সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান রিজভীর
বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর নবাবীমোড় এলাকায় ডেঙ্গু সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে চলছে, এতে করে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকারকে সঠিক একটি রূপরেখা তৈরি করতে হবে।
ভারত ও শেখ হাসিনা মিলে দেশের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে রিজভী অন্তর্বর্তী সরকারকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
এবার পূজাতে কোনো ধরনের নাশকতা হয়নি, তারপরও ভারত এ নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপি নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছে।
আরটিভি/একে/এসএ
মন্তব্য করুন
ঢাবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ এই কমিটি ২৪২ সদস্যবিশিষ্ট।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কমিটি অনুমোদন করেন।
ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হলো।
এর আগে, এ বছরের ১ মার্চ শাখা ছাত্রদলের ৭ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এতে সভাপতি হিসেবে গণেশ চন্দ্র রায় এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাহিদুজ্জামান শিপন পদ পেয়েছিলেন।
এছাড়া কমিটিতে সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে ছিলেন মাসুম বিল্লাহ, সহসভাপতি হিসেবে আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাছির উদ্দীন শাওন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শামীম আক্তার শুভ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছিলেন নূর আলম ভূঁইয়া ইমন।
এদিকে, প্রায় সাড়ে ৮ মাস পর আংশিক এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল আজ। এতে ১৪ জনকে সহসভাপতি, ৪৩ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদক, ৩৯ জনকে সহসাংগঠনিক পদে রাখা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেখতে ক্লিক করুন।
আরটিভি/এএএ
খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেক রহমানের উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবনে যান এবং তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে হুমায়ুন কবীর বলেন, আমি মূলত বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। অসুস্থ হলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের মনোবল শক্ত আছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে নিষ্ঠুর স্বৈরাচার হাসিনার পতন ঘটানোয় দেশবাসীকে নিয়ে গর্ববোধ করেন বেগম জিয়া। দেশের মানুষ তাকে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে। স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে তিনিই ছিলেন দেশবাসীর অনুপ্রেরণা।
এর আগে, দীর্ঘ ১৫ বছর পর গত ৯ নভেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন হুমায়ুন কবীর।
আরটিভি/আইএম/এসএ
কারাগারে যেভাবে দিন পার করছেন ব্যারিস্টার সুমন
কারাগারে বদলে গেছে সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের জীবন। সেখানে তিনি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করেছেন পাশাপাশি পত্রিকার খুঁটিনাটি পড়ে দিন কাটাচ্ছেন।
সম্প্রতি ব্যারিস্টার সুমনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে যান তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও চেম্বার পার্টনার এম লিটন আহমেদ। তিনি ব্যারিস্টার সুমনের সঙ্গে দেখা করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুরাই বদলে গেছেন ব্যারিস্টার সুমন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছেন। কারাগারে ঘুম থেকে ওঠেন ফজরের আজানের আগেই।
আইনজীবী লিটন আহমেদ আরও বলেন, ব্যারিস্টার সুমনের জেল সঙ্গী হলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। এদের দুজনের সঙ্গে একই রুম শেয়ার করতে হয় ব্যারিস্টার সুমনকে। সাথে রয়েছেন এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাও।
লিটন আহমেদ জানান, জেলে ডিভিশন পেয়েছেন ব্যারিস্টার সুমন। তবুও তিনি কষ্টে আছেন তার সঙ্গে মোবাইল ফোন না থাকায়। কারণ আগে সার্বক্ষণিক মোবাইলে নিজের একাউন্টে যেতেন এখন যেটি পুরোপুরিই বন্ধ।
আইনজীবী লিটন আহমেদ বলেন, কারাগারে সুমনকে দুটি জাতীয় পত্রিকা দেওয়া হয়, যার খুঁটিনাটি পড়ে দিন কাটান তিনি।
তবে ব্যারিস্টার সুমন তার সহকর্মীকে লিটনকে জানান, যেদিন আদালতে তোলা হয় সেদিন মন খারাপ থাকে। কারণ তার হাতে হাতকড়া পড়িয়ে কোর্টে নেওয়া হয়, সেখানে অন্য সহকর্মীদের দেখে আবেগী হয়ে পড়েন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন তার চেম্বার পার্টনার লিটনকে আরও জানান, জেল জীবন কষ্টের কারণ সন্ধ্যা নামার মুখেই কারা সেলে ঢুকতে হয়, খাবার খেতে হয়। এটা স্বাভাবিক জীবনে মানা কষ্টের। বাইরের খাবার তেমন একটা পান না।
এম লিটন আহমেদ আরও জানান, কারাগারে থেকে পরিবারকে অনেক মিস করেন ব্যারিস্টার সুমন। কারণ সপ্তাহে মাত্র একবার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়।
সারাদিন কি করেন ব্যারিস্টার সুমন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হাটাহাটি করেন। কখনো সকালে, কখনো বিকেলে। তবে সেখানেও তাকে দেখলে অন্য কয়েদিরা ‘সুমন ভাই’ ‘সুমন ভাই’ ডাক শুরু করেন। এতে কখনো কখনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এ কারণে সেলের বাইরে হাটাতেও কিছু বেগ পেতে হয় তাকে।
