সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের
![সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/11/image-277798-1718075841.jpg)
ফাইল ছবি
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শেখ ওয়ালিদ ফয়েজ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ০৫৮৪ ফ্লাইটযোগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় তার ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে শিগগিরই তিনি ঢাকায় ফিরবেন।
মন্তব্য করুন
ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে ব্ক্তারা / বুকের রক্ত দিয়ে হলেও রেল ট্রানজিট বাতিল করব
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে রেল ট্রানজিট বাংলাদেশে হতে দেব না, বুকের রক্ত দিলেও এটি বাতিল করব। দেশকে বিক্রি করতে দেব না।
শুক্রবার (২৮ জুন) জুমার নামাজের পর বাইতুল মোকাররম মসজিদের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল, সমঝোতা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দেশটির সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ নেই দাবি করেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ।
তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতি আজিজ আহমেদ, বেনজীর আহমেদ ও মতিউর রহমান সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে, তাদের দেশে এনে বিচার করতে হবে। দুর্নীতির সব টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। না হলে দেশের জনগণ একদিন এর বিচার করবে।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, আজকে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে দুর্নীতিবাজরা। আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য একে আজাদ বলেছেন যে, ৮-১০ মানুষ ব্যাংকগুলোকে লুটে সব টাকা নিয়ে গেছে। এটা সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরাও জানে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথায়-কথায় বলেন বিদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশ থেকে এনে বিচার করব। কিন্তু যারা দেশটা লুট করল, ব্যাংককে লুট করল, অর্থনীতি ধ্বংস করল, তাদের ধরে এনে বাংলার মাটিতে বিচার করব এই কথা তো আপনার মুখে শুনি না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এখন কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা কেজি এবং আলু ৭০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়।
আগামীতে একই দাবিতে জেলা-মহানগরে কর্মসূচি দেওয়া হবে জানান সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ।
![বুকের রক্ত দিয়ে হলেও রেল ট্রানজিট বাতিল করব](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/28/image-280327-1719593980.jpg)
পেনশন স্কিম নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি ছিল, তা দূর হয়েছে। এ স্কিমের আওতায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সবাই যুক্ত হবেন ২০২৫ সালের ১ জুলাই।
শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের বিষয়ে যে তথ্য ছিল, সেটা সঠিক না। তাদের তিনটা দাবির মধ্যে এটাও একটা দাবি। সবার মতো তারাও ২০২৫ সালের ১ জুলাইয়ে পেনশন স্কিমে যোগ দেবেন, বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে, সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি আকতারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর নিজামুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ১৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেন।
শিক্ষকদের অন্য দাবিগুলো নিয়ে তিনি বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অচিরেই সমাধান হবে।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমাদের মাঝে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয় নিয়ে একমত হয়েছি আমরা, আবার কিছু ইস্যুতে এখনো মতানৈক্য রয়েছে। আমরা নিজেরাই এটা নিয়ে আবার বসবো। তারপর শিক্ষকদের পরবর্তী অবস্থান স্পষ্ট করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও বক্তব্য সংবিধান এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী। গত কয়েক বছর কোটা না থাকায় সরকারি চাকরিতে নারীদের অংশগ্রহণ হতাশাজনক। পিছিয়ে পড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও।
দেশের ১৫টি জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত। এই বন্যার্তদের সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীরা সহযোগিতা করছেন বলেও জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাপা, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
![পেনশন স্কিম নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে: কাদের](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/13/image-282429-1720866985.jpg)
কোটা নিয়ে ছাত্রসমাজের প্রতি ছাত্রলীগের যে বার্তা
সরকারি চাকরিতে ‘কোটা’ ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধানের লক্ষ্যে ছাত্রসমাজের উদ্দেএশ বেশ কিছু বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
শনিবার (১৩ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিটি আরটিভি নিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
ভাষা, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার, সমতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা ও শিক্ষার সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহিদের রক্তস্নাত, বাংলার ছাত্রসমাজের নির্ভরতা-নিশ্চয়তার প্রিয় ঠিকানা, ন্যায়ের পথের নিরলস যাত্রী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্রসমাজের প্রতি প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথি, আধুনিক-উন্নত-আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের কারিগর, গবেষণানির্ভর-বিজ্ঞানভিত্তিক-সমন্বিত-সন্ত্রাসমুক্ত-কর্মসংস্থানবান্ধব-অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের পথিকৃৎ, একদিনে ৩৬ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করে বিশ্বে নজির স্থাপনকারী, নারীর শিক্ষা-সমতা-মর্যাদা-কর্মসংস্থানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাঁর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারি-বেসরকারি খাতে চাকরি ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ, শিক্ষা খাতে অভূতপূর্ব অর্জন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে জয় করার লক্ষ্যে তারুণ্যনির্ভর কর্মপরিকল্পনা, ডিজিটাল বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে যে যাত্রা সূচনা করেছেন তার জন্য বাংলার ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি হৃদয় নিংরানো ভালোবাসা ও অভিনন্দন।
প্ৰেক্ষাপট
আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দেশে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা বাতিল হয় ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একই বছরের ৪ অক্টোবর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরবর্তীতে ২০২১ সালে উচ্চ আদালতে করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে এ বছরের ৫ জুন হাইকোর্ট ৪ অক্টোবর, ২০১৮-এর প্রজ্ঞাপন বাতিল ঘোষণা করে। সরকার পক্ষের আইনজীবী হাইকোর্ট বিভাগের দেয়া এই রায় বাতিলের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে আবেদন করে, বর্তমানে যা বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে গত ৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর পৃথক একটি রিটে ৫ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের দেয়া রায় স্থগিত করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনকে বহাল রেখে স্ট্যাটাস কো আদেশ জারি করে। এর ফলে সরকারি চাকরিতে চলতি সময়ে আর কোন কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত নেই।
বাস্তবতা
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত-আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থান সম্পর্কে দ্বিধাহীনভাবে বলিষ্ঠতার সাথে কাজ করে চলেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যার ফলশ্রুতিতে এদেশের তরুণ সমাজ সরকারি চাকরি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগের মাধ্যমে নিজেদের মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে দরিদ্র-অনুন্নত পর্যায় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক নীতি ও কর্মসূচি দেশের সর্বত্র উন্নয়ন-অগ্রগতির আলো পৌঁছে দিয়েছে। দেশ ও সমাজের পিছিয়ে পরা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য নানামুখী সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কারণে তারাও আর পিছিয়ে নেই। দেশের তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরে সরকারি চাকরির প্রতি যে আগ্রহ-আকর্ষণ বর্তমানে সৃষ্টি হয়েছে তা সম্ভব হয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার অনন্য-অতুলনীয় নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার মাধ্যমে।
২০১৮ সালের আন্দোলন পরবর্তী প্রেক্ষাপটে কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ তুলে দেয়ার কারণে নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়, যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করছি, কোটা ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এদেশের নারী সমাজ। উদাহরণস্বরূপ: কোটা থাকা অবস্থায় সর্বশেষ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসে নারীদের চাকরি হয় যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অন্যদিকে কোটা তুলে দেওয়ার পর ৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসে নারীদের চাকরি হয় ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ, ২১ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। পুলিশ ক্যাডারে ৩৬তম বিসিএসে ১৬ জন, ৩৭তম বিসিএসে ১৪ জন, ৩৮তম বিসিএসে ১২ জন, ৪০তম বিসিএসে ৭ জন এবং ৪১তম বিসিএসে মাত্র ৪ জন নারী সুপারিশকৃত হন। অর্থাৎ কোটা না থাকার কারণে বিসিএসে দিন দিন নারীদের অংশগ্রহণের হার একেবারে তলানিতে চলে যাচ্ছে এবং উন্নয়নের মূলধারা থেকে নারীরা ছিটকে পরছে। এমনকি প্রায় ৫০টি জেলায় বিসিএস ছাড়াও সরকারি যেসব কর্মসংস্থানে সুযোগ ছিল সেগুলোতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব শূন্য হয়ে যায়। ‘প্ল্যানেট ৫০/৫০’ বিনির্মাণে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যেখানে সরকারি চাকরিতে জেন্ডার সমতা থাকা উচিৎ সেখানে বাংলাদেশে তা ২৫ শতাংশ এর নিচে রয়েছে। কোটা ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার কারণে তা আরও প্রান্তিক পর্যায়ে চলে গেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সমন্বিত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনের জন্য বিশেষ বিধি থাকলেও ২০১৮ পরবর্তী বাস্তবতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ: ৪০তম বিসিএসে দেশের ২৪টি জেলা থেকে এবং ৪১তম বিসিএসে ১৮টি জেলা থেকে একজনও বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশকৃত হয়নি।
