গভীর রাতে ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে এরশাদ
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শনিবার দিনগত রাত প্রায় দুইটার দিকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হয়েছেন তিনি।
জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় আরটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার দুপুরে সুনীল শুভ রায় জানান, উনি (এরশাদ) খালি পেটে এন্টিবায়োটিক ওষুধ খেয়েছিলেন।
এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং তার বমি হয়।
পরে অসুস্থ বোধ করলে জরুরি ভিত্তিতে তাকে সরাসরি সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়।
এইচএম এরশাদ সম্প্রতি ভারত সফর করেন। ভারত সফর শেষে জাতীয় পার্টি সংবাদ সম্মেলন করলেও এতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
আরও পড়ুন :
এসজে/ এমকে
মন্তব্য করুন
‘বাঘে ধরলে আঠারো ঘা, ছাত্রলীগ ধরলে ছত্রিশ ঘা’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রশাসনের উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেছেন, কয়েক দিন আগের ঘটনায় প্রশাসন কোনে তদন্ত ছাড়া, নোটিশ ছাড়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে একজন শিক্ষার্থীর সিট বাতিল করেছে। কেন আপনারা সিট বাতিল করেছেন? কেউ আপনাদের চাপ দিয়েছে? আজকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের হাজার-হাজার নেতাকর্মী যদি চাপ দেয়, পালানোর জায়গা খুঁজে পাবেন না। মনে রাখতে হবে বাঘে ধরলে আঠারো ঘা, ছাত্রলীগ ধরলে ছত্রিশ ঘা। বুয়েটের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠন পোস্টার লাগায়, চিকা মারে। বুয়েট প্রশাসন তাদের উৎসাহিত করে।
বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালুর দাবিতে রোববারের (৩১ মার্চ) প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শয়ন।
মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, একটি মহল নিহত আবরার ফাহাদের ঘটনাকে পুঁজি করে বুয়েটকে বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার পায়তারা করছে। সেই সময় তাড়াহুড়া করে বুয়েট প্রশাসন ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে চুপ করে থাকি। এই সময়ে ছাত্রলীগ যখন বুয়েট ক্যাম্পাসে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রাখে, তখন নিষিদ্ধ জঙ্গিবাদ সংগঠনগুলো সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে যাওয়া বুয়েটের শিবির কর্মীদের আটক হওয়ার ঘটনা টেনে তিনি বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয় রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করার জন্য। তাদের রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে বুয়েট প্রশাসন চুপ থেকেছে। তাদের ক্ষেত্রে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইলে হিজবুত তাহরী সংগঠন ইমেইল পাঠায়। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। আমরা অবাক হয়ে থাকি এ ধরনের কার্যক্রমে বুয়েট প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয় না।
এসময় শয়ন বুয়েট প্রশাসনকে শহীদ আরিফ রায়হান দ্বীপের কথা স্মরণ করতে বলেন।
সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমবেত হন।
মঈন খানের বাসায় এবার জার্মান ও সুইস রাষ্ট্রদূত
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের পর এবার রাজধানীর গুলশানে মঈন খানের বাসায় নৈশভোজ করলেন ঢাকাস্থ জার্মান রাষ্ট্রদূত আসিম টর্স্টার ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি।
রোববার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ইফতার ও নৈশভোজের আমন্ত্রণে আসেন তারা। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, এসময় চীনের উপ–রাষ্ট্রদূত ইয়ান হুয়ালং ও দ্বিতীয় সচিব গু ঝিকিনও তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শনিবার (৬ এপ্রিল) মঈন খানের বাসায় ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক।
যেখানে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (১০ এপ্রিল) খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ, গুলশানের বাসায় মেডিকেলে বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন। বোর্ডের চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে আছেন তিনি।
তিনি জানান, ঈদের দিনে ঢাকায় তার যেসব নিকটাত্মীয়-স্বজন আছেন, তারা বাসায় দেখা করতে আসবেন। তাদের নিয়ে সময় কাটাবেন ম্যাডাম। এ ছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী ডা. জোবায়েদা রহমান ভার্চ্যুয়ালি তার সঙ্গে কথা বলবেন।
তিনি আরও জানান, এর আগের কয়েকটি ঈদে লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শার্মিলা রহমান সিঁথি এবং তার দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান ঢাকায় এসেছিলেন। খালেদা জিয়া তাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছেন। তবে এবার তাদের কেউ আসেননি। যদিও বড় বোন (খালেদা জিয়া) প্রয়াত খুরশীদ জাহান হকের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানে প্রবাসী তিন ছেলে ছাড়াও আরেক বোনের ছেলের মেয়ে ঢাকায় এসে এই রোজার মধ্যেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে চলে গেছেন।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানান জটিলতা রয়েছে তার। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।
২০২২ সালের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। এরপর থেকে কয়েক দফায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।
খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
পাঁচ বছর আওয়ামী লীগকে ঘুমাতে দেব না : চুন্নু
