করোনায় আক্রান্ত জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের ফের করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সংসদ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য শনিবার (১৫ জানুয়ারি) করোনা পরীক্ষার নমুনা দিলে রোববার (১৬ জানুয়ারি) তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
জি এম কাদেরের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জি এম কাদেরের শরীরে কোনো উপসর্গ নেই। তিনি ভালো আছেন, সুস্থ রয়েছেন। তার মনোবলও অটুট আছে।
এর আগে গত বছরের ১২ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন জি এম কাদের।
আরএ/টিআই
মন্তব্য করুন
৭৩ নেতাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় দল ও অঙ্গ সংগঠনের ৭৩ নেতাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের পর তাদের নির্বাচন থেকে ফেরানোর নানা চেষ্টা করা হয়। এ লক্ষ্যে প্রার্থীদের কাছে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের একটি চিঠি পাঠানো হয়। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বোঝানোর জন্য। সব উপেক্ষা করেই বিপুলসংখ্যক সাবেক ও বর্তমান নেতা নির্বাচনে নেমেছেন।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৮ মে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির যেসব নেতা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ডামি সরকারের উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে দেশ : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডামি সরকারের উন্নয়নের ভেলকিবাজিতে বাংলাদেশ এখন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত। অপরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য গাছপালা বন-জঙ্গল উজাড় করে, নদী নালা ভরাট করে এবং তাপবিদ্যুৎ ও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে মানুষের জীবনকে সংকটে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশকে এখন গ্যাস চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সারাদেশে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরীর পথচারীদের মাঝে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে মিরপুরে খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণের কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন ‘তার বাবা মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে’। তিনি বলেন শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ তো বাকশাল, যেখানে গণতন্ত্র থাকবে না, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে না। সেদিনতো ৪টি পত্রিকা বাদে সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সাংবাদিকরা বেকার হয়ে বায়তুল মোকাররমে ফল বিক্রি করতেন। বর্তমানে বিগত ১৭ থেকে ১৮ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেশে আবারও ভয়ংকর বাকশাল কায়েম করেছেন। বিপদজনক বাকশাল কায়েম করেছেন। আজকে দেশ থেকে গণতন্ত্রকে ও মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে। এ কারণে মানুষ এখন আর ভোট দিতে পারে না। সংসদকে পরিণত করা হয়েছে এন্টারটেইনমেন্ট হাউজে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও ভোটের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে আমার ভাইদের জীবন দিতে হচ্ছে। দুর্নীতি আর লুটপাটরে মাধ্যমে দেশটাকে উজার করে দেওয়া হয়েছে। সারাদেশকে বানানো হয়েছে লীগময়। সত্য বললেই জেলে পুড়ে দেওয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সদস্য সচিব আমিনুল হক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অর্থনৈতিক বিষয়ক সহসম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, কেন্দ্রীয় সদস্য তাবিথ আউয়াল, মহানগর উত্তর বিএনপির আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মোস্তফা জামান, আতাউর রহমান (চেয়ারম্যান), মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, আব্দুর রাজ্জাকসহ অনেকে।
‘৩ বিদেশি শক্তি আ.লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করেছে’
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আগেই বুঝেছিলাম, বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। তিন বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।
নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর শনিবার জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন বিরোধী দলীয় এ নেতা। গত বছরের ১২ নভেম্বর বর্ধিত সভায় জাপার নেতারা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে মতামত দেন। তবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রশ্নের মুখে জি এম কাদের নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল তখন।
নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয় মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কী না সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। আপনারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছি। মনে হয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিলেন।
আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল, তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম। বিএনপি ও জামায়াত আন্দোলনে পরাস্ত হয়ে জাতীয় পার্টিকে দোষ দিচ্ছে।
সরকার জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায় তবে তা কখনও সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি কখনোই অনুগত বিরোধী দল ছিল না। এবং জাতীয় পার্টি গৃহপালিত বিরোধী দল হতে রাজি না।
উপজেলা নির্বাচন / ছাড় পাচ্ছেন না স্বজনকে প্রার্থী করা মন্ত্রী-এমপিরা
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী ও দলীয় এমপির তালিকা তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। অভিযুক্ত মন্ত্রী এবং দলীয় এমপিকে শোকজ করা হতে পারে। সাংগঠনিক শাস্তির পাশাপাশি কেড়ে নেওয়া হতে পারে দলীয় পদ-পদবি।
আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য, নিকটাত্মীয় ও নিজস্ব লোক উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা পেয়ে ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠক করেন। বৈঠকে এ ধরনের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয় এবং পরে তা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মন্ত্রী ও দলীয় এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। তবু মন্ত্রীসহ দলের কয়েকজন এমপির স্বজন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগে শুধু ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক এবং নাটোরের সিংড়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাজহারুল ইসলাম সুজন এমপির দুই চাচা মোহাম্মদ আলী, সফিকুল ইসলাম ও ভাতিজা আলী আফসার রানা, নীলফামারীর ডিমলায় আফতাব উদ্দিন সরকার এমপির চাচাতো ভাই আনোয়ারুল হক সরকার ও ভাতিজা ফেরদৌস পারভেজ, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সাহাদারা মান্নান এমপির ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল, সোনাতলায় এমপির ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন, পাবনার বেড়ায় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ভাই আবদুল বাতেন ও ভাতিজা আবুল কালাম সবুজ, কুষ্টিয়া সদরে মাহবুবউল-আলম হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় আলী আজগর টগর এমপির ভাই আলী মুনসুর বাবু, পিরোজপুরের নাজিরপুরে শ ম রেজাউল করিম এমপির ভাই এস এম নুর ই আলম সিদ্দিকী, মাদারীপুর সদরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপির ছেলে আসিবুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান, নরসিংদীর পলাশে ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ এমপির শ্যালক শরীফুল হক, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রার্থী হয়েছেন শাহাব উদ্দিন এমপির ভাগনে সোয়েব আহমদ, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপির ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী, কক্সবাজারের মহেশখালীতে আশেক উল্লাহ রফিক এমপির চাচাতো ভাইয়ের ছেলে হাবিব উল্লাহ। আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, লাকসামে মন্ত্রীর শ্যালক মহব্বত আলী এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক এমপির ভাই সালাম মল্লিক।
এ পরিস্থিতিতে স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী ও দলীয় এমপির তালিকা তৈরি করা হয়। এর মধ্যে আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলা নির্বাচনে যেসব মন্ত্রী ও এমপির স্বজন প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তালিকা চূড়ান্ত করেন দলের আট সাংগঠনিক সম্পাদক।
দলের নির্দেশ না মানায় বহিষ্কারের নিয়ম রয়েছে। তবে নানাভাবেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দলের সংশ্লিষ্ট এমপি ও মন্ত্রীকে তিরষ্কার করার পাশাপাশি দলীয় পদ-পদবি কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে জোর আলোচনা রয়েছে। এমনকি সাংগঠনিক যোগ্যতা থাকার পরও তারা নতুন করে দলের পদ-পদবি নাও পেতে পারেন। সেই সঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়াটা তাদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম জানান, মন্ত্রী ও দলের এমপির স্বজনের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। আর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অভিযুক্ত মন্ত্রী এবং দলীয় এমপিকে শোকজ করা হতে পারে।
এ ছাড়া মন্ত্রী–সংসদ সদস্যরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও নানাভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
দেশে এখন ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। এবার চার ধাপে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫টিতে ভোট হবে, পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৮ মে থেকে প্রথম পর্যায়ের ভোট শুরু হবে।
‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়নি’
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে গণভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কোন আলোচনা হয়নি। তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সাংগঠনিক নির্দেশনা অমান্য করলে সময় মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ বছর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর হীরক জয়ন্ত জাকজমকপূর্ণভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, শেখ কামালের জন্ম দিবস, ১৫ আগস্টসহ বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
আ.লীগের বৈঠক : মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের ভোট করার বিষয়ে যা জানা গেল
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে স্বজনকে প্রার্থী করানো মন্ত্রী ও দলীয় এমপির তালিকা তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। অভিযুক্ত মন্ত্রী এবং দলীয় এমপিকে শোকজ করা হতে পারে। সাংগঠনিক শাস্তির পাশাপাশি কেড়ে নেওয়া হতে পারে দলীয় পদ-পদবি।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলে এমন মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলেও মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বৈঠকের শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি থাকা অবস্থায় উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের প্রার্থিতা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। সাংগঠনিক নানা বিষয়ে এবং বিভিন্ন দিবসকেন্দ্রিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিন সভা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কোন আলোচনা হয়নি। তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সাংগঠনিক নির্দেশনা অমান্য করলে সময়মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এ বছর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর হীরক জয়ন্ত জাকজমকপূর্ণভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, শেখ কামালের জন্ম দিবস, ১৫ আগস্টসহ বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের বিষয়টি তোলেননি। সাংগঠনিক বিষয় পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানান। ফলে দলের অন্য নেতারা আর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
প্রসঙ্গত, দেশে এখন ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। এবার চার ধাপে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫টিতে ভোট হবে, পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৮ মে থেকে প্রথম পর্যায়ের ভোট শুরু হবে।
‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বেগম জিয়াকে কর্মক্ষম করতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসার পর ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ, কর্মক্ষম হয়ে চলার জন্য যে চিকিৎসা প্রয়োজন, সেটি দেশে দেওয়া যাচ্ছে না। বারবার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু কোনো আবেদনই ফলপ্রসূ হয়নি। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন অথবা আর্টিফিসিয়াল, লিভার রিপ্লেসমেন্টের জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা এবং চিকিৎসা প্রয়োজন তার কোনোটাই এ দেশে তো নেই। আশপাশে অনেক জায়গায় নেই।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে আমরা আবেদন করছি, যে উনি ম্যাডাম নিজেও বলেছেন উনার জন্য দোয়া কামনা করেছেন সুস্থতার জন্য, আপনারা কষ্ট করেছেন সেজন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বলে জানান ডা এজেডএম জাহিদ হোসেন।
এর আগে, বুধবার (১ মে) জরুরি কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।
একদিন হাসপাতালে থাকার পর আজ রাতে তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়।