• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এই মাসে ৬টি রোজা রাখলেই পাওয়া যাবে এক বছর রোজার সওয়াব

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২১ জুন ২০১৮, ১৭:৪১

‘শাওয়াল’ আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো উঁচু করা, উন্নতকরণ, উন্নত ভূমি, পূর্ণতা, ফলবতী, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয়ী হওয়া।

হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন— যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখলো, অতঃপর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখলো, সে যেন (পূর্ণ) এক বছর রোজা রাখলো। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নং- ১১৬৪)

হজরত আবু আইয়ুব আল আনসারি (রা.) এই হাদিসের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, রমজান মাসের রোজা পালনের বিনিময়ে দশ মাস এবং শাওয়াল মাসের রোজা পালনের বিনিময় দুই মাস— মোট (বার মাস) এক বছরের সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইসলামে একটি সৎকাজের বিনিময় হচ্ছে দশ নেকি- যা কোরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।
----------------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : হজযাত্রীর পাসপোর্টে মক্কা ও মদিনার বাসার ঠিকানা থাকতে হবে
---------------------------------------------------------------------

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন— যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। (সুরা আনআম)

হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, রমজান মাসের রোজা পালন বাকি দশ মাস রোজা পালনের সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাস রোজা পালনের সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা পালন। অপর এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা পালন শেষ করে (শাওয়াল মাসে) ছয় দিন রোজা রাখবে সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা পালন করার সমতুল্য হবে। (আহমদ : ৫/২৮০, দারেমি : ১৭৫৫)

শাওয়াল মাসের সুন্নত

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত: শাওয়াল মাসে বিয়েশাদি সুন্নত, যেরূপ শুক্রবারে ও জামে মসজিদে ও বড় মজলিশে আক্দ অনুষ্ঠিত হওয়া সুন্নত। কারণ, মা আয়েশার বিয়ে শাওয়াল মাসের শুক্রবারে মসজিদে নববিতেই হয়েছিল। ছয় রোজা শাওয়াল মাসের বিশেষ সুন্নত। (সহিহ মুসলিম শরিফ)।

ছয়টি সুন্নত রোজা

এই মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেন, যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল। (মুসলিম, হাদিস: ১১৬৪; আবু দাউদ, হাদিস: ২৪৩৩; তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, সহিহ-আলবানি)

শাওয়াল মাসের এ ছয়টি রোজা মূলত সুন্নত। যেহেতু রাসুল (সা.) নিজে তা আমল করেছেন এবং আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পরিভাষায় এগুলোকে নফল রোজা বলা হয়। কারণ, এগুলো ফরজ ও ওয়াজিব নয়, অতিরিক্ত তথা নফল।

কাজা রোজা সুন্নত বা নফল রোজা

রমজান মাসের কাজা রোজা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে কিংবা সফরে থাকবে সে (রমজানের পরে) অন্য দিনগুলোতে রোজা রাখতে পারবে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৪)। তাই যাঁরা সফরের ক্লান্তির কারণে কিংবা অসুস্থ থাকার কারণে রমজানে পূর্ণ রোজা রাখতে পারেননি, তাঁরা সেগুলো রমজানের পর অন্য সময়ে আদায় করে নেবেন। আর ওই অসুস্থতার মধ্যে মহিলাদের ঋতুমতী হওয়াও শামিল।

এ বিষয়ে মা আয়েশা (রা.) বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর যুগে ঋতুমতী হতাম। তখন আমাদের এই রোজা পরে কাজা আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হতো; কিন্তু নামাজ কাজা আদায় করার কথা বলা হতো না।

(অর্থাৎ ওই অবস্থায় নামাজ মাফ, কিন্তু রোজা মাফ নয়। তা পরে আদায় করে নিতে হবে)। (বুখারি ও মুসলিম; মিশকাত, হাদিস: ২০৩২)।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমার ওপর রমজানের যে কাজা রোজা বাকি থাকত, তা পরবর্তী শাবান মাস ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না।

(বুখারি, হাদিস: ১৯৫০; মুসলিম, হাদিস: ১১৪৬)।

এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, রমজানের ছুটে যাওয়া কাজা রোজা পরবর্তী রমজান মাস আসার আগে যেকোনো সময় আদায় করা যাবে। রমজানের কাজা রোজা রাখার জন্য সময় সংকীর্ণ না হলে তার আগে নফল রোজা রাখা বৈধ ও শুদ্ধ। অতএব সময় যথেষ্ট থাকলে ফরজ রোজা কাজা করার আগে নফল রোজা রাখতে পারবেন। যেমন, ফরজ নামাজ আদায় করার আগে সময় থাকলে নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।

তাই শাওয়ালের ছয়টি সুন্নত রোজা রমজানের কাজা রোজা আদায়ের আগেও রাখা যাবে।

যেমন, হজরত আয়েশা (রা.) আমল করতেন। তবে সম্ভব হলে আগে ফরজ রোজার কাজা আদায় করাই উত্তম। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৬৬)।

আরও পড়ুন :

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত
যে দুটি দেশে আজ পালিত হচ্ছে ঈদ
X
Fresh