ছেলের পাশেই শায়িত হলেন হাজি মকবুল
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মকবুল হোসেনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মোহাম্মদপুর কবরস্থানে তার ছেলের কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে বেলা ১১টায় মোহাম্মদপুর ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অংশ নেন তার পরিবারের সদস্য, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সহকর্মীসহ স্থানীয় লোকজন।
গেলো রাতে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
১৪ মে হাজী মকবুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় তার ফলাফল পজিটিভ পাওয়া যায়। এরপর তিনি সিএমএইচে ভর্তি হন।
এসজে
মন্তব্য করুন
যেখানে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (১০ এপ্রিল) খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ, গুলশানের বাসায় মেডিকেলে বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন। বোর্ডের চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে আছেন তিনি।
তিনি জানান, ঈদের দিনে ঢাকায় তার যেসব নিকটাত্মীয়-স্বজন আছেন, তারা বাসায় দেখা করতে আসবেন। তাদের নিয়ে সময় কাটাবেন ম্যাডাম। এ ছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী ডা. জোবায়েদা রহমান ভার্চ্যুয়ালি তার সঙ্গে কথা বলবেন।
তিনি আরও জানান, এর আগের কয়েকটি ঈদে লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শার্মিলা রহমান সিঁথি এবং তার দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান ঢাকায় এসেছিলেন। খালেদা জিয়া তাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছেন। তবে এবার তাদের কেউ আসেননি। যদিও বড় বোন (খালেদা জিয়া) প্রয়াত খুরশীদ জাহান হকের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানে প্রবাসী তিন ছেলে ছাড়াও আরেক বোনের ছেলের মেয়ে ঢাকায় এসে এই রোজার মধ্যেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে চলে গেছেন।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানান জটিলতা রয়েছে তার। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।
২০২২ সালের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। এরপর থেকে কয়েক দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।
খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
ধর্ষণ মামলা : আ.লীগ থেকে বড় মনিরকে অব্যাহতি
টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে দলটি। তাকে চূড়ান্ত অব্যাহতির জন্য দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে সুপারিশ করেছেন শহর আওয়ামী লীগের নেতারা, এমন তথ্যও জানা গেছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ।
তিনি বলেন, ঈদের আগে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে গোলাম কিবরিয়াকে চূড়ান্ত অব্যাহতি প্রদানের জন্য সুপারিশ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদকের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক এমএ রৌফ স্বাক্ষরিত এই পত্র পাঠানো হয়েছে। দলের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার ও তাদের পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ এবং রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য তার বিরুদ্ধে এ ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের ভাই। গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে গত বছর এপ্রিলে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। পরে ওই নারী একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন। আদালতের নির্দেশে ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে বলা হয় ওই সন্তানের জৈবিক পিতা গোলাম কিবরিয়া নন। এর কয়েক মাস পর ওই নারী আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে ওই নারীর বড় বোন তার ভাই জনি মির্জা ও সৌরভ পালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর নেতানিয়াহু : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, সারা বিশ্বই আজ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের যে দাম্ভিকতা, যুদ্ধাংদেহী মনোভাব সেটা মনে হয় আবারও নতুন করে দেখতে পাচ্ছি। হিটলার যে ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে হলোকাস্ট ঘটিয়েছিল, আজকে গাজায় গণহত্যার নায়ক নেতানিয়াহু একই রূপে আবির্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, নেতানিয়াহু জাতিসংঘ মানে না, হোয়াইট হাউজকে তোয়াক্কা করে না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথা শুনে না। সে হিটলারের চেয়েও ভয়ংকররূপে আবির্ভূত হয়েছে। ইতোমধ্যে সে গাজায় ১৪ হাজার শিশুকে হত্যা করে ফেলছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ইরানের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ ইসরায়েলকে শান্ত থাকতে বলেছে। কিন্তু নেতানিয়াহু কারও কথা শুনছেন না। তিনি ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেতানিয়াহু আপন ইচ্ছায় চলেন, যা খুশি করেন। যাকে ইচ্ছা ভাতে মারেন, পানিতে মারেন, এয়ার স্ট্রাইক করে মারেন। তার দাপট হিটলারকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এ সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের, দ্রব্যমূল্য সহনীয় অবস্থায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী যে এফোর্ট দিচ্ছেন, তা বিরল। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির
আগামী ৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কোনো ধাপেই অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সোমবার রাত ১০টায় শুরু করে গভীর রাতে শেষ হয় বৈঠকটি। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে এক বিকট স্বৈরাচারের অভ্যুদয় হয়েছে। আওয়ামী দখলদার শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হয়ে দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করেছে। এদের আমলে কখনোই জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কোনো নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। জনগণের ভোটের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদেরই আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণা করে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনগণকে প্রতারিত করার জন্য নতুন নতুন রণকৌশল গ্রহণ করে দখলদার শাসকগোষ্ঠী।
এতে আরও বলা হয়, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। তাদের অধীনে সব জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা ও শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেককে মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ভরে রাখে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কারান্তরীণ করা হয়, এদের অনেকেই এখনও কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গুম-খুন অব্যাহত থাকে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল— বিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি এবং বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতি আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, আগের সিদ্ধান্তই বহাল আছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে আগের মতোই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বিএনপি-জামায়াতের ৭০ নেতা
