ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের ৩ জামাত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ঈদুল আজহা নামাজের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। চলমান করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের এসব জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় ঈদুল আজহার জামাত সকাল ৮ টায় অনুষ্ঠিত হবে। জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম খতিব ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল জামে মসজিদে সকাল ৮ টায় এবং ফজলুল হক মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৮ টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
কেএফ
মন্তব্য করুন
যে কারণে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন
জাকাত মানে পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি। যা ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি। আল-কোরআনে নামাজের নির্দেশ যেমন ৮২ বার রয়েছে, অনুরূপ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাকাতের নির্দেশনাও রয়েছে ৮২ বার। জাকাত আদায় না করলে আল্লাহর কঠিন শাস্তি রয়েছে। এটি আদায়ে গড়িমসি করলেও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।
হযরত আবদুল্লাহ বিন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত আর জাকাত আদায় না করলে তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তার রসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০১৯)
পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! পণ্ডিত ও সংসারবিরাগীদের অনেকে লোকদের মালামাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে চলছে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে। আর যারা স্বর্ণ ও রুপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আজাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। (সুরা: তাওবাহ, আয়াত: ৩৪)
সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার। (সূরা তাওবা, আয়াত ৩৫)
তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। চলমান এই অবস্থা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর, ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও তিন দিন বাড়িয়েছে। দেশের নানান জায়গায় ইসতিসকা বা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ আদায় করা হচ্ছে।
ওমরাহর সুযোগ আরও সহজ করল সৌদি
বিদেশিদের জন্য পবিত্র ওমরাহ পালনের সুযোগ আরও সহজ করেছে সৌদি আরব। এখন থেকে যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরব গেলেই বিদেশিরা ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন। লাগবে না কোনো বিশেষ ভিসা।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো দেশ থেকে এবং যেকোনো ভিসায় সৌদি আরবে আগতরা এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করতে পারবেন।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ট্রানজিট, শ্রম ও ই-ভিসাসহ যেকোনো ভিসাধারী ব্যক্তি এ সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া ওমরাহ পালনের অনুমতি ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য ‘নুসুক’ অ্যাপ ব্যবহার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এদিকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে হজ ও ওমরা পালনকারীদের ইবাদত সহজ করতে ‘ডিজিটাল ব্যাগ’ চালু করেছে সৌদি সরকার। দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ব্যাগ প্রোগ্রাম হজ ও ওমরাযাত্রীদের জীবনমান সহজ করবে। তাদের হজ ও ওমরা পালন সহজ করবে। মুসল্লিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে এর মাধ্যমে। বিশেষ করে কখন তারা কোন বিধান পালন করবে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে।
কর্মীদের সঙ্গে যেমন আচরণ করতে বলেছেন রাসুল (সা.)
মহান আল্লাহ তা’আলা বৈচিত্র্য দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন মানুষকে। কাউকে সম্পদশালী করেছেন আবার কাউকে করেছেন দীনহীন। কাউকে বেশি মেধা দিয়েছেন, কাউকে দিয়েছেন কম। কেউ বাস করছে সমাজের উচ্চস্তরে, তো কেউ নিম্নস্তরে। বাহ্যত মানুষে মানুষে মেধা-সম্পদ-সম্পত্তির পার্থক্য দেখা গেলেও, আমরা একে-অপরের মুখাপেক্ষী। একজনের প্রয়োজনে আরেকজনকে সহযোগিতার দরকার হয়। কেউ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
আমাদের সমাজে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যারা অন্যের অধীনে কাজ করেন, বিশেষ করে কায়িক শ্রম নির্ভর যারা, তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। তাদের অধিকার আদায় হয় না ঠিকমতো। মজুরি মেলে না ঠিকঠাক, পেটের দায়ের সুযোগ নিয়ে কম মজুরিতে অতিরিক্ত খাটানো হয় শ্রমিকদের। শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশার এই চিত্র শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী। অথচ ইসলাম সমাজের-উঁচু-নিচু, জাতপাতের ভেদাভেদ, বৈষম্য কখনোই প্রশ্রয় দেয় না।
সবসময় শ্রমিক বা অধীনস্ত কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করতে বলেছেন আল্লাহর রাসূল (সা.)। যারা শ্রমিকের অধিকার আদায়ে অবহেলা করে তাদের সর্তক করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কঠিন শাস্তির।
এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে, তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তোমরা যা খাবে, তা থেকে তাদের খাওয়াবে এবং যা পরিধান করবে, তা তাদের পরিধান করতে দেবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
অপর এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অধীনস্তদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদের কোনো রকমের কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জানো না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথাদানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্টবোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করো না।’ (বুখারি)
রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয়, তবে নিজে সাহায্য করো।’ (বুখারি)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কোনো শ্রমিককে এমন কোনো দুঃসাধ্য কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না, যা তাকে অক্ষম ও অকর্মণ্য বানিয়ে দেবে।’ (বুখারি)
শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করার পরিণাম সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে স্বীয় দাস-দাসীকে (শ্রমিককে) প্রহার করবে, কিয়ামতের দিন তাকে তার পরিণাম ভোগ করতে হবে।’ (বায়হাকি)
শ্রমিকের মজুরি যথাসময়ে পরিশোধ করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন বিশ্বনবী। তিনি বলেছেন, ‘মজুরকে তার শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)
হজ পালনে এবার লাগবে বিশেষ ডিজিটাল কার্ড
বৈধ ও অবৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবারের হজ মৌসুমে প্রত্যেককে আলাদা করে একটি ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হবে। মূলত, অবৈধভাবে হজপালন নিরুৎসাহিত করতেই দেশটির এই উদ্যোগ। খবর গালফ নিউজের।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি হজযাত্রীদের প্রথম দলটি সৌদি আরবে পৌঁছাবে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। ঠিক তার আগেই অবৈধ বিদেশি হজযাত্রীদের রুখতে নতুন উদ্যোগ নিল দেশটি। চলতি সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় বৈধ হজযাত্রীদের জন্য একটি করে ডিজিটাল নুসুক কার্ড দেওয়ার প্রকল্প শুরু করেন সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ। এই কার্ডগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে সৌদি আরব যাওয়া হজযাত্রীদের দেওয়া হবে।
ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য মজুত থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই ডিজিটাল কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। এছাড়া হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় এই ডিজিটাল কার্ড দেখাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট দেশের হজযাত্রীদের জন্য ভিসা ইস্যু করার পর এই কার্ডটি সংশ্লিষ্ট হজ অফিস বিদেশি হজযাত্রীদের কাছে হস্তান্তর করবেন। আর সৌদির স্থানীয় হজযাত্রীরা হজ পারমিট ইস্যু হওয়ার পর দেশটির সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যালয় থেকে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
এর আগে গত মাসের শেষ দিকে হজযাত্রীদের প্রতারণা থেকে বাঁচাতে অননুমোদিত হজ অপারেটর ও ভুয়া অ্যাপের ব্যাপারে সতর্ক করে সৌদি আরব সরকার। পাশাপাশি সরকার অনুমোদিত বৈধ অপারেটর ও ওয়েবসাইট ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াতের ফজিলত
জুমার দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। সুরা কাহাফ পবিত্র কুরআনের ১৮ নম্বর সুরা। এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সুরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর আয়াত সংখ্যা ১১০। সুরাটি একসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে এবং এটি নাজিলের সময় ৭০ হাজার ফেরেশতা দুনিয়াতে আগমন করেছেন।
সুরা কাহাফ তেলাওয়াতের ফজিলত
১. যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা আল কাহাফ পড়বে, তার (ঈমানের) নুর এ জুমাহ হতে আগামী জুমাহ পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মিশকাত ২১৭৫)।
২. যে ব্যক্তি সুরা আল কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দাজ্জালের অনিষ্ট হতে নিরাপদ রাখা হবে। (মুসলিম) (মিশকাত)।
৩. যে ব্যক্তি সুরা কাহাফ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নুর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দিবে। আর যে ব্যক্তি উহার শেষ দশটি আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও সে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (সিলসিলায়ে সহীহা -২৬৫১)।
৪. যে ব্যক্তি জুমার রাত্রিতে সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা হতে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নুর হবে। (সহীহ তারগীব ওয়াত্ তারহীব - ৭৩৬)।
৫. জুমার দিনে সুরা কাহফ পাঠ করিলে কিয়ামত দিবসে তার পায়ের নীচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নুর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে। (আত তারগীব ওয়াল তারহীব- ১/২৯৮)
৬. জনৈক ব্যক্তি সুরাহ আল কাহাফ পড়ছিলেন। তখন লোকটি তাকিয়ে দেখতে পেলেন একখণ্ড মেঘ তাকে পরিবেষ্টন করে নিয়েছে। বারা ইবনু আযিব বর্ণনা করেছেন যে, লোকটি বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালামের কাছে বললেন। তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে অমুক তুমি সুরাটি পড়তে থাক। কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমত বা প্রশান্তি যা কোরআন তেলাওয়াতের কারণে বা এর জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল। (মুসলিম- ১৭৪২)।
যে ২ কাজে নষ্ট হয় জুমার সওয়াব
