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষ যখন ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদন করলো, সেই ঘটনা সংবাদ শিরোনাম দখল করেছিল৷ একই অধিবেশনে মার্কিন সংসদ টিকটকের চীনা মালিক বাইটডান্স কোম্পানিকে সতর্ক করে দিয়েছে৷ এক বছরের মধ্যে সেই কোম্পানি টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর না করলে জাতীয় স্তরে সেটি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে সংসদের নিম্ন কক্ষ৷ উচ্চ কক্ষেও বিলটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে৷
অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও টিকটকের প্রশ্নে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের মধ্যে যথেষ্ট ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে৷ টিকটকের মাধ্যমে চীনের সরকার আমেরিকায় ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উপর অন্যায় প্রভাব খাটাতে পারে বলে মার্কিন রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন৷ ফলে জাতীয় স্বার্থে এই প্রশ্নে কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে৷
এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও টিকটকের প্রশ্নে আরো কড়া অবস্থান নিচ্ছে৷ ইউরোপেও চীনের অযাচিত প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা কাজ করছে৷ আপাতত টিকটক লাইট রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম বাতিল করার পথে এগোতে পারে এই রাষ্ট্রজোট৷ শিশু-কিশোরদের নেশার আশঙ্কা দূর করতে কোম্পানি যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিলে বৃহস্পতিবারই সেই কর্মসূচি বন্ধ করা হতে পারে৷ ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট নামের আইনকে হাতিয়ার করে ইইউ ক্ষতিকর ও বেআইনি কনটেন্ট মোকাবিলার চেষ্টা করছে৷
টিকটক অবশ্য ইইউ-র হুমকি সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১৮ বছরের কমবয়সীদের জন্য রিওয়ার্ডস হাবের দ্বার বন্ধ রাখা হয়েছে৷ ফলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ থাকার কথা নয়৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে টিকটকের বিরুদ্ধে অন্য একটি তদন্ত শুরু হয়েছে৷ আমেরিকা ও ইউরোপে টিকটক ব্যবহারকারীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মত প্রকাশের অধিকারের দোহাই দিয়ে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে৷
চীনের কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও টিকটক একই কারণে সংশয় প্রকাশ করছে৷ অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের অনেক রাজনৈতিক নেতা ও দল প্রচারের স্বার্থে টিকটক ব্যবহারও করছে৷ এখনই পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার পথে না গেলেও ইইউ টিকটকের উপর চাপ বজায় রাখছে৷ এমন পরিস্থিতিতে টিকটক আমেরিকা ও ইউরোপের বাজার ধরে রাখতে অদূর ভবিষ্যতে সত্যি মালিকানা হস্তান্তর করবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷
স্ত্রী-সন্তানের চেয়ে আসিমের কাছে দেশটাই ছিল বড়
মুক্তিযুদ্ধের সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেমন দেশের জন্য হাসতে হাসতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিয়েছেন। নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে মানুষের মাঝে দেশপ্রেমকে তুমুলভাবে জাগিয়ে তুলেছেন। তাদেরেই একজন চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের পাইলট বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ।
নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনমানুষকে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দেশের আপামর জনতা। শুক্রবার (১০ মে) শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যে চতুর্থ ম্যাচ শুরুর আগে জাওয়াদের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। তার বীরত্ব দেশের মানুষের মনে নাড়া দিয়েছে। প্রশাংসায় ভাসছেন অমর এই বীর সন্তান। আমৃত্যু রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে সবাইকে কাঁদালেন তিনি।
স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদকে নিয়ে নেট দুনিয়ায় অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, এমন বীরের মৃত্যু নেই। কালে কালে ক্ষণে ক্ষণে আবারও ফিরে আসবেন তারা। নিজের স্ত্রী-সন্তানের চেয়ে দেশকে আর দেশের মানুষকে বড় করে দেখেছেন তিনি। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও দেশের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিমানকে নিয়ে গেছেন জনশূন্য এলাকায়। অনেকেই তাকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে তুলনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। দোয়া করেছেন এই বীরের জন্য।