• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
নওগাঁর মাঠ কাঁপাচ্ছে বাহুবলী টমেটো
দেখতে দেশীয় জাতের টমেটোর মতোই। এটি চাষাবাদে ভাগ্য বদলেছেন নওগাঁর চাষি মইনুল হক। আধুনিক মালচিং প্রযুক্তি অনুসরণ করে উৎপাদন খরচ হয়েছে কম বেড়েছে ফলনও। প্রথম দফায় মূলধনের চারগুণ বেশি লাভ করার পরও দ্বিতীয় দফায় সমপরিমাণ লাভের আশা দেখছেন কৃষক। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা এবং কৃষকের পরিচর্যায় বেড়েছে উৎপাদন সঙ্গে পেয়েছেন মূল্য বলছেন সংশ্লিষ্টরা।  বাহুবলী টমেটো চাষ করছেন নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের চক-আতিথা গ্রামের চাষি মইনুল হক। অগ্রহণ মাসে ১০ শতক জমিতে আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে চারা রোপণ করেছিলেন বাহুবলী টমেটোর। দেড় মাসেই গাছে ফুল ও ফল আসে। বাজারে চাহিদাও বেশি। প্রথম চালানে প্রায় ৪০মণ টমেটো বিক্রি করেছেন প্রায় ৪২ হাজার টাকার। দ্বিতীয় চালানে ৫০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন তিনি। পূর্বে মিন্টু সুপার, রতন, রাজাবাবুসহ বেশ কয়েকটি জাতের টমেটো চাষ করেছেন কৃষক মইনুল হক। কিন্তু ফলন ও দাম না পাওয়ায় সেই জাতগুলো বাদ দিয়ে সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবারই প্রথম বাহুবলী জাতের টমেটো চাষ করেন তিনি। প্রথমেই বাম্পার ফলন পেয়েছেন। কৃষক মইনুল হক জানান, সব জাতের থেকে বাহুবলী জাতের টমেটো চাষে ভাগ্য ফিরেছে তার। প্রতিমণ টমেটো ১২শ থেকে ১৪শ টাকা বিক্রি করেছেন তিনি। ১০ শতক জমিতে তার সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে মাত্র ১২ হাজার টাকা। প্রথম চালানে ৪২ হাজার টাকা বিক্রি করেও দ্বিতীয় চালানে ঐ একই গাছ থেকে আরও ৫০ হাজার বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। পাইকাররা মাঠে এসে তার কাছে থাকে টমেটো নিয়ে যায়। কৃষক মইনুলকে তার স্ত্রী শেলী আখতার সার্বিক সহযোগিতা করেন। গাছ থেকে টমেটো উত্তোলন বিক্রি হিসাব সংরক্ষণসহ সকল কাজে সহযোগিতা করেন।  তিনি জানান, এইবার ঈদে ফসল থেকে লাভের টাকায় বাড়ির সকলকে উপহার দেবেন। এতে করে বরাবরের তুলনায় এইবার ঈদে তাদের আনন্দটা ব্যতিক্রম হবে। বাহুবলী টমেটো তাদের পারিবারিক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করবে। এদিকে কৃষক মইনুল হককে দেখে তার গ্রামের কৃষকরাও আগামীতে বাহুবলী টমেটো চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, অল্প খরচে অধিক লাভ হয় বাহুবলী টমেটো চাষে। তাই তারাও তাদের জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে বাহুবলী টমেটো চাষ করবেন। সদর উপজেলার মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বীজ, সার, কীটনাশকসহ সকল সুবিধা কৃষক মইনুলকে দেওয়া হয়েছে। তার সুফল তিনি পেয়েছেন। সার্বক্ষণিক সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ তার পাশে ছিল এবং থাকবে। মইনুল হক বাহুবলী টমেটো অল্প খরচে যে উৎপাদন করেছেন তার লাভের ভাগ শতভাগ। তার মত অন্যান্য কৃষকদেরও বহুবলই টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধকরণ করতে সার্বিক সহযোগিতা করবেন তারা বলে জানান। সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মুনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মালচিং পদ্ধতিতে কৃষক মইনুল হক তার ১০ শতক জমিতে বাহুবলী টমেটো চাষে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। সময় অনুযায়ী আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। এই বাহুবলী জাতের টমেটো বাজারে দাম বেশি। ফলে কৃষক লাভবানও হবে বেশি। উপজেলার আরও কৃষকদের বাহুবলী জাতের টমেটো চাষে মনযোগী করতে উপজেলা কৃষি বিভাগ নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে তিনি জানিয়েছেন। উৎপাদন বাড়াতে চাষাবাদেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎপাদন খরচ কম হচ্ছে বাহুবলী টমেটো চাষে। ফলে বাহুবলী টমেটো চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক চাষিরা।  
২৪ মার্চ ২০২৪, ১৪:১৫

জয়পুরহাটের মাঠে বাহুবলী টমেটো
নতুন জাতের বাহুবলী টমেটো চাষে ভাগ্য বদলেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর গ্রামের চাষি আব্দুর রহমানের। আধুনিক মালচিং প্রযুক্তি অনুসরণ করে উৎপাদন খরচ হয়েছে কম, বেড়েছে ফলনও। পেয়েছেন ভালো বাজার দরও। চাষি আব্দুর রহমান জানান, এক বিঘা জমিতে বাহুবলী টমেটোর চারা রোপণ করেছিলাম। দেড় মাসেই গাছে ফুল ও ফল আসে। বাজারে চাহিদাও বেশি। ৪ মাসেই প্রায় ৯০ মন ফলন মিলেছে। বিক্রি হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকায়। তিনি আরও জানান, চাষাবাদে ব্যবহার হয়েছে আধুনিক মালচিং প্রযুক্তি। সেচ ও বালাইনাশকের খরচ কমেছে। আগাছা মুক্ত জমিতে তাই ফলনও হয়েছে ভালো। জেলা কৃষিবিদরা জানান, বাহুবলী হাইব্রিড দুই জাতের আধুনিক টমেটো। জেলার অনেক চাষি এই জাতের টমেটো চাষ করছেন। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।  এছাড়া উৎপাদন বাড়াতে চাষাবাদেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎপাদন খরচ হচ্ছে কম। ফলে বাহুবলী টমেটো চাষে অনেক চাষি আগ্রহী হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।  
২৩ মার্চ ২০২৪, ২২:২৭

হাবিপ্রবি উদ্ভাবিত রাসায়নিক মুক্ত টমেটো চাষে আগ্রহী কৃষকরা
বিগত কয়েক বছর ধরেই রাসায়নিক কীটনাশক মুক্ত ফসল চাষে গবেষণা করে যাচ্ছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল হক। গবেষক ড. আজিজুল হক ও তার দল কোনো রকম রাসায়নিক বিষ ও হরমোন ব্যবহার ছাড়াই খুবই স্বল্প মাত্রায় ইউরিয়া, ফসফরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার ব্যবহার করে টমেটো চাষে সাফল্য পেয়েছেন। সম্প্রতি তার এই গবেষণা মাঠ দিনাজপুর অঞ্চলের টমেটো চাষি কৃষকের একটি দল পরিদর্শন করেছেন। বিনা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়া এত সুন্দর টমেটোর ফলন দেখে অভিভূত হয়েছেন পরিদর্শনকারী কৃষকেরা। এ সময় মাঠের পাকা টমেটো খেয়ে দেখেছেন তারা। কৃষকরা জানান, আমরা টমেটো চাষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেকবার বিভিন্ন রাসায়নিক বালাইনাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করি এছাড়াও অনেক পরিমাণের সার ইউরিয়া, ফসফেটসহ গোবর সার ও ব্যাবহার করি। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু টমেটোর ফলন দেখে বিশ্বাসই হচ্ছে না যে এখানে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় নি। রাসায়নিক কীটনাশক ও সার ব্যবহার ছাড়ায় টমেটোর এত ফলন ও এত সুন্দর কালার, খেতেও অনেক স্বাদ। স্যারের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করতে পারলে আমাদের উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে সেই সাথে টমেটোর কালার এবং সাইজের জন্য অতিরিক্ত লাভ হবে বলে আশা করছি। আমরা চাইবো স্যার যেন আমাদের অল্প পরিসরে হলেও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ দেন। দিনাজপুরের প্রান্তিক অঞ্চলের আরও একজন কৃষক জানান, স্যারের বিনা রাসায়নিক সার ব্যবহারে টমেটোর উৎপাদন দেখে ভালো লাগছে। আমরা সাধারণ কৃষকরা টমেটো চাষে স্যারের তুলনায় অনেক বেশি কীটনাশক ও সার ব্যবহার করি। আবার স্যারের এই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে টমেটো চাষে আমাদের স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হবে না আমরা নিজেরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারব এবং গ্রাহককেও সর্বোত্তম টমেটো সরবরাহ করতে পারব। আমরা টমেটো চাষে সারের এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে আগ্রহী।  কৃষক প্রদর্শনী শেষে ড. আজিজুল হক কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সারের ব্যবহার কমিয়ে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করার উপকারিতা, পদ্ধতি নিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।   ড. আজিজুল হক বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে বিষ, হরমোন-মুক্ত ও স্বল্পমাত্রার ফার্টিলাইজার প্রয়োগে সুস্বাদু টমেটো উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছি। ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে টমেটোর ফলন ও গাছের শাখা উপশাখা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। আমার লক্ষ্য হলো টেকসই উন্নয়নের জন্য আমার এই গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি কৃষকের হাতে তুলে দিতে চাই। এর ফলে টমেটো চাষে রাসায়নিকের ব্যবহার কমবে কৃষক লাভবান হবে বেশি এবং ভোক্তা সাধারণ মানুষ ভালো স্বাস্থ্যকর ফসল খেতে পারবে। আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। গবেষক ড. আজিজুল হক বর্তমানে দ্যা সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন এজেন্সি ও ইউনেস্কোর দ্যা ওয়ার্ল্ড একাডেমী অব সাইন্সেস এর যৌথ অর্থায়নে রাসায়নিক কৃষি সামগ্রীর পরিবর্তে এন্ডোফাইটিক ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে টমেটো চাষে গবেষণা করছেন। ইতোমধ্যেই তার এই গবেষণা প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের ভিন্ন ভিন্ন তিন জায়গায় কৃষকের জমিতে পরীক্ষামূলক টমেটো চাষ করা হচ্ছে। 
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়