• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বিএনপি-জামায়াত না আসলেও যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তা যেভাবে প্রমাণিত
উপমহাদেশের উপকূল ঘেঁসে উর্বর ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এক সোনার দেশ আমাদের বাংলাদেশ। আয়তনে নগণ্য হলেও গুরুত্বে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নানান দেশের কাছে নানাভাবে প্রয়োজন এই দেশ।  রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, বাণিজ্য, ভ্রমণসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে আলোচনার কেন্দ্রে থাকে বাংলাদেশ। ১৬ শতকের পর্তুগিজ আগমনের সময় থেকে শুরু করে ব্রিটিশ শাসন, দেশভাগ, পাকিস্তান শাসনামল সব সময়ই আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে বর্তমান বাংলাদেশের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য।  ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহিদ, ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম, বুদ্ধিজীবীসহ নানাবিধ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।  ছোট্ট এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন সমাজ ও সংস্কৃতির মানুষের অবস্থানের কারণেই দেখা দেই বিভিন্ন ধরণের মতানৈক্য, ফলাফল একাধিক রাজনৈতিক আদর্শ। একারণে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা শিরোনামে বিভিন্ন দেশ ও পত্র-পত্রিকার আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয় এই বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান মুখ্য আলোচ্য ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।  এ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থ ও সর্বমোট পঞ্চমবারের মত সরকার গঠন করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মূলত স্বাধীন দেশে নির্বাচন ও সরকার গঠন একটি নিয়মিত ও স্বাভাবিক ঘটনা। সেটিই ঘটেছে গত ৭ জানুয়ারি।  যেখানে অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।  অর্থাৎ একাধিক দলের অংশগ্রহণ যা ছিল সাংবিধানিকভাবে একটি গণতান্ত্রিক দেশের মূল নির্বাচনী প্রক্রিয়া। কিন্তু নির্বাচন একপাক্ষিক, নির্বাচন স্বচ্ছ হয় নাই এধরণের বক্তব্য উঠে আসছে দেশের ও বাইরের বিভিন্ন মহল থেকে। আমার মতে নির্বাচনের মত কর্মযজ্ঞের জন্য এধরণের বক্তব্যও স্বাভাবিক।  তবে নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করত বা জয়লাভ করত তাহলে আর এধরণের বক্তব্য আসত না। আসলে এধরণের বক্তব্য মিশে আছে দুইটা দলের আদর্শের মাঝেই। যেখানে আওয়ামী লীগ মনে করে এই দেশটা এদেশের জনগণের আর বিএনপি মনে করে দেশটা তাদের দলের।  মজার ব্যাপার হচ্ছে বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য বর্তমানে নিজের দেশের জনগণ তথা নির্বাচনে অংশগ্রহণকে নয় বরং বিদেশি সাহায্যের উপরই বেশি ভর করতে চাই। যে কারণেই দলটি আজ জনতা বর্জিত। এজন্যই জনসাধারণের সংস্পর্শে নেই এমন একটি দল নির্বাচনে আসলো বা না আসলো তার জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচকে অস্বচ্ছতার তকমা দেয়া সমীচীন নয়।  যদি গণতন্ত্রের কথায় বলতে হয় তাহলে গণতন্ত্র সম্পর্কিত আব্রাহাম লিংকনের কথা স্মরণ করেই বলতে চাই, এদেশ জনগণের। সেকথা মেনেই আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং বিপুল ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে।  আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে গত ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিভিন্ন খাত গুলো পর্যালোচনা করে দেখা যাক। মাথাপিছু আয়, দারিদ্র্য, প্রবৃদ্ধির হার, রপ্তানি, জিডিপির আকার, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ, এডিপি, শস্য উৎপাদনসহ অন্যান্য সকল খাতেই পূর্বের তুলনায় ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে যে যুগান্তকারী অর্জন; যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সমুদ্র বিজয়, ছিটমহল বিনিময়, স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন সংযুক্ত,সাবমেরিন ক্যাবল, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিভিন্ন ফ্লাইওভার, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অন্যান্য সফলতা তা দেশের এবং বহির্বিশ্বের ষড়যন্ত্রকারীদের কপালে ভাঁজ তৈরি করেছে।  কারণ এসকল উন্নয়ন বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে যেমন করেছে সম্মানিত তেমন আওয়ামী লীগকেও নিজস্ব রাজনীতিতে আসীন করেছে সফলতার শিখরে। যারই ফলাফল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২৩ আসন নিয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ।  তারপরেও শকুনের চোখ ও সমালোচনা এদেশে বিশেষ করে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমর্থকদের জন্য ঐতিহাসিক অর্জন। অর্জন কেন বললাম? না হলে, যে দেশের নামকরণ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান,ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে মহানায়ক থেকে এদেশ স্বাধীন করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। সে শেখ মুজিবকে কিভাবে এদেশের মানুষের হাতেই হত্যা হতে হয়?  সুতরাং সমালোচনাতে কান দিয়ে নয় বরং দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নির্বাচন হতে হবে নিয়মিত এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিই পাক বিজিত আসন।  লেখক : প্রভাষক, শিক্ষা প্রশাসন বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়