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও উপজেলা ভোটে অংশ নিচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অন্তত ৪৫ জন নেতা মনোনয়পত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আর জামায়াতে ইসলামীর ২২ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) ছিল প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। ১৫০টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৬৯৬ জন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্তত ৪৬৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নেতা আছেন কমবেশি ৪৫ জন।আর জামায়াতে ইসলামীর অন্তত ২২ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, ১৫০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ১ হাজার ৮৯১ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন।
প্রার্থী হওয়ার বিএনপির নেতারা বলছেন, এবার উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না। তাই মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। জনগণের জন্য কাজ করতে ভোটে অংশগ্রহণ ছাড়া বিকল্প নেই। যেসব বিএনপি নেতা উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জামা দিয়েছেন তারা হলেন- নারায়ণগঞ্জ উপজেলায় মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল; নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় বিএনপি নেতা মো. আয়েন উদ্দিন ডালিম; মহাদেবপুরে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু; কুমিল্লার মেঘনায় উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রমিজ উদ্দিন; একই উপজেলার নাঙ্গলকোটে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. মাজহারুল ইসলাম; চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় বিএনপি নেতা মো. আশরাফ হোসেন আলিম ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল রাইহান; ভোলাহাট উপজেলায় বিএনপির মোহাম্মদ বাবর আলী, মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও ইয়াজদানী আলীম আল রাজী; ময়মনসিংহের ফুলপুরে পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান হাসান পল্লব চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।
একইভাবে নাটোর সদর উপজেলায় বিএনপি নেতা গোলাম সরোয়ার ও বিএনপি কর্মী সাবেক ভিপি মো. ইসতেয়াক আহম্মেদ (হিরা); একই জেলার নলডাঙ্গা উপজেলায় বিএনপির উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি সরদার আফজাল হোসেন; পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ফায়জুল কবির তালুকদার; বান্দরবন সদর উপজেলায় জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কুদ্দুছ; নওগাঁর মহাদেবপুরে থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন; সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক ভাস চেয়ারম্যান গৌছ খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। একইভাবে আরও অনেক উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলটির অনেক নেতা প্রার্থী হয়েছেন।
এছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাহেনা বেগম হাছনা।
জামায়াতের যেসব নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন-: চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমির আব্দুর রশিদ পাটোয়ারী, নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় নায়েবে আমির মাওলানা মো. আতাউর রহমান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আমির ওলিউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সাবেক জামায়াত নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক সুজা উদ্দিন জোয়ার্দার, দিনাজপুরের বিরামপুরে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এনামুল হক, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় জামায়াত নেতা হাবিবুর রহমান এবং সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা আমির নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। এর বাইরে বেশ কয়েকটি উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত নেতারা প্রার্থী হয়েছেন।
এবার মোট চার ধাপে ৪৮০টি উপজেলা পরিষদে ভোট হওয়ার কথা। এর মধ্যে প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে দুটি উপজেলার (নারায়ণগঞ্জ সদর ও কুমারখালী) ভোট স্থগিত করা হয়। প্রথম ধাপের মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল। মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোট গ্রহণ ৮ মে।
আ.লীগের এমপি-মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন করতে মানা
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। যারা এ নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দল বহিষ্কারাদেশসহ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদেরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা নিজ নিজ বিভাগে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
নির্দেশনা পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকগণ, দপ্তর সম্পাদক ও উপ-দপ্তর সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তর সম্পাদককে সারাদেশে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সে তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।
এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে মাদারীপুর সদরের সংসদ সদস্য ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এবং নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক।
জানা যায়, শুধু সন্তান, পরিবার বা নিকটাত্মীয় ছাড়াও মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের প্রকাশ্যে বা গোপনে উপজেলা নির্বাচনে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না হওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ, স্থানীয় পর্যায়ে নিজের প্রভাব বাড়ানোর জন্য মন্ত্রী–সংসদ সদস্যরা আত্মীয়–পরিজন ছাড়াও ‘মাই ম্যান’ তৈরি করার লক্ষ্যে পছন্দের প্রার্থী নিয়ে মাঠে নামছেন। এতে দলের তৃণমূলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে দলের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও ব্যবহারের চেষ্টা করছেন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা। এ জন্যই কড়া অবস্থান।
এ বিষয়ে আরও জানা যায়, ২ মে সংসদের আগামী অধিবেশন বসছে। ওই অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হতে পারে। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে তার অবস্থান তুলে ধরবেন। প্রভাব বিস্তার থেকে বিরত থাকার বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদেরও বৈঠক হতে পারে। সেখানেও বিষয়টি আলোচিত হবে।
প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে দেশের ১৫২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৩ এপ্রিল।
আর দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, এ ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ এপ্রিল, বাছাই ২৩ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। এই নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে।
নির্বাচন কমিশন জানায়, দেশের ৪৮১টি উপজেলায় চার ধাপের নির্বাচন শুরু হবে ৮ মে, শেষ হবে জুনের প্রথম পক্ষে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই ধাপের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে।
‘আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ’
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনেরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনও নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হউক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।