একইভাবে সমাজের পিছিয়ে পরা বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর জন্যও এটি সত্য। কোটা থাকা অবস্থায় ৩১ থেকে ৩৮তম বিসিএসে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ১৭৯ জন বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশকৃত হন। কোটা বাতিলের পর ৩৯তম বিসিএসে বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর ২৪ জন সুপারিশ পেয়েছেন এবং ৪০ ও ৪১তম বিসিএসে সুপারিশ পেয়েছেন মাত্র দুইজন।
বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন রিপোর্ট-২০২০ অনুসারে ৩৫-৩৯তম ৫টি বিসিএস পরীক্ষার পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট ১৪ হাজার ৮১৩ নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে মেধায় ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ, জেলা কোটায় ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ, নারী কোটায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটায় ০.৮৮ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী কোটায় ০.১১ শতাংশ নিয়োগ হয়। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে, কোটার শূণ্য পদে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করার কারণে কোটা থাকা অবস্থাতেও প্রতি বিসিএসে ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ নিয়োগ হয়েছে মেধার ভিত্তিতে।
এদিকে বিসিএসে আবেদন করার সময় কোন কোটা নেই। সর্বশেষ ৪৩তম বিসিএসে ৪ লাখ ৪২ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে প্রিলি পাস করে মাত্র ১৫ হাজার ২২৯ জন লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষাতেও কোনো কোটা নেই। এখান থেকে ৯ হাজার ৮৪০ জন উত্তীর্ণ হন ভাইভার জন্য। ভাইভাতেও কোন কোটা নেই। ভাইভায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে ২ হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার সুপারিশ করা হবে। অর্থাৎ যদি কোটা থাকতো তাহলে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপে পৃথকভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোটার প্রসঙ্গ আসতো। সুতরাং এখানে মেধাবীদের মধ্যে থেকেই অধিক মেধাবীরা নিয়োগ পেতেন এবং কোটা কোনভাবেই তাদের মেধার বিস্তর ফারাক করে দিত না।
সর্বোপরি, যেখানে সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষাতেই একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয় তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয়, যা পুরোপুরি ন্যায় এবং সংবিধানসম্মত।
জনদুর্ভোগ
আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে না ধরে তথাকথিত আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোমতেই যৌক্তিক কোনো পদক্ষেপ নয়। এই আন্দোলনের কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে, হাসপাতালে রোগীদের যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না, জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনীয় সম্পদ যেমন তেল, গ্যাস, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন দুরূহ হয়ে উঠছে, কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের যীবনযাত্রা অচল হয়ে যাচ্ছে। আন্দোলন-আন্দোলন খেলা ও হিরোইজম প্রদর্শনের এই নিম্ন মানসিকতা এদেশের শিক্ষিত তারুণ সমাজের প্রতি সাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
এমতাবস্থায় কোটা বাতিল বা সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে সে সম্পর্কে পুন:ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। কোটা সংক্রান্ত বিষয়টির সংবেদনশীলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হবার পরও একথা বিবেচনাধীন যে, আন্দোলনকারীরা সমাজ ও দেশ হতে বিচ্ছিন্ন কেউ নয়। নিজেদের দাবি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টিও তারা কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেন, সাধারণ জনগণ বনাম শিক্ষার্থী এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে।
আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান
বিদ্যমান প্রতিটি বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনে করে যে, কোটা ব্যবস্থার একটি যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান ও সংস্কার আনয়ন করা এই মুহুর্তে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে কোন হঠকারিতা নয়, তাড়াহুড়ো নয়, কোন অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে ‘স্পট ডিসিশন’ গ্রহণ করা নয়। কোটা ব্যবস্থার সময়োপযোগী সংস্কার আনয়নের জন্য একটি সমন্বিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামোর প্রেক্ষিতে একটি যৌক্তিক, স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এমন উদ্যোগে এদেশের ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম তাদের মেধা-মনন দিয়ে একটি উপযুক্ত ব্যবস্থা প্রণয়নে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু কোন সমন্বিত উদ্যোগের পথে না হেঁটে, এমনকি আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কেন এই অনিঃশেষ আন্দোলন?
