• ঢাকা রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নোয়াখালী-৩ আসনে কাস্তে প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মজিব

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:০৩

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসন থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র হয়ে কাস্তে প্রতীকে লড়ছেন জেলা সিপিবির সাবেক সভাপতি এম এইচ মজিব।

নির্বাচনে বুর্জোয়া দলগুলোর প্রতিনিধিদের চ্যালেঞ্জ জানাতে আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছেন তিনি। তফসিল ঘোষণার পর সিপিবি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমর্থন নিয়ে শুরু করেছেন জোর প্রচারণা।

১৯৫৭ সালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মজিবল হক মজিব। ১৯৭৩ সালে ঢাকার সেগুন বাগিচা হাইস্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে মজিব তখনকার রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ছাত্র ইউনিয়নের জাতীয় সম্মেলন দেখতে গিয়েই প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭০ থেকে ’৭৫ এর আগস্ট পর্যন্ত তার বাস ছিল তখনকার ঢাকার রেল কলোনিতে। এই সময়কালেই একাত্তরের ২৫ মার্চের কালোরাত এবং ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তার কিশোর হৃদয়ে সংগ্রামী অনুভূতি সৃষ্টি করে।

নোয়াখালিতে ফেরার পর ক্লাব, যুবসংঘ, গানের আসর, বিভিন্ন স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ছাড়াও তিনি কমরেড মেহেদী, কমরেড সলিম উল্লা চৌধুরীর মতো বাম বিপ্লবী নেতাদের সংস্পর্শে আসেন। এসএসসি পরীক্ষার এক সপ্তাহ পরই (১৯৭৬ সালে সামরিক শাসনকালে) গ্রামের বাড়ি থেকে গেপ্তার হয়ে প্রায় দুই মাস কারাবরণ করেন তিনি।

কলেজে ভর্তির পরপরই মজিব ছাত্র ইউনিয়নকে সংগঠিত করায় মনোযোগী হন। ছাত্র সমাজের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তার কারণেই চৌমুহনী কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রথমে জিএস ও পরেরবার ভিপি পদে নির্বাচন করেন। ধারাবাহিকভাবে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন কলেজ শাখার নির্বাচিত সভাপতি, উপজেলা সম্পাদক, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি হন। নোয়াখালী কলেজ হোস্টেলের এক কর্মী সভায় তাকে ‘জেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের’ আহ্বায়কও করা হয়।

ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি থাকাকালে চৌমুহনী কলেজকে সরকারিকরণের ক্ষেত্রে ছাত্র নেতাদের মধ্যে প্রধান ভূমিকা পালন করেন মজিব। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারারুদ্ধ হন তিনি। এসময় তাকে মুক্ত করতে গিয়ে আব্দুল হক, মোমিন, কাজী নূর মোহাম্মদ, বাদল, আলমগীরসহ ১৩ জন ছাত্রনেতা গ্রেপ্তার হয়ে ১৮ দিন কারাবরণ করেন। তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে এক মাস ২৩ দিন পর কারামুক্ত হন মজিব।

১৯৮২ সালে কমরেড মজিব কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্র আন্দোলন থেকে বিদায় নিয়ে তিনি পার্টির সিদ্ধান্ত মোতাবেক শ্রমিক সংগঠন টিইউসি-তে কাজ শুরু করেন। ডেল্টা জুট মিল, ছাপাখানা, অ্যালমুনিয়াম, বেকারি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, রাইসমিল, ওয়ার্কসপ, দোকান কর্মচারি, পুঁথিঘর বাইন্ডিং, হরিজন (সুইপার), নরসুন্দর (শীল) ও বিড়ি শ্রমিকদের ১৩টি রেজিস্টার্ড ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হওয়া ট্রেড ইউনিয়নের জেলা সম্মেলনে তাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

১৯৮৩ সালে তিনি সিপিবি জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। একই বছর তিনি ৫২টি শ্রমিক সংগঠনের সিবিএ নেতাদের নিয়ে গঠিত শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক হন।

১৯৮৬ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও ডেল্টা জুট মিলের শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে মিল গেইটে এক বিশাল শ্রমিক সভা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাঁচ মাস ২৩ দিন পর তার মুক্তি মেলে।

১৯৯০ সালে পার্টির জেলা সম্মেলনে মজিবকে একমাত্র সহ-সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। বছর খানেকের মধ্যে বিলোপবাদের বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তি দেখা দিলে তিনি মার্কসবাদী-লেলিনবাদী চিন্তাধারায় সোচ্চার কমরেডদের নিয়ে পুনরায় জেলায় একটি শক্তিশালী পার্টি গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।

১৯৯৩ সালে নোয়াখালী জেলা সিপিবির সম্মেলনে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন; ওই পদে তিনি ২০১৬ পর্যন্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন :

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh