• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo

উন্নত বাংলাদেশ মানে শুধু অর্থবিত্তের মধ্য দিয়ে উন্নত নয়: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

আরটিভি নিউজ

  ১২ মে ২০২৪, ২৩:৩১
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সংগৃহীত

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। বাংলাদেশে করাপশনটা একদিনে তৈরি হয়নি। অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমাদের গৌরব, আমাদের অহংকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে সবকিছু ম্লান হয়ে গিয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ডকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করার মধ্য দিয়ে মূলত দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ডকে এবং হত্যাকারীদেরকে যেভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে; সমাজ, রাষ্ট্র সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। সেই জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ ছিল। সে জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল-যারা ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে, লক্ষ লক্ষ মা বোনকে নির্যাতন করেছে সেসব হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা‌। আমরা গর্ব করে বলতে পারি, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে, বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে, বিচারের রায় কার্যকর করেছে, বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র তৈরি করার যে মহাপরিকল্পনা ছিল-সেই জায়গা থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। এ ধরনের পদক্ষেপ, এ ধরনের উদ্যোগ, এ ধরনের সমাজ গঠনের পদক্ষেপ আমাদেরকে আরো বেশি এক্ষেত্রে উৎসাহিত করবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে। আমরা চাই ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ। উন্নত বাংলাদেশ মানে শুধু অর্থবিত্তের মধ্য দিয়ে উন্নত হওয়া নয়, উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। উন্নত বাংলাদেশ হচ্ছে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্বের সুখ সুবিধা আমাদের মধ্যে থাকবে। সেই ধরনের উন্নত বাংলাদেশ চাই, যেখানে সমগ্র পৃথিবী এই বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ববোধ করবে, অহংকার করবে। আমরা যে উন্নয়নের রোল মডেল তৈরি করেছি সে রোল মডেল এখানেই সীমাবদ্ধ না। আমরা তাবৎ দুনিয়াকে দেখাতে চাই, আমরা ৭১ সালে রক্তের বিনিময়ে মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে দেশ তৈরি করেছি- সে বাংলাদেশ সমগ্র পৃথিবীর জন্য তৈরি করেছি, শুধু
আমাদের জন্য নয়।

প্রতিমন্ত্রী রোববার ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মেরিটাইম এন্টি-করাপশন নেটওয়ার্ক (এমএসিএন) বাংলাদেশ রিপোর্ট লঞ্চ ইভেন্ট এবং মেরিটাইম ব্যবসা-বাণিজ্যে জালিয়াতি প্রতিরোধ’ শীর্ষক যৌথ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, এমএসিএন-এর দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র নেতা জোনাস সোবার্গ আরল্যান্ডসেন, এমএসিএন বাংলাদেশ প্রকল্পের নেতা কমোডোর (অব.) সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট মহিউদ্দিন আব্দুল কাদির, ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক শাহামিন জামান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেরিটাইম সেক্টরে দুর্নীতিকে ‘না’ বলার জন্য সম্মিলিত আওয়াজ তোলার লক্ষ্যে মেরিটাইম এন্টি-করাপশন নেটওয়ার্ক (এমএসিএন) গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে। বাংলাদেশে দুর্নীতি উদ্বেগজনক অবস্থায় নেই, তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এবং ব্যবসায়িকদের বৈশ্বিক মান অনুসরণ করার জন্য এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এমএসিএন সামুদ্রিক সেক্টরে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করেছে এবং মূল স্টেকহোল্ডারদের একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসেছে যাতে একটি জোট গড়ে তোলা যায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের ৯০% এর বেশি সমুদ্র পথে হয়ে থাকে। যার পরিমাণ ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতিবছর চার হাজারের বেশি বাণিজ্য জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরগুলোতে আসছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই জাতীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বাড়ছে। এগুলো সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ব্যবসাবান্ধব সরকারের কারণে। এ সরকারের আমলে বন্দরগুলোর গতিশীলতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প দিয়েছেন। এই রূপকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে আমরা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে পায়রা বন্দর স্থাপন করা হয়েছে। মোংলা বন্দরের আউটার বার ও ইনার বারে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন, গ্যান্ট্রি ক্রেন এবং অন্যান্য হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। বে-টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ চলমান। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর বাংলাদেশের জন্য বড় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সুযোগ তৈরি করবে এবং এটিকে একটি আঞ্চলিক সামুদ্রিক কেন্দ্রে পরিণত করবে। বর্তমান সরকার ব্যবসার পরিবেশকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করার জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করছে। বন্দর ও নৌপরিবহন পরিচালনায় ডিজিটালাইজেশনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কনটেইনারগুলির স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং, বন্দর, এজেন্ট এবং কাস্টমসের মধ্যে শিপিং তথ্যের ডিজিটাল আদান-প্রদান আজকাল নতুন কিছু নয়। এগুলো পোর্ট অপারেশনে ভাল ভূমিকা রাখছে। বিশ্বব্যাপী র‌্যাঙ্কিংয়ে উচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে কাজ করছে। সামুদ্রিক শিপিং একটি বিশ্বব্যাপী খাত যেখানে স্বচ্ছতা এবং সম্মতির বিষয়গুলো বিশ্বব্যাপী দেখা উচিত।

মন্তব্য করুন

  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আল জাজিরাকে যা বললেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী
‘পুলিশের পোশাক পরে ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করেছে দুষ্কৃতকারীরা’
মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা অধিকাংশ কর্মীর টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে: প্রতিমন্ত্রী
প্রবাসীরা আইন অমান্য করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন: প্রতিমন্ত্রী