উল্লেখ্য, ৫ অগাস্টের আগে-পরে যে কয়েকজন এমপি-মন্ত্রীর দেশ ছাড়ার খবর বেরিয়েছিল তার মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনের নামও ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের সরকার পতনের প্রায় আড়াই মাস পর ২১ অক্টোবর গভীর রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় পুলিশ। এরপর সেই মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয় তাকে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৬ মামলা হয়েছে।
আরটিভি/একে
রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার না চায় তাহলে এখনই নির্বাচন দেওয়া হবে: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার না চায় তাহলে এখনই জাতীয় নির্বাচন দিয়ে দেওয়া হবে।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কার ও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সংস্কার যত দ্রুত হবে, নির্বাচনও তত দ্রুত হবে। আর যদি রাজনৈতিক দলগুলো বলে যে তারা সংস্কার চায় না, তাহলে এখনই নির্বাচন দিয়ে দেব। তবে সংস্কার ও নির্বাচন সম্পূর্ণই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের বিষয়, কারণ দেশের জনগণের প্রত্যক্ষ মতামত নিতে হলে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের মাধ্যমে নির্বাচনের পথ তৈরি করবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা কোনো কিছুই চাপিয়ে দিচ্ছি না। প্রশাসন কেবল প্রক্রিয়াটি সহজ করার জন্য কাজ করছে। আমরা সমান্তরালভাবে দুটো রাস্তায় চলছি। সমান দৃষ্টিভঙ্গি, সমান প্রচেষ্টা দুটোর পেছনেই থাকবে- একটি হলো নির্বাচন, অপরটি সংস্কার।
দ্রুতই নির্বাচন কমিশন ঘোষণা হয়ে যাবে জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কমিশন তার মতো চলবে। সেটা তো আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। সেখানে যা যা দরকার, সেটা হবে। তবে সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা না দেয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করতে পারবে না। প্রতিবেদন হলেই সেটা কমিশন ব্যবহার করতে পারবে না, (রাজনৈতিক) সমঝোতা হতে হবে।
তবে রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয় বলে বারবার মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। কিন্তু প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হলে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। সমঝোতার চেষ্টা চলতে থাকবে, কোনটা তারা চান, কোনটা চান না। সংস্কারের সময়সীমা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলো কত দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে তার ওপর।
আরটিভি/কেএইচ-টি
মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন, যে কথা হলো
কৃতজ্ঞতা জানাতে বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি তার সঙ্গে প্রায় ৫ মিনিট ধরে কথা বলেন।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মিনা ফারাহ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফোনকলের ভিডিও শেয়ার করে মিনা ফারাহ লিখেছেন, ‘সত্যের পক্ষে কাজের জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানাতে জামায়াত ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমানের ফোন’।
কথোপকথনের শুরুতেই জামায়াত আমির বলেন, যোদ্ধা হিসেবে নয়, একজন সেনাপতি হিসেবে আপনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাকে এই কৃতজ্ঞতা জানাতে অনেক দেরি করে ফেললাম এজন্য আমাকে ক্ষমা করবেন। দলের পক্ষ থেকে, আমার পক্ষ থেকে এবং বাংলাদেশে আমরা যারা মজলুম বসবাস করি তাদের সকলের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের কঠিন সময় যখন কেউ দাঁড়ায়নি তখন আপনি আমাদের পাশে ছিলেন। আপনার এই ঋণ আমরা কোনোদিন পরিশোধ করতে পারবো না।
এ সময় মিনা ফারাহ জামায়াত আমিরকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে বলেন, জামায়াতের এত বড় একটি জায়গায় থেকে আপনি আমাকে ফোন করেছেন এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আজকে আমি খুব শান্তি পাচ্ছি। ২০১১ সালে আমি যখন অত্যাচারী স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রথম লিখি তখন আমার বাড়িঘর ব্লক করে দেওয়া হয় এবং আমার দেশে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, জামায়াত নেতা কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য না দেওয়ায় আমাকে এত হয়রানি করা হয়েছে। আমি দেশে যেতে চাই এবং তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে চাই। ইন্টারপোলের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে ফিরিয়ে এনে তাদের গণহত্যার বিষয়ে মুখোমুখি করা হোক। শেখ হাসিনার গণহত্যার বিষয়ে আমি একজন সাক্ষী।
মিনা ফারাহ আরও বলেন, কামরুজ্জামান মানুষ মারে নাই। আমি মিথ্যা সাক্ষ্য না দেওয়ায় আমার ওপর মামলা। এসব বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান এ সময় বলেন, আমরা সেই দিনটি দেখতে চাই যেদিন খুনিরা কাঁদবে আর মজলুমরা হাসবে।
আরটিভি/আইএম/এআর
নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান জাতীয় নাগরিক কমিটির
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণসহ নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
রোববার (২৪ নভেম্বর) বাংলামোটরে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছাড়াই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে প্রণীত বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ এর অধীনে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের আগেই নিয়োগ দেওয়ায় প্রতিবাদ জানাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। আইন বাতিল করাটাই যুক্তিযুক্ত হতো।