জুমার নামাজ ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। জুমা আরবি শব্দ, এর অর্থ একত্র হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্র হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে ‘জুমার নামাজ’ বলা হয়। সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।
কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ, যখন তোমাদের শুক্রবারের নামাজের (জুমার নামাজ) জন্য আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহকে স্মরণ করো এবং ক্রয় বিক্রয় পরিত্যাগ করো; যদি তোমরা বুঝে থাকো, তবে এতেই তোমাদের পক্ষে কল্যাণ। যখন নামাজ সমাপ্ত হয়, তখন পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর করুণার (জীবিকা) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো; সম্ভবত [এতেই] তোমাদের মুক্তি রয়েছে।’
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনের চেয়েও জুমার দিনের মর্যাদা ও গুরুত্ব বেশি। রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিন দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। জুমার দিন আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে মহান দিন। এমন কি এ দিন আল্লাহ তায়ালার কাছে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান। (সুনানে ইবনে মাজা)
জুমার দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গোসল করে মসজিদে গিয়ে উত্তমরূপে জুমার নামাজ আদায়ের অপরিসীম সওয়াবের কথা বর্ণনা করে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৯১০)
এ হাদিসে জুমার সওয়াব লাভের জন্য আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেমন কিছু করণীয় কাজের কথা বলেছেন, দুটি বর্জনীয় কাজের কথাও বলেছেন যা থেকে বিরত থাকা জুমার সওয়াব লাভের শর্ত: ১. মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া ২. খুতবার সময় কথা বলা
এ হাদিসটিসহ বিভিন্ন হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে এ দুটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন
মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া
জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার আগ্রহ ও চেষ্টা থাকা উচিত। কিন্তু সেজন্য আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হতে হবে। মসজিদে পরে উপস্থিত হয়ে অন্য মুসল্লিদের ডিঙিয়ে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করা অন্যায় ও গুনাহের কাজ।
খুতবা চলা অবস্থায় কেউ যদি কাতার ডিঙিয়ে সামনে যেতে চায়, তাহলে অন্য মুসল্লিদের উচিত তাকে এ কাজ করতে নিষেধ করা ও বসিয়ে দেওয়া। খতিব সাহেবের চোখে পড়লে তিনি নিজেই তাকে বসে যাওয়ার নির্দেষ দিতে পারেন। একবার রাসুল সা. জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তার চোখে পড়লো এক ব্যক্তি মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি তাকে বললেন, বসে পড়, তুমি দেরি করে এসেছ, মানুষকে কষ্টও দিচ্ছ। (সুনান আবু দাউদ)
জুমার খুতবার সময় কথা বলা
জুমার খুতবা শোনা ওয়াজিব। খুতবার সময় অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। রাসুল (সা.) খুতবার সময় চুপ থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ কর’ বলতেও নিষেধ করেছেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিন খুতবার সময় যদি তুমি তোমার সঙ্গীকে বলো, চুপ কর, তাহলেও তুমি অনর্থক কথা বললে। (সহিহ বুখারি)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে জুমার দিন ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় কথা বলে সে কিতাবের বোঝা বহনকারী গাধার মতো। (মুসনাদে আহমদ)
ফকিহরা বলেন, যেসব কাজ নামাজের মধ্যে হারাম, তা খুতবা চলাকালীন সময়ও হারাম। খুতবার সময় সুন্নত-নফল নামাজ পড়াও বৈধ নয়।
যে কারণে মক্কায় প্রবেশে সৌদির বাসিন্দাদের অনুমতি লাগবে
হজ সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এখন থেকে পবিত্র নগরী মক্কায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের বাসিন্দাদেরও অনুমতি লাগবে।
শনিবার (৪ মে) সৌদি আরবের জননিরাপত্তা বিষয়ক অধিদপ্তর ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে আরব নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হজ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও হজের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার অংশ হিসেবে সৌদি আরবের বাসিন্দাদেরও পবিত্র নগরী মক্কায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই অনুমতি নিতে হবে। পবিত্র স্থানগুলোতে যারা কাজ করবেন, মক্কার স্থায়ী বাসিন্দা, ওমরাহ ও হজের জন্য যাদের কাছে বৈধ অনুমতি থাকবে না তাদেরকে মক্কার প্রবেশদ্বার থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
২০২৪ সালের হজ পক্রিয়াকে আরও গতিশীল করার জন্য গত সপ্তাহে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় নুসুক অ্যাপ কার্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যা ডিজিটাল এবং সাধারণ উভয় ফরমেটে পাওয়া যাবে। হজ যাত্রীরা তাদের হজ মিশন অথবা যাদের মাধ্যমে হজ করতে আসবেন তাদের কাছে কার্ডটি পাবেন। অপরদিকে ডিজিটাল ফরমেটটি পাওয়া যাবে নুসুক এবং তাওয়াকলানা অ্যাপে।
নুসুক অ্যাপ কার্ডের ফলে হজের প্রক্রিয়া খুবই সহজে করা যাবে। এটির মাধ্যমে সহজে সব ধরনের সেবা পাবেন হজ যাত্রীরা। এমনকি যাদের মাধ্যমে তারা হজ করতে আসবেন তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট না হলে এটির মাধ্যমে অভিযোগও জানানো যাবে। ফলে অনুমতি ছাড়া হজ করার প্রবণতা কমে আসবে এবং পবিত্র স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।