• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
সব কেড়ে নিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয় ছিনতাইকারীরা
ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বজনকে দেখতে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজারে এসে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন কৃষক আলম মিয়া। কিছুক্ষণ পর ময়মনসিংহ থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস আসলে কয়েকজন যাত্রীকে বাসে দেখে তিনিও ওই বাসে ওঠে বসেন। বাসটি জৈনাবাজার ছেড়ে কিছু দূর যাওয়ার পর বাসে থাকা কয়েকজন যাত্রীবেশি ছিনতাইকারী তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে তার কাছে থাকা নগদ টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় বাসে থাকা ছিনতাইকারীরা। সম্প্রতি রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ছিনতাইকারীরা এ কৃষকের কাছ থেকে সব কেড়ে নেয়। ঘটনার শিকার আলম মিয়া শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা গ্রামের মৃত আলফাজ উদ্দিনের ছেলে। ওই দিন ভোর সাড়ে ৪টা থেকে পৌনে ৫টার মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মধ্যরাতে বা ভোরের আলো ফোটার আগে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পথচারী ও বাসযাত্রীদের আতঙ্ক হলো এসব যাত্রীবেশি ছিনতাইকারী। প্রায়ই ভোররাতে খালি বাস নিয়ে ছিনতাই করেন তারা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোনো স্থান থেকে যাত্রীকে বাসে তুলে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে নগদ টাকাসহ মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ভোর সাড়ে ৫টা। মুদি ও মুনিহারী ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া (৫৫) দোকানের মালামাল কেনার জন্য জৈনাবাজার থেকে গাজীপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ থেকে আসা একটি অজ্ঞাত যাত্রীবাহী বাসে উঠেন। ওই বাসে ৪-৫ জন যাত্রী ছিলেন। বাসটি মাওনা চৌরস্তা উড়াল সেতুর ওপর উঠার সঙ্গে সঙ্গে বাসে বসে থাকা ওই ৪-৫ জন যাত্রী বাসের দরজা বন্ধ করে তার মুখ বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে সিটের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। এ সময় তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়। হামলাকারীরা তার জ্যাকেটের বুক পকেটে থাকা মালামাল কেনার জন্য নগদ ৫০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেন। পরে তাকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর পৌরসভার ২নং সিএন্ডবি বাজারের ১০০ গজ সামনে নিয়ে বাস থেকে ফেলে দিয়ে বাসটি দ্রুতগতিতে চলে যায়। ফেলে দেওয়ার আগে এ ঘটনা কারো সঙ্গে শেয়ার করলে তাকে খুন করে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় ওই ছিনতাইকারীরা। ভুক্তভোগী সিরাজ মিয়া গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের জন্দর আলীর ছেলে। তিনি জৈনাবাজার আমিন সুপার মার্কেটের মুদি ও মনোহারি ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে ওইদিন রাতে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ৪-৫ জন একসঙ্গে গাড়িতে থেকে বাসে একা যাত্রী পেলে এভাবে ছিনতাই করে এই ছিনতাইকারী চক্রটি। এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার পণ্ডিক জানান, আমার নিজের এক আত্মীয়ও এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ছিনতাইয়ের বিষয়গুলো লোকাল (শ্রীপুর) থানা পুলিশ দেখবে। আমরা হাইওয়ে থানা পুলিশ এগুলো দেখি না। তিনি ভুক্তভোগীদের শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য এ প্রতিনিধিকে পরামর্শ দেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩১

একুশ বলে দেয় বর্ণমালার কথা