মুখপাত্র বলেন, নতুন সার্চ কমিটি গঠিত হয়ে যাওয়ায় নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার কমিশনের আইনটি বদলের পক্ষের যে ইচ্ছা সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছি এবং তাদের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, এই সরকার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের অভিপ্রায়কে পুরোপুরি ধারণ করতে পারছে না। আজও ফ্যাসিবাদী সরকারের রাষ্ট্রপতি বহাল রয়েছেন, যিনি গণহত্যাকারী হাসিনার হয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। এই কদিন আগেও তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা গণঅভ্যুত্থানকে সাক্ষাত অস্বীকার করার শামিল। এ কারণে তার অধীনে কোনো ধরণের নিয়োগ বৈধ হতে পারে না। আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অবৈধ রাষ্ট্রপতির অধীনে ফ্যাসিস্ট আইনি কাঠামোয় গঠিত নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনসহ আইনটি বাতিল করে নতুন আইনের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও অবিতর্কিত নির্বাচন কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, আগের আইনের ওপর দাঁড়িয়েই গণহত্যাকারী সাবেক সরকার আয়নাঘর, হত্যা ও গুমের মতো নিষ্ঠুর ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। সেই কালাকানুনের অধীনে ইসি গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কলঙ্কিত করেছে।
সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা স্পষ্ট লক্ষ করছি, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর চাপের কাছে নতি স্বীকার করে সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করতে বাধ্য হয়েছে। এ কাজ গণঅভ্যুত্থানের কমিটমেন্টের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল! আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র ও জনগণ গণঅভ্যুত্থানের শরিক। কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূসকে মনে রাখতে হবে, তিনি ছাত্র-জনতার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। তরুণ শিক্ষার্থী সমাজসহ আপামর জনগণের কাছেই তিনি দায়বদ্ধ। রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে সংস্কার হবে না, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য আমরা তার কাছ থেকে শুনতে চাই না।
আরটিভি/ এমএ
নির্যাতিত আ.লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করলে আমি এর বিরুদ্ধে: রিজভী
নাটোরের বড়াইগ্রামে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনের সামনে উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল (২৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উজ্জ্বলের খোঁজ-খবর নিতে গিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ডাকা এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে রিজভী এ প্রতিবাদ জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভিকটিমকেই যদি গ্রেপ্তার করা হয়, এটা বেআইনি। আমি জানতাম না তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বরং আমি বলেছি, যারা এর জন্য দায়ী সে বিএনপির লোক হলেও তার বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা নিতে বলেছি। ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম পেয়েছি, যারা আমাদের দলের নাম ব্যবহার করে কাজটি করেছে, অথচ তারা রাজনীতি করে না। তার (আওয়ামী লীগ কর্মী উজ্জ্বল) ওপর আক্রমণ হয়েছে, এ কারণে ভিকটিমকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আমি চূড়ান্তভাবে এটার বিরুদ্ধে। তবে তার নামে যদি পূর্বের মামলা বা ঘটনা থাকে সেটা আমি বলতে পারব না।
তিনি বলেন, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা নেতাদেরকে বলা হয়েছে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য থানায় বসে ওসি সাহেবকে বলে এসেছি এবং জানতে চেয়েছি কেন এ বিষয়ে এখনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তারা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে পাঠিয়েছেন বিষয়টি জানার জন্য। ৫ আগস্টের পর তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের সংযত থাকতে নিয়মিত নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন কেউ যাতে আইন হাতে তুলে না নেয়। নাটোরে যার ওপর হামলা হয়েছে শুনেছি সে বিগত সময় আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু তাকে বাসা থেকে তুলে এনে মারধর করা বেআইনি কাজ, এটা তো হতে পারে না, আমরা সেই দল করি না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনারা জানেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এ পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত ৮০০ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশটা যখন নতুন করে গড়ে উঠছে এবং গণতন্ত্রের পথে যে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে কেউ যাতে এই যাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ভয়াবহ শাসন কায়েম হয়েছে। এই নাটোরে আমার প্রাণ হাতে নিয়ে আসতে হয়েছে। নাটোরের অবৈধ এমপি শিমুল দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করত। এদের বিবেক ছিল না, মানবতা ছিল না।
প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর দুপুরে আওয়ামী লীগ কর্মী উজ্জ্বল কুমার মণ্ডলকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে পুলিশে দেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
সেখান থেকে তাকে ফৌজদারি আইনের ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে পরেরদিন ২১ নভেম্বর সকালে নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে পাঠালে আদালত ওই দিনই তার জামিন মঞ্জুর করেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়।
আরটিভি/এফএ-টি