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়, সেই কাজটা সংসদের মাধ্যমে আমি করছি। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, পাঁচটা বছর আওয়ামী লীগকে ঘুমাতে দেব না।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে পাটজাত পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সদস্য শফিউল আলম জনির দেওয়া উপজেলাবাসীর জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, হতে পারি আমরা সংখ্যায় কম। সংসদে বিরোধীদলের সদস্য সংখ্যা ৫০ বা ৬০ জন হলে কি হবে, যদি তারা কথা বলতে না পারে। বঙ্গবন্ধুর সময় বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো একজনই সংসদ কাঁপিয়ে রাখত। তাই বিরোধীদলের সংসদ সদস্যের সংখ্যাটা বড় বিষয় নয়, কথা বলাটা বড়। কথা বলতে পারলে দুই-চার-পাঁচজনই যথেষ্ট।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের নামে ৯০ হাজার কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছে, কেন দিল, কেন বিদ্যুৎ নাই- এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে বাধ্য করেছি। তিনি আমার প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
করিমগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন বাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন করিমগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী মুসলেহ উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন, সমাজসেবক রফিকুর রহমান রফিক, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম খান বাবলু, করিমগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল কাইয়ূম, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রিয়াদ শাহেদ রনি প্রমুখ।
পিটার হাসকে নিয়ে বিএনপির বোধোদয়
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির জন্য ‘অবতার’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি নিয়ে সরব ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বহুভাবে সরকারের ওপর চাপ তৈরির জন্য তৎপরতা চালিয়েছেন তিনি। তবে বিএনপির ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডবের পর অনেকটা পথ পাল্টে ফেলেন পিটার হাস। নির্বাচনের পর পিটার হাসের অবস্থান পরিবর্তন হয় আর বিএনপির বোধোদয় হয় যে, কেউ ক্ষমতায় এসে বসিয়ে দেবে না।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানা বিএনপি আয়োজিত সদ্য প্রয়াত জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানের স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কারো ওপর নির্ভর করে আপনারা গণতন্ত্র আনতে পারবেন না। নিজের পায়ের ওপর নির্ভর করতে হবে, নিজের শক্তির ওপর নির্ভর করতে হবে এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। আমাদের নিজেকেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে জনগণকে সঙ্গে দিয়ে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে, একটা সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায় যে, বিএনপির ঘুম ভেঙেছে এবং বোধোদয় হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গতিবিধি ছিল অন্যরকম। অনেকটা বিএনপির পক্ষ নিয়ে দরকষাকষির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। যার কারণে বিএনপি নেতারা নেতাকর্মীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তাদের সঙ্গে পশ্চিমারা আছেন ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’। গত বছরের ১৬ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বিএনপি নেতারা পিটার হাসকে তাদের ‘অবতার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ নিয়ে নানা আলোচ-সমালোচনার জন্ম নেয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশের অন্যতম এ রাজনৈতিক দলটি জনগণের শক্তির ওপর কেন তাদের আস্থা হারিয়ে বিদেশি দূতদের কাঁধে ভর করেছে, তখন সেই প্রশ্ন সবার মনে।
গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা ‘শান্তিপূর্ণ’ সমাবেশ রূপ নেয় তাণ্ডবে। বিএনপি কর্মীদের হামলায় সেদিন অনেক যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। শুধু তাই নয় বিএনপি কর্মীরা হামলা করে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে। সেদিন নির্দয়ভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের তাণ্ডবের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হয়েছে অন্তত ২৫ সাংবাদিক।
এই ঘটনার পর পশ্চিমাদের অবস্থান অন্যদিকে মোড় নেয়। অথচ, এ ঘটনার দুইদিন আগেও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন পিটার হাস। সংঘাতের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত শান্তিপূর্ণ সংলাপের আহ্বান জানান। অথচ ২৮ অক্টোবরের আগে আওয়ামী লীগ সংলাপে রাজি থাকলেও বিএনপি সংলাপে বসতে রাজি হয়নি। বরং তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করে আসছিল।
এ রকম ডামাডোলের মধ্যেই বিএনপিকে রেখে হঠাৎ পরিবারসহ দেশের বাইরে চলে যান পিটার হাস। তার এই চলে যাওয়া নিয়েও ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছিল। তবে অভিযোগ আছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ভারতের চাপে আত্মগোপন করেছিলেন। তবে এই অভিযোগ নাকচ করেছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
দিল্লির থিংক ট্যাংক ‘অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে’ (ওআরএফ) নিজের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক ও ঢাকায় সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছিলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ভারত যে মোটেই পছন্দ করছে না, বাইডেন প্রশাসনের কাছে দিল্লি এটা স্পষ্ট করে দেয়ার পরেই ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে অনেকটা আত্মগোপনে চলে যেতে হয়েছিল।