অ, আ, ক, খ, গ, ঘ, ঙ, চ, ছ, প, ত, এ, ভ, ম শ- এই অক্ষরগুলোই আমাদের প্রাণ, জয়ের গান, বিশ্ব দরবারে পরিচয় করে দিতে যার ভূমিকা অপরিসীম। মায়ের ভাষা কথাটির পেছনে অনেক রক্তঝরা শহীদের স্মৃতি বিজড়িত। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় সফিক, সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারদের মতো বাঙালির রক্তের বিনিময়ে আজ এ দিনটিকে আরও বেশি স্মরণীয় করে রেখেছে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র। যেমনটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার মানুষও আজকের এই দিনে সম্মান জানাবে আমাদের এই ভাষা শহীদদের প্রতি। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছিল ব্রিটিশ শাসন শোষণের পর। আজ আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলার মাটিতে এই মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করেছি সেই রক্তঝরা শহীদদের আন্দোলনের মাধ্যমে। পাকিস্তানি জান্তারা বরাবরই বাংলার মেধাবীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল মেধাশূন্য করে উর্দু ভাষাকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু তা কী করে সম্ভব; বাংলা মায়ের সন্তানরা এতটা দেশপ্রেমী যেখানে যে কোনো পরাশক্তিকে প্রতিহত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি কালজয়ী সাক্ষী হয়ে আছে আজকের এই বাংলাদেশ। যেই দেশটিতে আজ সবাই মুক্ত মনে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছে।  এই বাংলা সংস্কৃতির ছোঁয়ায় আজ আমরা অনেক কিছুতে বিশ্ব দরবারে জানান দিতে পারছি মেধা বিকাশের মাধ্যমে। যেখানে আজ পৃথিবীর মানচিত্রে সিয়েরালিওন নামক রাষ্ট্রটি পর্যন্ত আজ আমাদের মায়ের ভাষাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ ঐতিহাসিক গানটি পরিবেশন করে। ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা কিংবা পর্যালোচনার ইতিহাস সবারই জানা। তারপরও এই মাতৃভাষার ঐতিহাসিক পটভূমিকে স্মরণ করে রাখতে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পুনরায় প্রকাশ করতে হলো এই প্রজন্মের কাছে। কারণ নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি দেশপ্রেমী চিন্তা চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে ইতিহাসকে স্মরণ করে। উৎখাত করতে হবে ১৯৫২, ১৯৭১’র সেই পাকিস্তানি অপশক্তিকে, যারা এখনো এই দেশের বিরুদ্ধে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ব্যক্তি স্বার্থের দোহাই দিয়ে সক্রিয় রয়েছে প্রগতিশীল ও সুষ্ঠু ধারার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে। তাই প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি সজাগ থাকবে অপশক্তিকে প্রতিরোধ ও পরিহার করে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য এই স্মরণীয় দিনটিকে মনে রেখে। বাংলাদেশকে সঠিক গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির পথে পৌঁছে দিতে এবং সরকারের পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারও সৃষ্টি করতে হবে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক সফলতার পটভূমি। ভাষার লড়াইয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যালোচনা:- ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে। পূর্ব বাংলায় মুসলমানরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক দিয়ে। তাই পূর্ব বাংলাকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে ওই দেশের কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশের শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি ধ্বংস করার চেষ্টা চালায়- যার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্টি হয় ভাষা আন্দোলন।  পাকিস্তানের নব্য উপনিবেশবাদী, ক্ষমতালোভী, ঔদ্ধত্য শাসকরা শুরু থেকেই পূর্ব বাংলার মানুষের ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালাতে থাকে। তাদের প্রথম টার্গেট ছিল কিভাবে কেড়ে নেবে এই বাংলা মায়ের মুখের ভাষা। পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পূর্ববঙ্গ থেকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান। প্রখ্যাত লেখক ড. আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়ার ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন’ নামক বইয়ের ১৭০ পৃষ্ঠায় স্পষ্টভাবে বিভিন্ন ভাষাভাষির আনুপাতিক হার পরিলক্ষিত হয়। যেখানে বাংলাভাষার আনুপাতিক হার ছিল ৫৪.৬ শতাংশ, পাঞ্জাবি- ২৭.১%, পশতু- ৬.১%, উর্দু-৬%, সিন্ধি-৪.৮% এবং ইংরেজি ভাষার আনুপাতিক হার ছিল ১.৪। তাহলে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাভাষার আনুপাতিক হার ছিল সবচেয়ে বেশি। আর মাত্র শতকরা ৬ শতাংশ ভাষা উর্দুকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকরা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।  ১৯৫০ সালে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এবং ১৯৫২ সালে খাজা নাজিমুদ্দিন পুনরায় একই ঘোষণা দেন যে উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ফলে ছাত্র-বুদ্ধিজীবী মহলে দারুণ ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয় এবং আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৫২’র ৩০ জানুয়ারি ঢাকাতে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। আন্দোলনকে তীব্রতর করার লক্ষ্যে ওই দিনই এক জনসভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কমিটি গঠিত হয়। আর এই কমিটির মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই স্লোগান ক্রমান্বয়ে জোরদার হতে থাকে। এর ফলশ্রুতিতে ২১ ফেব্রুয়ারির উক্ত কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য তখনকার গভর্নর নূরুল আমিন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। সরকার কর্তৃক জারিকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনে থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল অগ্রসর হয় এবং কিছুদূর অগ্রসর হয়ে মিছিল যখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে আসে ঠিক তখনি পুলিশ মিছিলের ওপর গুলিবর্ষণ করে। ফলে মিছিল কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয় এবং রফিক, বরকত, সালাম, জব্বারসহ আরও নাম না জানা অনেক ছাত্র শহীদ হন। সরকারের এই বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ছাত্রদের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে শহীদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথে নেমে আসেন এবং প্রবল প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে ওঠে।  ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি এ দেশের আপামর ছাত্রসমাজ বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে যে মাতৃভাষা অর্জিত হয়েছে তার গণ্ডি তখন শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের চেতনা আজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই। ভাষার জন্য বাঙালি জাতির এ আত্মত্যাগ আজ নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে। ২০০১ সাল থেকে দিবসটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদ্যাপিত হচ্ছে। এই মাসটিকে আর স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা এবং সরকারিভাবে বাংলাভাষা আন্দোলনকে ঘিরে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একুশে পদক প্রদান করা হয় এই মহান চেতনাকে কেন্দ্র করে। আজ আমরা হাসি-আনন্দ, দুঃখ বেদনা সবকিছুই প্রকাশ করি মায়ের ভাষায়। তাই ভাষার এ গুরুত্বের কথা ভেবেই পৃথিবীর সব দেশেই প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মাতৃভাষার মাধ্যমে। মাতৃভাষা দিয়েই শিশুর মনে স্বদেশপ্রেমের সূত্রপাত ঘটে। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। ১৯৫২ সালের এই দিনে রক্তের বিনিময়ে অকাতরে জীবন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাভাষার মর্যাদা- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি- আমি কি ভুলিতে পারি।’ লেখক : সহ-সম্পাদক, দৈনিক আমাদের সময়
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:২৮

বিএনপিই রোহিঙ্গাদের আসার সুযোগ করে দেয় : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিই প্রথম রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সুযোগ করে দেয়। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) এখন বিরোধিতা করছে কেন? আমরা তো মানবিক কারণে ক-বছর আগে রোহিঙ্গাদের ঢুকতে দিয়েছি। কিন্তু এবার আমরা কোনোভাবেই আর উদারতা দেখাতে পারবো না। তিনি বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে শক্ত অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সীমান্ত উদারভাবে খুলে দেওয়ার সুযোগ নাই। দেশটি থেকে যারা এসেছে তাদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। বিকল্প কোনো পথ নেই। বিএনপি ভেবেছিল বিদেশিরা তাদের জন্য এগিয়ে আসবে, কিন্তু তা না হওয়ায় দলটির নেতাকর্মীরা সুস্থ নেই বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, মূল কারণ, রাজনীতিতে তাদের সব আশা গুঁড়েবালি। কর্মীদের চাঙা রাখতে কিছু বলতে হয়, এজন্য তারা উল্টাপাল্টা বকছে।  
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪০

যে কারণে মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হুমকি দেয় নূরুল
ঢাকার আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকির ঘটনায় নুরুল হক ও মোহাম্মদ ইমন নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তারা এমন কাজ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন। রোববার (২৮ জানুয়ারি) কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, নুরুল হক আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় ডিস ও ইন্টারনেটের ব্যবসা করেন। সেখানে সেলিম নামে তার এক ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ রয়েছে, যার সঙ্গে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এজন্য একজনের পরামর্শে সেলিমকে ফাঁসাতে তার পরিচয় ব্যবহার করে গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকার আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেন নুরুল হক। একই সঙ্গে তিনি তার সহযোগী মোহাম্মদ ইমনকে দিয়েও ফোন করিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ান। এর প্রেক্ষিতে গত ২০ জানুয়ারি মাংস ব্যবসায়ী খলিল রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে র‌্যাব-৩ ও র‌্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নুরুল হক ও তার অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ ইমনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গ্রেপ্তাররা হুমকির ঘটনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেন। হুমকির নেপথ্যে বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রির সিন্ডিকেটের কোনো সদস্যের ইন্ধন ছিল কি না জানতে চাইলে র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শনিবার রাতের অভিযানের পর আশুলিয়ার স্থানীয় অনেক মাংস ব্যবসায়ী আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের কারও ইন্ধন ছিল কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি কে বা কারা আলোচিত মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে হুমকি দিতে বলেছিল তাকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গরুর মাংসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ফলে গরুর মাংস সীমিত ও নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৯ নভেম্বর থেকে রাজধানীর শাজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিল তার ‘খলিল গোস্ত বিতান’-এ ৫৯৫ টাকায় প্রতিকেজি মাংস বিক্রি শুরু করেন। যা ব্যাপক সাড়া ফেলে।
২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৪

এভাবেই পরিবারের জন্য পুরুষরা জীবন বিলিয়ে দেয় : মাহি
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির ডাকা হরতালের আগের রাতে রাজধানীর গোপীবাগে আগুনে পুড়ল বেনাপোল এক্সপ্রেস। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল। নিহতদের মধ্যে এক ব্যক্তি জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু পারেননি।  সঙ্গে থাকা স্ত্রী-সন্তানও ভস্মীভূত হয়ে যান। ব্যক্তির জানালায় মাথা-হাত বের করা ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর জানা যায়, ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে গেলে স্ত্রী-সন্তানকে রেখে বেরিয়ে আসতে চাননি। এই ঘটনা সারাদেশের মানুষের চোখে পানি এনে দিয়েছে। হৃদয়বিদারক দৃশ্যটি কেউ মেনে নিতে পারছেন না। স্ত্রী-সন্তানের প্রতি পুড়ে নিহত হওয়া ব্যক্তির ভালোবাসা আবেগায়িত করেছে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে। সামাজিকমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, বউ-বাচ্চা মারা গেছে তাই নিজ ইচ্ছায় বের হয়নি। প্রতক্ষ্যদর্শীরা অনেক চেষ্টা করছে তাকে বের করতে, তখনও তার শরীরের অর্ধেক পুড়ে গিয়েছিল; সে বলেছে আমার বউ-বাচ্চা মারা গেছে আমি আর বের হব না। এভাবেই পরিবারের জন্য পুরুষরা জীবন বিলিয়ে দেয়। প্রসঙ্গত, যশোরের বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ঢাকায় আসছিল। সায়েদাবাদ এলাকা অতিক্রম করার সময় ওই ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ এলাকায় থামানো হয়। আগুনে ট্রেনটির তিনটি কোচ পুড়ে গেছে। ট্রেনে আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। গতকাল রাত ৯টার দিকে চলন্ত ট্রেনটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়