বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে: খালিদ মাহমুদ

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা যদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে পুরোটাই আমাদের মাঝে নিতে পারি তাহলে নদীমাতৃক এ বাংলাদেশকে সার্বিক ভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সেটা আমাদের সামনে দৃশ্যমান। জাতির পিতাকে আমরা সার্বিকভাবে ধারণ করেছি বলে আজকে বাংলাদেশ মর্যাদার জায়গায় গেছে। বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে।

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল মিলনায়তনে মুজিব শতবর্ষ ও বিশ্ব নদী দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর নদী ও পরিবেশ ভাবনা এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সূচক বিশ্বে একটি আলোচিত বিষয়। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করার জন্য। এই জায়গাটাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের যে পথ চলা, এই পথ চলায় দখল দূষণ একথাগুলো কিন্তু আছে। তেইশ বছরে পথ চলায় অনেক পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। যখন পুরো জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করছে বিজয়ের জন্য তখন এদেশের কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ এ বিজয়ের অন্তরায় হিসাবে কাজ করছে। বিজয়ের বিরোধীতা করেছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু যে পদক্ষেপগুলো নদী নিয়ে করেছিলেন, তা তিনি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। পঁচাত্তরের এর পর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিরুদ্ধে অপবাদ ও অপপ্রচার করা হয়েছে। দুর্নীতিবাজ সমাজ ব্যবস্থা, লুটেরা সমাজ ব্যবস্থা তৈরি করেছে এবং এ জায়গা থেকে আমাদের নদীগুলো রক্ষা পায় নাই। যখন পুরো সমাজ ব্যবস্থা দুর্নীতিবাজ হয়ে যায়। লুটেরা স্বভাবের একটি সমাজ হয়। রাষ্ট্র এদের লালন-পালন করে। সেখানে ভাল কিছু থাকেনা। বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে নদী রক্ষার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হতো না। নদীর প্রবাহ ঠিক থাকত। নদীগুলো বাংলাদেশের জনগণের জীবন ও জীবিকা উৎস হিসাবে কাজ করত।

তিনি বলেন, দূষিত সমাজ ব্যবস্থার কারণে নদীগুলো দূষিত হয়ে গেছে, দখল হয়ে গেছে। এই যে দুরবস্থা, এটা এমনি এমনি আসেনি। কিছু মানুষ ভাবত জায়গা ফাঁকা আছে, এটাই আমার পছন্দ, এটাই আমার দখল করতে হবে। এভাবেই কিন্তু হয়েছে। ২০১৯ সালে ২৮ জানুয়ারি আমরা যখন ঢাকার চারপাশে নদী দখল উচ্ছেদ শুরু করলাম আমরা কিন্তু দেখিনি কোনটা কার জায়গা। প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলেছিলাম তখন তিনি আমাদের সাহস দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে এমন একজন নেতাকে পেয়েছি যার সাহস আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়, আমাদের উৎসাহ যোগায়। তিনি যে সাহস আমাদের দিয়েছেন, সে সাহসে আমরা কাজ করছি। এই ঢাকার চারপাশ আমরা দখলমুক্ত করেছি। সেগুলোকে রক্ষা করার জন্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।

নদী দখলমুক্ত করতে গিয়ে সরকারকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে জানিয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর একটি ধারা তৈরি হয়, মানুষ মনে করেছিল অপরাধ করলে বিচার হবে না, নদী দখল করলে বিচার হবে না। অনেকে নদীর পাড়ে গিয়ে ঘর তুলেছে, অনেকে নদীর পাড়ে কলকারখানা গড়ে তুলেছে। তারা মনে করেছে এটা দখল নয়, এটা আমার প্রাপ্য অধিকার। এই মনে করে কিন্তু অনেকে নদীর পাড় দখল করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন অপরাধীদের হাতে ছিল। বাংলাদেশ অপরাধীদের লালন করেছিল কাজেই এই দুরবস্থা শুধু আমাদের নদীর নয়, পুরো বাংলাদেশকে গ্রাস করেছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজকে সক্ষমতা অর্জন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নিজস্ব ড্রিম লাইনার নিয়ে নিউইয়র্ক গিয়েছেন এটা আমাদের গর্বের বিষয়। সেটাকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। আমিতো মনে করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির জন্য স্পেশাল বিমান থাকা দরকার। তারা প্যাসেঞ্জার বিমানে যাবে কেন?

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এস এস আলী কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কামরুন নাহার আহমেদ, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্পের পরিচালক ইকরামুল হক এবং বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুনির হোসেন।

এসজে/