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে উড্ডয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ‘ওয়াইএকে ১৩০’ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান উড্ডয়নকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় বিমানটির পেছন দিকে আগুন লেগে যায়। বিমানে থাকা দুজন পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে যান। পরে বিমানটি চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে কর্ণফুলী নদীতে আছড়ে পড়ে। বিমানের পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে এলে তাদের উদ্ধার করে বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসিম জাওয়াদ নামে একজন পাইলটের মৃত্যু হয়। উইং কমান্ডার সুহান জহুরুল হকের অবস্থা মোটামুটি ভালো। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে প্রশিক্ষণ বিমানটিতে আগুন লাগার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আকাশে উড্ডয়নরত থাকা অবস্থায় প্রশিক্ষণ বিমানটিতে আগুন লেগে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এরপরপরই আগুন লেগে যেতে দেখা যায় বিমানটিতে। তখনই পাইলটরা প্যারাসুটে ঝুলে কর্ণফুলী নদীতে পড়েন।
হাফিজুর রহমান ফেসবুকে লেখেন, আসিম জাওয়াদ অনেকগুলো জীবন বাঁচিয়ে প্রমাণ করেছেন, বীরশ্রেষ্ট মতিউররা এখনও এদেশে জন্মায়।
ফাহিম রহমান নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, বীরদের কখনও মৃত্যু হয় না। লাখো শহীদের এ মাটিতে বীরেরা বার বার জন্মায়। কখনও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান হয়ে আবার কখনও বা স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ হয়ে।
আরেকজন স্ট্যাটাসে বলেন, বাঁচার সুযোগ থাকলেও জীবন উৎসর্গ করেন পাইলট আসিম জাওয়াদ। নিজে মরে গিয়ে বাঁচিয়ে গেলেন অনেককে।
১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডা. মো. আমান উল্লাহ এবং মাতার নাম নীলুফা আক্তার খানম।
তিনি ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ (বিইউপি) থেকে বিএসসি (অ্যারো) পাস করেন।
স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। চাকরিকালে তিনি বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি পেশাদারী দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি’ ও বিমানবাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এ ছাড়াও ভারতীয় বিমানবাহিনী কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ 'Chief of Air Staff's Trophy for Best in Flying (Indian Air Force)' অর্জন করেন।
চাকরিকালে তিনি দেশে-বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে তা সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ থেকে এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর্স পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এ ছাড়াও তিনি চীন থেকে ফাইটার পাইলটস ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স, ভারত থেকে অপারেশনাল ট্রেনিং ইন এভিয়েশন মেডিসিন ফর ফাইটার পাইলটস কোর্স, বেসিক এয়ার স্টাফ কোর্স ও কোয়ালিফাইড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর্স কোর্স সম্পন্ন করেন।
জানা গেছে, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক নিলুফা আক্তার খানম ও চিকিৎসক আমানুল্লাহর একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ রিফাত। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা।
নিহত জাওয়াদের বড় মামা সুরুজ খান জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছিল জাওয়াদ। স্কুল ও কলেজজীবনে সব সময় প্রথম হয়েছে। ছোটবেলা থেকে জাওয়াদের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয়ে পাইলটও হয়েছিল। কিন্তু সেটি ছিল মাত্র অল্প সময়ের জন্য। পরিবারের মাথায় বাজ নেমে পড়েছে জাওয়াদকে হারিয়ে।’ আগামীকাল শুক্রবার জাওয়াদের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের ফুচকা খেয়ে যা বললেন লু
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। ঢাকায় এসে ফুচকায় মেতেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে সেলিব্রিটি শেফ রহিমা সুলতানার ফুচকা ও ঝালমুড়ির স্বাদ নিয়েছেন ডোনাল্ড লু।
এদিন রাতে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ডোনাল্ড লু ফুচকা ও ঝালমুড়ির স্বাদ নিচ্ছেন। এ সময় তার পাশে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
ফুচকা ডোনাল্ড লু ও রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এক সঙ্গে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ফুচকা ইজ দ্য বেস্ট।’
এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করেন তিনি। বিমান বন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তরে আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক মাসুদুল আলম এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সফরের প্রথম দিন দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
সফরের দ্বিতীয় দিন বুধবার লু প্রথমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে ও পরে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন। পরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে এটি তার প্রথম সফর। এ নিয়ে পঞ্চমবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু।