• ঢাকা শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১
logo
পানি ছাড়ার আন্তর্জাতিক নিয়ম প্রতিপালন করেনি ভারত: পরিবেশ উপদেষ্টা
উজান থেকে ভাটির দেশে পানি ছাড়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যে নিয়ম রয়েছে ভারত সেটা প্রতিপালন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।  শুক্রবার (২৩ আগস্ট) হবিগঞ্জের বন্যা কবলিত মশাজান খোয়াই নদীর ব্রিজ এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, উজানের দেশে যদি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় এবং পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে ভাটির দেশকে আগে থেকেই জানানোর প্রয়োজন হয়। যাতে করে ভাটির দেশের লোকজন প্রস্তুতি নিতে পারে। কিন্তু এবার এই জানানোর বিষয়টি ভারত প্রতিপালন করেনি। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তিতেও এমনটি বলা হয়েছে। পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এবারের বিষয় থেকে শিক্ষা নিয়ে যত অভিন্ন নদী রয়েছে সেগুলোর সবকয়টার ব্যাপারেই পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন দেখা দিলে, যাতে আগাম সতর্কতা বাংলাদেশকে জানানো হয়, সেই বার্তা ভারতকে দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ভারতীয় দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে এমন অবস্থা না হয় তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রাকৃতিক সমস্যা আসবেই, কিন্তু এটি না জানানোর কারণে যাতে মনুষ্যসৃষ্ট সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশকে বন্যামুক্ত রাখতে নদীকে নদীর মতো রাখা উচিত। বাঁধগুলো সুরক্ষিত রাখা উচিত। উপদেষ্টা ওই এলাকার গোপায়া ও রাঙ্গারগাও গ্রামের পাশে খোয়াই নদীর বাঁধ পায়ে হেটে দেখেন। এ সময় শত শত লোক তাকে বালু ও মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি অবগত করেন। তিনি সবার কথা মনযোগ সহকারে শোনেন। এর আগে তিনি জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত সোম মহান, পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল নাজির ও মেজর ইশরাত। সকলের কাছ থেকে পরিবেশ উপদেষ্টা বন্যার বিষয়ে হবিগঞ্জের অবস্থা অবগত হন। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তার পৈত্রিক গ্রাম চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের নরপতি হাবিলিতে উপস্থিত হয়ে তার পিতা সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ মহিবুল হাসানের কবর জিয়ারত করেন। পরে মুড়ারবন্দ সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের মাজার জিয়ারত করেন তিনি।
২৩ আগস্ট ২০২৪, ২২:২২

বন্যা ও পানিতে ডুবে মৃতদের দাফনের নিয়ম
মানুষ এবং যেকোনো জীব মৃত্যু বরণ করে। জীব হিসেবে জ্ন্ম নিলে মৃত্যু বরণ করতেই হবে এটাই অমোঘ নিয়ম। সবাইকে এই সত্য বিশ্বাস করতে হয়, বিশ্বাস না করে কোনো উপায় নেই। মৃত্যু স্বাভাবিক মেনেই কেউ মারা গেলে অন্যরা তার দাফন, কাফনের ব্যবস্থা করেন।  তবে কিছুর মৃত্যুর কারণে মৃত ব্যক্তিকে স্বাভাবিক নিয়মে দাফন করা যায় না। অনেক সময় লাশ পাওয়া যায় না। কখনো কখনো লাশ কবরস্থ করার জায়গাও পাওয়া যায় না। এমন মৃত্যুগুলো ঘটে থাকে জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, লঞ্চডুবি, ট্রলারডুবি, নৌকাডুবির কারণে।  এসব ব্যক্তির মরদেহ গোসল, কাফন, দাফন ও জানাজায় করণীয় বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— পানিতে ডুবে কোনো মুসলিম মারা গেলে তাকে গোসল করাতে হবে স্বাভাবিক মৃতদের মতোই। মৃতের শরীর পবিত্র থাকলেও গোসল করাতে হবে। তবে কোনো কারণে মৃতকে দ্বিতীয়বার গোসল দিতে না পারলে এমতাবস্থায় ওই মৃতব্যক্তির জানাজা পড়া যাবে, কিন্তু জীবিত ব্যক্তিরা গুনাহগার হবেন।  কিন্তু পানি থেকে উঠানোর সময় যদি একবার অথবা দু’বার অথবা তিনবার গোসলের নিয়তে নেড়ে উঠানো হয়, তাহলে গোসল করানোর দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। কোনো কারণে যদি লাশ এতটুকু ফুলে যায় যে, হাত লাগানোর উপযুক্ত না থাকে অর্থাৎ গোসলের জন্য হাত লাগানোর দ্বারা লাশ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এ ধরনের নরম লাশে শুধু পানি ঢেলে দেওয়াই যথেষ্ট। ওই অবস্থায় সাধারণ লাশের গোসলের মতো ডলাডলি জরুরি নয়। এরপর নিয়মমতো কাফন দিয়ে জানাজার নামাজ পড়ে দাফন করা হবে।  তবে জানাজার নামাজ পড়ার পূর্বেই যদি লাশ ফেটে যায় তাহলে নামাজ পড়া ছাড়াই দাফন করে দিতে হবে।  যদি লাশের অর্ধাংশের বেশি পাওয়া যায় গোসল দিতে হবে এবং জানাজা পড়তে হবে। এমনিভাবে মাথাসহ অর্ধেক পাওয়া গেলেও তার গোসল দিতে হবে এবং জানাজা পড়তে হবে। যদি শুধু মাথা পাওয়া যায় তবে দাফন করা হবে; গোসল এবং জানাজা লাগবে না। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৫৯; আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৯৯) লাশ যদি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায় কিন্তু ফেটে না যায় তাহলেও তার জানাজার নামাজ পড়তে হবে। আর লাশ ফুলে গিয়ে ফেটে গেলে জানাজার নামাজ পড়তে হবে না। (মারাকিল ফালাহ: ১/৪১০; ইমদাদুল আহকাম: ১/৮৩০) পানিতে ডুবে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তিনি শহীদের মর্যাদা পাবেন। এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা. বলেছেন— পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে ও ভূমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তিরা শহীদ। (বুখারি ৭২০)  অপর বর্ণনায় এসেছে, একবার রসুলুল্লাহ সা. বললেন, তোমরা তোমাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তিকে শহীদ বলে গণ্য কর? তারা বলল, হে আল্লাহর রসুল! আল্লাহর পথে যে নিহত হয়, সে-ই শহীদ। তিনি বললেন, তাহলে তো আমার উম্মতের মধ্যে শহীদ খুবই অল্প।   লোকেরা বলল, তাহলে কারা শহীদ বলে গণ্য হবে, হে আল্লাহর রসুল? তিনি বললেন, যে আল্লাহর পথে নিহত হয় সে শহীদ, যে আল্লাহর পথে মারা যায় সে শহীদ, যে প্লেগ রোগে মারা যায় সে শহীদ, যে পেটের রোগে প্রাণ হারায় সে শহীদ এবং যে পানিতে ডুবে মারা যায় সেও শহীদ। (রিয়াদুস সালেহিন ১৩৬২)
২২ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৩৯

ছবি পোস্টের নতুন নিয়ম আনলো ইনস্টাগ্রাম
বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম কেভিন সিস্ট্রম এবং মাইক ক্রিগার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইন্সটাগ্রাম। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে, ফেসবুক ইনক. প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নগদ এবং স্টকের বিনিময়ে পরিষেবাটি অধিগ্রহণ করে। অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের মিডিয়া আপলোড করতে দেয় যা ফিল্টার দিয়ে সম্পাদনা করা যায় এবং হ্যাশট্যাগ ও জিও ট্যাগিং দিয়ে বিন্যস্ত করা যায়।  পোস্টগুলি সর্বজনীনভাবে বা পূর্ব-অনুমোদিত অনুসরণকারীদের সাথে শেয়ার করা যায়। ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ার কারণে সময়ের সঙ্গে বেড়েই চলেছে এর জনপ্রিয়তা। ইউজারদের সুবিধার জন্য নতুন নিয়েম নিয়ে এসেছে ইনস্টাগ্রাম। আগে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে একসঙ্গে ১০টির বেশি ছবি পোস্ট করা যেত না। তবে এবার থেকে ইনস্টাগ্রামের একটি পোস্টে এখন থেকে ২০টি ছবি যুক্ত করা যাবে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদে উঠে এসেছে এই তথ্য।  ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে একাধিক ছবি ও ভিডিও যুক্ত করা যায় তাকে ক্যারাসোল পোস্ট ফিচার বলা হয়। এই ধরনের পোস্টে ডান পাশে স্লাইড করলে একটির পর একটি ছবি বা ভিডিও দেখা যায়। এটাকে ফটো ডাম্পও বলা হয়। ২০১৭ সালে ফিচারটি চালু করে ইনস্টাগ্রাম। সেই সময় থেকে ট্রাভেল ডায়েরি বা মিমসের একটি সংগ্রহ তৈরি করার জন্য ফিচারটি ব্যবহার করা হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে ফিচারটিতে বিভিন্ন বিষয় যুক্ত করা হয়। এ বিষয়টিকে ইতিবাচক ভাবে দেখছেন ব্যবহারকারীরা। তারা বলছেন, একসঙ্গে অনেক ছবি আপলোড করার সুবিধাটি বিশেষ করে ইভেন্ট, ট্রিপ বা ছবির বিষয়ভিত্তিক কালেকশন শেয়ার করার জন্য সহজ হলো।  প্রযুক্তিবিদরাও বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই বিবেচনা করছেন।  