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছে, বর্তমানে যা বিচারাধীন বিষয়। একটি বিষয় যখন আদালতের গন্ডিতে প্রবেশ করে তখন তার সমাধান আইনের কাঠামোতেই হতে হয় এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ কথা কি আন্দোলনকারীরা জানে না? পাশাপাশি হাইকোর্টের পৃথক আরেকটি রায়ে যখন স্ট্যাটাস কো অবস্থা জারি করে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে সেহেতু আইনের পরবর্তী ধাপগুলো পর্যন্ত অপেক্ষা না করে কেন জনসাধারণ বিরোধী এই অবরোধ অব্যাহত রাখতে হবে তা এদেশের ছাত্রসমাজ, জনসাধারণ জানতে চায়।
একইসাথে দেশের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কেও আন্দোলনকারীদের জানতে হবে, মানতে হবে। রাষ্ট্র ব্যবস্থার পৃথক তিনটি কাঠামো আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ। প্রতিটি বিভাগ পৃথক ও স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং একটি অন্যটির কাজে হস্তক্ষেপ করে না। কোটা বাতিলের নির্বাহী আদেশ যেহেতু বিচার বিভাগ থেকে বাতিল করা হয়েছে সেহেতু আদালতে এটির কার্যক্রম শেষ হবার পরই কেবল আইন ও নির্বাহী বিভাগ নতুন করে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং ততোদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামোর এই মৌলিক বিষয় না বুঝে জনগণকে জিম্মি করা অব্যাহত থাকলে আন্দোলনকারীদের এটিও মনে রাখা দরকার যে, এদেশের আইন বিভাগ সার্বভৌম, বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং নির্বাহী বিভাগ জনগণের ভোটে প্রতিষ্ঠিত। তাই কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলনের কাছে রাষ্ট্র কখনোই নতি শিকার করতে পারে না।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দেশের শিক্ষার্থী সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে-
১. আন্দোলনের নামে অনিঃশেষ অবরোধ কার্যক্রম পরিচালনা কোনোভাবেই দাবির সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে আসতে পারে না।
২. চলমান এইচএসসি পরীক্ষা, তীব্র তাপদাহ, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সড়ক অবরোধ, নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে তাদের অবিলম্বে ফিরে আসতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, উচ্চ আদালতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত মধ্যবর্তী সময়ের জন্য পুনর্বহাল হয়েছে। তাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে স্বাভাবিক আইনগত প্রক্রিয়ায় কোটা সংক্রান্ত জটিলতার যৌক্তিক সমাধান নিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের সব রকম বিশৃঙ্খলাপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. কোটা-সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন এবং কেউই দেশের প্রচলিত আইনের উর্ধে নয় বিধায় আইনি প্রক্রিয়াতেই এর চুড়ান্ত, স্থায়ী, যৌক্তিক ও অন্তরভুক্তিমূলক সমাধানের দিকে এগুতে হবে।
৫. এ ক্ষেত্রে দেশের শিক্ষার্থী সমাজের নির্ভরতার প্রতীক, তারুণ্যের স্বপ্ন পূরণের ঠিকানা দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাদের পাশে রয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের পাশে রয়েছে।
পরিশেষে
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দেশের শিক্ষার্থী সমাজের পাশে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে সমস্যার গভীরে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিক সমাধান নয় বরং বিচার বিভাগীয় পর্যবেক্ষণের আলোকে সাংবিধানিক অনুশাসন অক্ষুণ্ন রেখে, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতাকে বিবেচনায় নিয়ে, জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকল্পে, প্রান্তিক ও নিম্নবর্গীয় মানুষের প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আলোকে যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী, যুগোপযোগী, ইতিবাচক সমাধান নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
একইসাথে আদালতের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জানাচ্ছে যে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক উচ্চ আদালত এদেশের মহান সংবিধানে উল্লেখিত সুযোগের সমতা নিশ্চিতকল্পে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যমান বাস্তবতায় কোটা নিয়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ সন্তুষ্ট হবে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
সুতরাং, আন্দোলনের নামে দেশের শিক্ষার্থী সাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে জিম্মি করে, জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে, দেশরত্ব শেখ হাসিনা পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার যেকোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দেশের ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে এক্যবদ্ধ লড়াই অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
![কোটা নিয়ে ছাত্রসমাজের প্রতি ছাত্রলীগের যে বার্তা](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/13/image-282489-1720887723.jpg)
লন্ডন থেকে নেতাদের সঙ্গে তারেকের বৈঠক, সর্বাত্মক আন্দোলনের সিদ্ধান্ত
আগামী দিনগুলোতে রাজনীতির মাঠে বিএনপির অবস্থান কেমন ও করণীয় কী হবে এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে লন্ডন থেকে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দুই দফায় ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ পাঁচটি বিষয় সামনে রেখে সর্বাত্মক আন্দোলনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিএনপির নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দু-এক সপ্তাহের মধ্যে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার পরপরই ঘোষণা করা হবে কর্মসূচি।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এতে দিক নির্দেশনা দিতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ভার্চুয়ালি অংশ নেন। বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে বৈঠকটি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন এ বৈঠকে।
দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভোটাধিকার ফেরানোর দাবিতে এবং ভারতের সঙ্গে দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ চুক্তি, সরকারের ‘সীমাহীন দুর্নীতি’ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর রাতে আবার দ্বিতীয় দফায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দলটির অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সূত্র জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ, সমাবেশ, পদযাত্রা, গণমিছিল, রোডমার্চসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হবে।
বিএনপি হাইকমান্ডের এ বৈঠকে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরুর দিনক্ষণ ঠিক না হলেও রেল করিডর দিয়ে ভারতের ট্রেন চলাচল শুরুর আগেই বিএনপি এর প্রতিবাদে সোচ্চার হতে চায় বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে সমমনা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। শনিবার বিকেলে গণঅধিকার পরিষদের (নুর) সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে দলটির। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ১১ জুলাই গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এনডিএম এবং ১২ জুলাই এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা। এরই ধারাবাহিকতা আজ রোববার বিকেল ৫টায় ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে বিএনপি হাইকমান্ডের।
![লন্ডন থেকে নেতাদের সঙ্গে তারেকের বৈঠক, সর্বাত্মক আন্দোলনের সিদ্ধান্ত](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/14/image-282509-1720922570.jpg)
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।
রোববার (১৪ জুলাই) তিনি এ তথ্য জানান।
ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে। প্রতিবারই তাকে হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে নিয়ে আসতে হচ্ছে, এটি খুবই উদ্বেগজনক। এবার হাসপাতালে ভর্তির পর তার অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে।
গত শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভারের সমস্যা বেড়েছে, যাকে আশঙ্কাজনক বলছেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, গত চার দিনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, বরং দিনে দিনে অবনতি হচ্ছে। তার হার্ট ও লিভারসহ শারীরিক অন্য প্যারামিটার বেশ অস্বাভাবিক। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা নানাভাবে চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছেন।
গত ৭ জুলাই দিবাগত রাতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে জরুরি ভিত্তিতে সোমবার (৮ জুলাই) ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
প্রসঙ্গত, ডায়াবেটিস, আর্থারাইটিস এবং হৃদরোগ ছাড়াও ফুসফুস, লিভার ও কিডনি সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে। ইদানীং তার শারীরিক অবস্থার ঘন ঘন পরিবর্তন ঘটছে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য। ওই বছরের ২৫ মার্চ মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে নিজ বাড়িতে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
![খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/14/image-282648-1720964857.jpg)
আত্মস্বীকৃত রাজাকারদের জবাব দেবে ছাত্রলীগ: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজাকারের চেতনা লালনকারীরাও রাজাকার। আত্মস্বীকৃত রাজাকারদের জবাব ছাত্রলীগই দেবে।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা চলছে। এতে বিএনপির সমর্থন ও যোগসাজশ রয়েছে। গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের অস্তিত্বকে আঘাত করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী স্লোগানেই এ আশঙ্কা প্রমাণিত।
তিনি বলেন, এ দেশের মাটিতে রাজাকারের ঠাঁই নেই, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যথার্থ ছিল। পরাজিত শক্তির আস্ফালন মেনে নেওয়া হবে না। যারা দেশের গৌরবকে অস্বীকার করে রাজাকার পরিচয় দেন, তারা কীভাবে নিজেদের মেধাবী পরিচয় দেন?
কাদের বলেন, আন্দোলনের কুশিলব বিএনপি-জামায়াত। আল্টিমেটাম দেওয়া সরকারের বিরুদ্ধে দৃষ্টতা। কোটা সংস্কার নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। জনদুর্ভোগ মেনে নেওয়া হবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের জবাব দিতে ছাত্রলীগসহ স্বাধীনতার সপক্ষের সবাই প্রস্তুত।
![আত্মস্বীকৃত রাজাকারদের জবাব দেবে ছাত্রলীগ: কাদের](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/15/image-282747-1721036174.jpg)
ছাত্রলীগেরও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ওইদিন দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৬ জুলাই) রাতে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় দেশের প্রত্যেক ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদুল ইসলাম এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তাদের এ ঘোষণার পরপরই এলো ছাত্রলীগের বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক।
বিবৃতিতে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘অপমানজনক’ দাবি করে রোববার দিনগত রাতে রাস্তায় নেমে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে দেশের অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। সোমবার ঢাবি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষে রাত পর্যন্ত ৩০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
![ছাত্রলীগেরও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/16/image-282806-1721069833.jpg)