ছুটি থেকে ফেরত এসে পিটার হাস নিয়মিত কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে নির্বাচনের আগে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে অংশ নিতে দেখা যায়। ব্রিফিং শুরুর আগে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সারা কুকসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন পিটার হাস। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেই গণমাধ্যমের পরিচিত সাংবাদিকদের সঙ্গেও আলাপ করেন তিনি। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নানা প্রসঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বসে আলাপ করেন। এ সময় দুজনই হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে মশগুল ছিলেন।
তবে কখনও দুয়েকজন কূটনৈতিকের সঙ্গে গুরুগম্ভীরভাবে আলাপ করতেও দেখা যায় পিটারকে। নির্বাচন নিয়ে ব্রিফিং মনোযোগ দিয়ে শুনতে দেখা যায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে। মিট অ্যান্ড গ্রিট শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের নানা রকম খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। কিন্তু পিটার হাস এতে অংশ না নিয়ে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন, যা অনেকেরই নজরে এসেছে। আর এ নিয়ে নানা কানাঘুষাও চলতে থাকে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির চত্বরে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিদেশি পর্যবেক্ষকরা ইতিবাচক মন্তব্য করলেও যুক্তরাষ্ট্র বলছে ভিন্ন কথা। পিটার হাস বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলেও বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনের পর মন্ত্রীসভার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন পিটার হাস। অন্যান্য অতিথির সঙ্গে বঙ্গভবনের দরবার হলে আসন গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল। মন্ত্রিপরিষদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে পিটার হাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় ড. হাছান মাহমুদকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পিটার হাস।
নির্বাচনের পর মার্কিন রাষ্ট্রদুত পিটার হাসের সঙ্গে অত্যন্ত নীরবে দেখা করেছেন ড.মঈন খান। সেটিই ছিল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম কোন বিএনপি নেতার সঙ্গে পিটার হাসের সাক্ষাৎ। সেখানে কি আলাপ হয়েছে তা না জানালেও পিটার হাস জানিয়েছিলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে দেখা করে আমি আনন্দিত।
অন্যদিকে ঢাকায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয় বিএনপি’র সঙ্গে প্রতিনিধি দলের। বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর এইলিন লাউবেখার ও ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদের মতে, আন্তর্জাতিক তৎপরতা ও দেশের এত মানুষের সমর্থন নিয়ে বিএনপি যে জনপ্রিয় দল তা প্রমাণে নির্বাচন ছাড়া অন্য তো কোনো পথ খোলা ছিল না। তাহলে বর্জন করে আন্দোলন করলে লাভ কী? ভোটে অংশগ্রহণ না করলে কেউ তো কোনো দলকে ক্ষমতায় বসাতে পারে না। এখন তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে বিএনপি।
ধর্ষণ মামলা : আ.লীগ থেকে বড় মনিরকে অব্যাহতি
টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে দলটি। তাকে চূড়ান্ত অব্যাহতির জন্য দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে সুপারিশ করেছেন শহর আওয়ামী লীগের নেতারা, এমন তথ্যও জানা গেছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ।
তিনি বলেন, ঈদের আগে দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে গোলাম কিবরিয়াকে চূড়ান্ত অব্যাহতি প্রদানের জন্য সুপারিশ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদকের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক এমএ রৌফ স্বাক্ষরিত এই পত্র পাঠানো হয়েছে। দলের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার ও তাদের পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ এবং রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য তার বিরুদ্ধে এ ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের ভাই। গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে গত বছর এপ্রিলে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। পরে ওই নারী একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন। আদালতের নির্দেশে ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে বলা হয় ওই সন্তানের জৈবিক পিতা গোলাম কিবরিয়া নন। এর কয়েক মাস পর ওই নারী আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে ওই নারীর বড় বোন তার ভাই জনি মির্জা ও সৌরভ পালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর নেতানিয়াহু : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, সারা বিশ্বই আজ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের যে দাম্ভিকতা, যুদ্ধাংদেহী মনোভাব সেটা মনে হয় আবারও নতুন করে দেখতে পাচ্ছি। হিটলার যে ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে হলোকাস্ট ঘটিয়েছিল, আজকে গাজায় গণহত্যার নায়ক নেতানিয়াহু একই রূপে আবির্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, নেতানিয়াহু জাতিসংঘ মানে না, হোয়াইট হাউজকে তোয়াক্কা করে না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথা শুনে না। সে হিটলারের চেয়েও ভয়ংকররূপে আবির্ভূত হয়েছে। ইতোমধ্যে সে গাজায় ১৪ হাজার শিশুকে হত্যা করে ফেলছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ইরানের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ ইসরায়েলকে শান্ত থাকতে বলেছে। কিন্তু নেতানিয়াহু কারও কথা শুনছেন না। তিনি ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেতানিয়াহু আপন ইচ্ছায় চলেন, যা খুশি করেন। যাকে ইচ্ছা ভাতে মারেন, পানিতে মারেন, এয়ার স্ট্রাইক করে মারেন। তার দাপট হিটলারকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এ সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের, দ্রব্যমূল্য সহনীয় অবস্থায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী যে এফোর্ট দিচ্ছেন, তা বিরল। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।