১০ আগস্ট ২০২৪, ১৬:৫৮

মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরানোর নিয়ম ও প্রতিদান
কোনো মুসলমান মারা গেলে তাকে গোসল করানো, কাফন পরানো এবং জানাজার নামাজ পড়ে কবরস্থ করা অপর মুসলমানদের ওপর ফরজে কেফায়া। তাই দ্রুতই এই কাজগুলো সম্পাদন করতে হয়। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত আলীকে (রা) লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে আলী! তিনটি জিনিসের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে না। ১. নামাজের যখন সময় আসবে তখন নামাজ আদায় করা থেকে দেরি করবে না। ২. মৃত ব্যক্তির জানাজা যখন উপস্থিত হবে তখন কাফন-দাফন সম্পন্ন করতে দেরি করবে না। ৩. কোন অবিবাহিতা মেয়ের জন্য যখন কোন উপযুক্ত পাত্র পাবে তখন তাকে পাত্রস্থ করা থেকে বিলম্ব করবে না।’ -(তিরমিজি ১/২০৬) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘হজরত তালহা ইবনে বারা (রা.) অসুস্থ হলে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে গেলেন। অতঃপর বললেন, আমি তালহার মধ্যে মৃত্যুর আলামত দেখতে পাচ্ছি। অতএব (সে মারা গেলে) এ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করবে। আর তোমরা দ্রুত কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করবে। কেননা কোনো মুসলমানের মৃতদেহকে পরিবারস্থ লোকদের মাঝে আটকে রাখা উচিত নয়।’ -(আবু দাউদ হাদিস: ৩১৫৯)  মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরানোর নিয়ম মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে তার কাফনে জামা, লুঙ্গি ও চাদর ব্যবহার করা উত্তম। তবে জামা বাদ দিয়ে লুঙ্গি ও চাদর পরালেও পুরুষের কাফন হয়ে যায়। সামর্থ্য থাকলে শুধু চাদরে কাফন পরানো মাকরুহ।  মৃত পুরুষকে কাফন পরানোর ক্ষেত্রে প্রথমে চাদর, চাদরের ওপর লুঙ্গি ও জামা রাখতে হবে। এরপর মৃতকে এর ওপর রেখে প্রথমে জামা পরাতে হবে। লুঙ্গি বাম দিক থেকে প্রথমে এবং এরপর ডান দিক থেকে মোড়াতে হবে। চাদরও একইভাবে মোড়াতে হবে। এরপর উভয় দিক থেকে কাফন বেঁধে দিতে হবে যেন এলোমেলো না হয়ে যায়। মৃত ব্যক্তি নারী হলে তার কাফনে চাদর, জামা, পেটিকোট, ওড়না ও বক্ষবন্ধনী ব্যবহার করা উত্তম। তবে পেটিকোট, চাদর ও ওড়না পরালেও নারীদের কাফন হয়ে যায়। সামর্থ্য থাকলে এরচেয়ে কম করা মাকরুহ। মৃত নারীকে কাফন পরানোর সময় প্রথম চাদর বিছাতে হবে, চাদরের ওপর পেটিকোট ও জামা বিছাতে হবে। প্রথমে জামা পরাতে হবে। চুলগুচ্ছকে দুই ভাগ করে সিনার দুই পাশে জামার ওপর রেখে দিতে হবে। এরপর ওড়না মাথার ওপর রাখতে হবে। ওড়না পেঁচানো বা বাঁধা যাবে না। বরং শুধু রেখে দিতে হবে। এরপর পেটিকোট প্রথমে বাম দিক থেকে, তারপর ডান দিক থেকে পেঁচিয়ে সিনার দিক থেকে বেঁধে দিতে হবে। তারপর চাদর একইভাবে পেঁচিয়ে দিতে হবে। মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরানোর প্রতিদান আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মৃত ব্যক্তিকে গোসল করায় এবং তার ত্রুটি গোপন করে, আল্লাহ সে ব্যক্তির গোনাহ গোপন করে দেন। আর যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরায় আল্লাহ তাকে জান্নাতি রেশমের পোশাক পরিধান করাবেন। (মু’জামুল কাবির লিত-তাবরানি: ৮০০৪) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের জানাজায় শরিক হয়ে নামাজ পড়ে এবং তাকে কবরও দেয় সে দুই কিরাত নেকি পাবে। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাজার নামাজ পড়ে কিন্তু মাটি দেয় না, সে এক কিরাত নেকি পাবে। সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, দুই কিরাতের পরিমাণ কতটুকু? তিনি বললেন, প্রত্যেক কিরাত উহুদ পাহাড় সমান নেকি।’-(বুখারি : ৪৭; মুসলিম : ৯৪৫; তিরমিজি : ১০৪০; নাসায়ি : ১৯৯৪; আবু দাউদ : ৩১৬৮; ইবনে মাজাহ : ১৫৩৯)
২৮ জুলাই ২০২৪, ১৩:৪৫

কোরবানির নিয়ম ও দোয়া
আনন্দ ও ত্যাগের মহিমা নিয়ে হাজির ১০ জিলহজ; পবিত্র ঈদুল আজহা। রাত পোহালেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হবে মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বড় উৎসব। সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি করবেন মুসল্লিরা। কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কোরআনের সূরা কাউসারে আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’  ১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাকে কোরবানি দিতে হবে। (দুররুল মুখতার, পৃষ্ঠা-২১৯, খণ্ড : ৫) ‘১০, ১১ ও ১২ জিলহজ—এই তিন দিন কোরবানি করা যায়। তবে প্রথম দিন কোরবানি করা অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন, তারপর তৃতীয় দিন।’ (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১৬) জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কোরবানি করা শুদ্ধ নয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/২৯৬)  একইভাবে ঈদুল আজহার নামাজের আগে কোরবানি করা বৈধ নয়। অবশ্য যে স্থানে ঈদের নামাজ বা জুমার নামাজ বৈধ নয়, সে স্থানে ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পরও কোরবানি করা জায়েজ। (কুদুরি, পৃষ্ঠা-১৯৮) নিজের কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মোস্তাহাব। যদি নিজে জবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা জবাই করাবে। এ অবস্থায় নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম। (ফতোয়ায়ে শামি: ৫/২৭২) নিজ হাতে কোরবানির পশু জবাই জবাই করার আগে ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নেওয়া মোস্তাহাব। কোরবানির পশুকে এমনভাবে জবাই করা উচিত, যাতে পশুর কোনো প্রকার অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। এমনিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে জবাই করা উচিত। জবাইকারী ব্যক্তির সঙ্গে যদি কেউ ছুরি চালানোর জন্য সাহায্য করে, তার জন্যও ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবর’ বলা ওয়াজিব। (হেদায়া: ৪/৪৩৮; ইমদাদুল ফতোয়া: ৩/৫৪৭, ফতোয়ায়ে শামি: ৯/৪৭৩)  জবাই করার সময় কোরবানির পশু কেবলামুখী করে শোয়াবে। অতঃপর ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবর’ বলে জবাই করবে। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া জায়েজ আছে। (হেদায়া: ৪/৪৩৫) পশু জবাই করার সময় মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়ত করবে যে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম। (ফতোয়ায়ে শামি: ৫/২৭২) জবাই করার সময় পশুর চারটি রগ কাটা জরুরি: কণ্ঠনালি, খাদ্যনালি ও দুই পাশের মোটা রগ, যাকে ওয়াজদান বলা হয়। এই চারটি রগের মধ্যে যেকোনো তিনটি কাটা হলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (হেদায়া: ৪/৪৩৭) কোরবানির পশু কেবলামুখী করে শোয়ানোর পর এই দোয়াটি পাঠ করতে হয়—  ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাবিবল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা। (আবু দাউদ: ২৭৯৫) এই দোয়া পাঠ করার পর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর’ বলে পশু জবাই করতে হবে। পশু জবাই করার পর পাঠ করতে হবে— ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মদ ও খালিলিকা ইবরাহিম।’ যদি একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করে তবে ‘মিন্নি’র স্থলে ‘মিন্না’ পাঠ করবে এবং শরিকদের নাম পাঠ করবে। তবে তাদের নাম শুধু নিয়ত করলে হবে। কোরবানি করার সময় এই দোয়াও পাঠ করা যাবে—  ‘বিসমিল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহুম্মা হাজা মিনকা ওয়া লাকা, হাযা আন্নি। আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল মিন... ওয়া আলি ... ডট দেয়া স্থানদ্বয়ে কোরবানীকারীর নাম উল্লেখ করবে।  তবে, এসব দোয়ার মধ্যে কোরবানির সময় শুধু ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ওয়াজিব। বিসমিল্লাহি আল্লাহুআকবর বলা উত্তম। এর অতিরিক্ত যে কথাগুলো আছে সেগুলো বলা মোস্তাহাব; ওয়াজিব বা জরুরি কিছু নয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নতের অনুসরণে সঠিক নিয়মে কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন। 
১৬ জুন ২০২৪, ২০:১৪

ফজর থেকে তাকবিরে তাশরিক শুরু, পড়ার নিয়ম
এখন চলছে ১৪৪৫ হিজরির জিলহজ মাস। আরবি এই মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকেই ‘আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ’ উচ্চারণ হবে সারাবিশ্বের সকল মুসলিম নরনারীর মুখে। তাকবিরে তাশরিক একটি ওয়াজিব আমল। রোববার (১৬ জুন, ৯ জিলহজ) ফজর থেকে শুক্রবার (২০ জুন, ১৩ জিলহজ) আসর পর্যন্ত দিনগুলোকে তাশরিকের দিন বলে। এসব দিনে মুসল্লিরা ফরজ নামাজ শেষে যে তাকবির পড়েন তাকে তাকবিরে তাশরিক বলে। এ তাকবিরে মুসল্লিরা মহান আল্লাহর মহত্ত্ব, বড়োত্ব ও একক সত্তার কথা বলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করেন। মহান আল্লাহর প্রিয় বাক্যগুলোর একটি হলো- আল্লাহু আকবার। তাই তাকে খুশি করতে হলে শুধু নামাজের সময় নয় সারাদিনই তাকবির বেশি বেশি পড়া উচিত। তাশরিকের দিনগুলোতে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পুরুষদের ওপর উচ্চৈঃস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। আর নারীরা নিচু স্বরে পড়বে, যাতে নিজে শোনে। (শামি: ২/১৭৮) 3  ফরজ নামাজের পর তাকবির বলতে ভুলে গেলে, স্মরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকবির পড়ে নেবে। তবে হ্যাঁ, নামাজের বিপরীত কোনো কাজে লিপ্ত হয়ে গেলে, যেমন, কথা বলা, নামাজের স্থান থেকে উঠে পড়া ইত্যাদি হলে তাকবির বলতে হবে না, বরং ওয়াজিব ছুটে যাওয়ার কারণে আল্লাহর কাছে তওবা করবে। (শামি: ৬/১৭৯) তাকবিরে তাশরিক হচ্ছে- اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ উচ্চারণ: আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ। অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য। তাকবিরে তাশরিক সংক্রান্ত কিছু মাসায়েল ক. প্রত্যেক মুসল্লির জন্য জিলহজের ৯ তারিখের ফজর হতে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজ আদায় করে সালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে উচ্চস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। (আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৭৭-১৭৮) খ. নারীরা এই তাকবিরে তাশরিকটি নিচু স্বরে আদায় করবেন। উচ্চস্বরে নয়। (হাশিয়া তাহতাবী ১/৩৫৭) গ. ইমাম তাকবির বলতে ভুলে গেলে মুক্তাদিরা ইমামের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরা তাকবির বলবেন। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২) ঘ. প্রত্যেক ফরজ নামাজের সালামের পর পরই কোনো কথাবার্তা বা নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ করার আগেই তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। (রদ্দুল মুহতার ২/১৮০) ঙ. কোনো সময় সবাই বা কেউ কেউ তাকবির বলতে ভুলে গিয়ে মসজিদ থেকে বের না হয়ে গেলে তাকবির আদায় করে নিতে হবে। আর যদি মসজিদ থেকে বের হয়ে যায় তাহলে এই ওয়াজিব ছুটে যাবে। এই ওয়াজিবের কোনো কাজা নেই এবং ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার কারণে ওই ব্যক্তি গোনাহগার হবে। (মাবসুত সারাখসী ২/৪৫) চ. আইয়ামে তাশরিকের কোনো নামাজ কাজা হয়ে গেলে ওই দিনগুলোর মধ্যে তার কাজা আদায় করলে তাকবির বলা ওয়াজিব। কিন্তু এই কাজা পরবর্তী অন্য সময় আদায় করলে বা আইয়ামে তাশরিকের আগের কাজা নামায ওই দিনগুলোতে আদায় করলে তাকবির বলা ওয়াজিব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৬৪) ছ. কোনো ব্যক্তি নামাজে মাসবুক হলে ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে নিজের নামাজ আদায় করার পর তাকবিরে তাশরিক বলতে হবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)
১৬ জুন ২০২৪, ১০:৩১

নিয়ম ভেঙে অবসরে যাওয়া এমডিকে ব্যাংকের উপদেষ্টা নিয়োগ!
অবসরে যাওয়ার পাঁচ বছর পার না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওই ব্যাংকের পরামর্শক ও উপদেষ্টা হতে পারবেন না—ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে ২০২১ সালে এ বিধান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকই তার নিজস্ব বিধান লঙ্ঘন করে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির কৌশলগত উপদেষ্টা হিসেবে মোহাম্মদ শাহ আলম সারওয়ারকে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। গত ১১ মে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ‘বিশেষ বিবেচনায়’ এই নিয়োগ অনুমোদন করেন। আইএফআইসি ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংকটির এমডি শাহ আলম সারওয়ারের মেয়াদ শেষ হয় ১৩ মে। এরপর ২৬ মে থেকে তিনি ব্যাংকটির ‘কৌশলগত উপদেষ্টা’ হিসেবে যোগদান করেন। এই তথ্য তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারও করেছেন। তিনি আগের মতো একই কক্ষে বসেই এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ব্যাংকটিতে এখনো পূর্ণকালীন এমডি নিয়োগ হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, দুই বছরের জন্য তাকে ‘কৌশলগত উপদেষ্টা’ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রতি মাসে বেতন অনুমোদন করা হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২১ সালে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনো ব্যাংকের এমডি বা পরের দুই পদ পর্যন্ত কর্মকর্তারা অবসরের পাঁচ বছর পার না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে উপদেষ্টা বা পরামর্শক হতে পারবেন না। এ বিধান করার আগে অবসরের এক বছর পার হলেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে উপদেষ্টা বা পর্যবেক্ষক হওয়ার সুযোগ ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারিতে ন্যাশনাল ব্যাংক তাদের অবসরে যাওয়া এমডি মেহমুদ হোসেনকে একই ব্যাংকের উপদেষ্টা পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সেই আবেদন অনুমোদন করেনি। ফলে অবসরের পাঁচ বছর পার না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকটিতে মেহমুদ হোসেনের নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আইএফআইসি ব্যাংক নিজেদের সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য অবসরে যাওয়া এমডিকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিশেষ অনুমোদন চেয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা আছে, নিয়মের বাইরে বিশেষ বিবেচনায় এ ধরনের অনুমোদন দেওয়ার। সেটিই করা হয়েছে। জানা যায়, শাহ আলম সারওয়ার ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে গত ১৩ মে পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি ছিলেন। দেশে-বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে কাজ করা শাহ আলম সারওয়ার ২০০৫ সালে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এমডি হিসেবে শীর্ষ পদে কাজ শুরু করেন। এরপর একে একে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালর করেন। পাশাপাশি তিনি ২০১১-২০ সাল পর্যন্ত সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালকও ছিলেন।  
৩১ মে ২০২৪, ১৭:০৭

মজাদার সব নিয়ম নিয়ে পিকের ফুটবল লিগ
ফুটবল খেলতে বা দেখতে পছন্দ করেন না কিংবা ফুটবলের একদমই খবর রাখেন না এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর। এখন আপনি হয়তো ভাবছেন এ নিয়ে আবার বলার কি আছে? কারণ ফুটবল সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জানি। হ্যাঁ, আপনি হয়তো ঠিকই বলেছেন। কিন্তু আজ আপনাদের এমন এক ফুটবলের খবর জানাব যা হয়তো আপনি কখনও শুনেননি এবং দেখেনওনি। এবার হয়তো আপনি একটু চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন? ভাবছেন কি সেই ব্যতিক্রমী ফুটবল যা দেখা কিংবা শোনাও হয়নি।   ব্যতিক্রমী এই ফুটবলের আবিষ্কারক বার্সেলোনা ও স্পেনের কিংবদন্তি ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে। ২০২২ সালে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর গত বছর তিনি নিজেই ব্যতিক্রমী এই ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন, যার নাম ‘কিংস লিগ’। প্রতিযোগিতাটি এরই মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় স্পেনের সীমানা ছাড়িয়ে যুক্তরাজ্যেও ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন পিকে। এমনকি এ মাসে কিংস লিগের বিশ্বকাপও আয়োজন করতে যাচ্ছেন পিকে।    এ সম্পর্কে বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পিকে বলেন, গত বছর এর (কিংস লিগের) প্রথম সংস্করণ ছিল এবং আমরা অসাধারণ সাড়া পেয়েছি। অনেক ম্যাচে লা লিগার চেয়েও বেশি দর্শক ছিল। আমরা এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। এ বছর আমরা এটিকে সম্প্রসারণ করেছি। মে মাসে আমরা প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছি। স্পেন ও আমেরিকার দলগুলো বিশ্বকাপে অংশ নেবে।   তবে স্পেন ও আমেরিকা মহাদেশের বাইরে অন্য দেশের দলগুলোকেও ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে খেলার সুযোগ দেবেন পিকে। তিনি বলেন, আমরা অন্য দেশের দলগুলোকেও খেলার সুযোগ করে দেব। বিশেষ করে যে দেশগুলোয় আমরা শিগগিরই লিগটি চালু করতে চাই, যুক্তরাজ্য সেই দেশগুলোর একটি। রিও ফার্ডিনান্ডও একটি দল গঠন করবে। এ ছাড়া আমাদের নেইমার আছে। ব্রাজিলে ওর মালিকানাধীন একটি দল আছে। ইতালিতে ফ্রান্সেসকো টট্টির একটা দল আছে। এডেন হ্যাজার্ড বেলজিয়ামের একটি দলের হয়ে খেলবে। সামনে ইউরো থাকায় আমার পরিকল্পনা হলো, বিশ্বকাপ দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ করা। ওই সময় অন্য কোনো ফুটবল টুর্নামেন্ট নেই। তাই সবাই এটা দেখতে চাইবে। এবার জেনে নিন ব্যতিক্রমী এই কিংস লিগের মজার কিছু নিয়ম- ১. এ লীগে প্রতি দলে ৭ জন করে খেলোয়াড় থাকবে।  ২. একটি গোল দিলে ২ গোল হিসেবে বিবেচনা করা হবে।  ৩. যত খুশি, তত বদলি খেলোয়াড় খেলানো যাবে। ৪. সর্বোপরি চাইলে যে কেউ মুখোশ পরে বা সং সেজে মাঠে খেলতে পারবেন।   কিংস লিগের মজার এসব নিয়মের পাশাপাশি মাঠের খেলায়ও থাকছে নানা বৈচিত্র। সাবেক ফুটবলার, সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ইন্টারনেট সেলিব্রিটিদের নিয়ে দল গঠন করা এই লীগে অংশগ্রহণ করবে ১২টি দল। প্রতিটি দল সবার সঙ্গে একবার করে মোট ১১টি ম্যাচ খেলে। সব ম্যাচই হয় রোববার এবং সেটিও হয় বার্সেলোনার একটি ভেন্যুতেই। দলগুলো তাদের স্কোয়াডে সর্বোচ্চ ১২ জন খেলোয়াড় রাখতে পারে। স্কোয়াডের ১২ ফুটবলারের মধ্যে ১০ জনকে বেছে নেওয়া হয় ড্রাফট থেকে। আর বাকি ২ জন অতিথি খেলোয়াড় বেছে নেন দলের সভাপতি। দুই অর্ধে ২০ মিনিট করে ৪০ মিনিটের ম্যাচগুলোতে নির্ধারিত সময় শেষে দুই দল সমতায় থাকলে টাইব্রেকারে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনিও, মেক্সিকোর সাবেক স্ট্রাইকার হাভিয়ের হার্নান্দেজ, স্পেনের তারকা গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াস এবং আর্জেন্টিনার সাবেক দুই সার্জিও আগুয়েরো ও হাভিয়ের সাভিওলা টুর্নামেন্টের বড় নাম। এছাড়া গত বছর এনিগমা ছদ্মনামে মুখোশ পরে খেলতে নামা কাদিজের সাবেক ফরোয়ার্ড নানো মেসাও রয়েছেন আলোচনায়। পিকের মতে, কিংস লিগ শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলেই চলবে না, প্রদর্শনীর মতোও হতে হবে। এ কারণেই অদ্ভূত সব নিয়ম চালু করা হয়েছে। টুর্নামেন্টের নিয়মগুলো কীভাবে করা হয়, সেটাও জানিয়েছেন পিকে। তিনি বলেন, কখনও কখনও টুইটারে (এক্সে) মানুষ ভোট দেয়। যেমন ধরুন, বর্তমানে মাঠের কৃত্রিম ঘাসের রং কালো, দলের সভাপতিরাও ম্যাচে পেনাল্টি নিতে পারেন—এই নিয়মগুলো ভোটের মাধ্যমে পাস হয়েছে। আসলে আমরা নিয়মের পরিবর্তনই চেয়েছিলাম। কারণ, আমরা এমন মজাদার ও প্রতিযোগিতামূলক কিছু চেয়েছিলাম যার মাধ্যমে এটিকে প্রদর্শনী ম্যাচ মনে হবে। ফুটবল হলো সব খেলার রাজা। তবে আমরা এখানে ভিন্নধর্মী উপাদান যোগ করতে চেয়েছিলাম। নিয়মে এত বদল আনার পর সেটা কি আর ফুটবল থাকল? জাবাবে পিকে বলেন, আপনি যদি মনে করেন এটা ফুটবল, তাহলে তা–ই। আর যদি মনে করেন, এটা ফুটবল নয়, তাহলে সেটাও ঠিক। এটা ফুটবল, আবার ফুটবল নয়।  
০৭ মে ২০২৪, ১৫:৪৭

হজ ভিসা নিয়ে সৌদি আরবের নতুন নিয়ম
হজ ভিসা নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করেছে সৌদি আরব। এই ভিসা দিয়ে শুধু জেদ্দা, মদিনা এবং মক্কা শহরে ভ্রমণ করা যাবে। সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এমন তথ্য জানিয়েছে। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, হজ ভিসা দিয়ে ২০২৪ সালে হজের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জেদ্দা, মদিনা ও মক্কা শহরে ভ্রমণ করতে পারবেন। হজ ভিসা শুধু হজ মৌসুমের জন্যই বৈধ। এই সময়ের মধ্যে হজ ভিসা নেওয়া ব্যক্তিদের ওমরাহ পালন বা যেকোনো ধরনের আর্থিক বা অবৈতনিক কাজের ব্যাপারে নতুন নিয়মে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।  দেশটিতে কাজ করা, বসবাস বা নির্ধারিত শহরের বাইরে ভ্রমণের জন্য হজ ভিসা অবৈধ। কেউ এই বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করলে তাকে ভবিষ্যতে হজে অংশ নেওয়ার অনুমতি নাও দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়াও অভিযুক্তকে দেশ থেকেও বেরও করে দেওয়া হতে পারে। এর আগে শনিবার (৪ মে) পবিত্র হজ সামনে রেখে অনুমতি ছাড়া মক্কায় জনসাধারণের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব। ওইদিন থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়।  সৌদি আরবের জননিরাপত্তা বিভাগ জানায়, মূলত পবিত্র হজে সারাবিশ্ব থেকে আগত বিপুল সংখ্যক হজযাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে মক্কায় প্রবেশের জন্য অবশ্যই অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এমনকি সৌদি নাগরিকদেরও।
০৬ মে ২০২৪, ২২:৪৮

হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার, নিয়ম না মানলেই অ্যাকাউন্ট ব্যান
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে মেটার হোয়াটসঅ্যাপ। এই অ্যাপের মেসেঞ্জার হলো একটি আন্তর্জাতিকভাবে উপলব্ধ ফ্রিওয়্যার, ক্রস-প্ল্যাটফর্ম, সেন্ট্রালাইজড ইন্সট্যান্ট মেসেজিং এবং ভয়েস-ওভার-আইপি পরিষেবা। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের পাঠ্য এবং ভয়েস বার্তা পাঠাতে, ভয়েস এবং ভিডিও কল করতে এবং ছবি, নথি, ব্যবহারকারীর অবস্থান এবং অন্যান্য শেয়ার করতে দেয়। হোয়াটসঅ্যাপের ক্লায়েন্ট অ্যাপ্লিকেশন মোবাইল ডিভাইসে চলে এবং কম্পিউটার থেকে অ্যাক্সেস করা যায়। তুমুল জনপ্রিয় হওয়ায় একের পর এক ফিচার এনেছে হোয়াটসঅ্যাপ। সম্প্রতি সাড়া ফেলা বেশ কয়েকটি ফিচারের পর ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দিন দিন কঠোর হচ্ছে মেটার মালিকানাধীন সাইটটি। এবার নতুন নিয়ম আনলো প্ল্যাটফর্মটিতে। যা ভাঙলেই ব্যান হবেন ব্যবহারকারী। শিগগির আসতে চলেছে অ্যাকাউন্ট রেস্ট্রিকশন ফিচার। এই ফিচারের নিয়ম না মানলে বন্ধ হয়ে যাবে চ্যাটিং করা।  প্রতিষ্ঠানটি খুব শিগগির রোল আউট করবে বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। প্রতিবেদনে থেকে জানা গেছে, অ্যাপে যে ফিচারটি যুক্ত হবে তা না মানলে কিছু সময়ের জন্য চ্যাটিং করতে পারবেন না। অ্যাপ তো খুলবে কিন্তু কাজ করবে না। সব ফিচার নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। তবে এটি নতুন চ্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে। পুরাতন চ্যাটে যারা রয়েছেন তাদের সাথে যোগযোগ বা চ্যাটিং চালিয়ে যাওয়া যাবে। এরই মধ্যে প্ল্যাটফর্মে একাধিক অটোমেটেড টুল বসিয়ে রেখেছে হোয়াটসঅ্যাপ। যাদের কাজ হলো অ্যাপে কোনো স্প্যাম, বাল্ক মেসেজ এবং অন্যান্য অপব্যাবহার হচ্ছে কি না দেখা। হোয়াটসঅ্যাপের অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড এনক্রিপশন থাকায় স্বাধীনভাবে কাজ করে এই অটোমেটিক টুলগুলো। যদি কোনো অপব্যবহার বা স্প্যামিং ধরা পড়ে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
০৪ মে ২০২৪, ২২:০২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়