ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা করলো আরব আমিরাত
মুসলমানদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার সম্ভব্য তারিখ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র। এক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক মুসলিম দেশে ২০ জুলাই ঈদুল আজহা পালিত হবে।
১০ জুলাই শনিবার ১৪৪২ হিজরি জিলহজ মাস শুরু হচ্ছে। আর আগামী ১৯ জুলাই আরাফার দিন এবং ২০ জুলাই ঈদুল আজহা পালিত হবে। এ হিসেব করেই তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। তবে সবকিছুই চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবারও বিদেশিদের জন্য হজ পালন বাতিল করেছে সৌদি আরব। দেশটিতে এই মুহূর্তে যারা বসবাস করছেন তারাই এবার হজ পালন করতে পারবেন। সূত্র: খালিস টাইমস
জেএইচ/পি
মন্তব্য করুন
টাকা জমা না দেওয়ায় ২২ হজ এজেন্সিকে চিঠি
সৌদি পর্বের খরচের পুরো টাকা জমা না দেওয়ায় ২২ হজ এজেন্সির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
রোববার (২১ জানুয়ারি) এজেন্সিগুলোর মালিকের কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, হজের ভিসা প্রদান কার্যক্রম আগামী ২৯ এপ্রিল বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু একাধিকবার পত্র ও জুম সভায় নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আপনার হজ এজেন্সিসহ মোট ২২টি হজ এজেন্সি সৌদি পর্বের খরচ নির্বাহের জন্য হাজী প্রতি এক লাখ ১০ হাজার বা এর চেয়েও কম টাকা (প্রাক-নিবন্ধনের অর্থসহ) জমা দেওয়ার পরে আর কোনো টাকা জমা করেননি। আপনার এমন কার্যক্রমের ফলে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমতাবস্থায় সোমবারের (২২ এপ্রিল) মধ্যে সৌদি পর্বের খরচের পুরো অর্থ জমা দেওয়াসহ কেন আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ জমা করেননি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’ অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
হজ এজেন্সিগুলো হলো ডিবিএইচ ইন্টারন্যাশনাল, গাউছিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড টুরস, স্মার্ট টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, ওয়ার্ল্ড লিংক টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, আনসারী ওভারসিজ, এয়ার ফিলিস্তিন ইন্টারন্যাশনাল, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেড, ফারিহা ওভারসিজ, গ্লোবাল ভিশন ট্রাভেলস, গালফ ট্রাভেলস, জিয়ারত বাইতুল্লা ট্রাভেলস, মেসার্স ঢাকার তরী, মাশ-আরে-হারাম হজ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস, মুবাশ্বিরা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, নর্থ বেঙ্গল হজ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, রোজিনা এয়ার ট্রাভেলস, সিনসিয়ার ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস লিমিটেড, স্কাই ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, মেহমান ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, হলি দারুন্নাজাত হজ ওভারসিজ ও ফিকাস ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল।
উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ পালন করবেন। আগামী ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
তীব্র গরমে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন
তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। চলমান এই অবস্থা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর, ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও তিন দিন বাড়িয়েছে।
হাদিসের বর্ণিত আছে যে,
প্রখ্যাত সাহাবি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় ও প্রচণ্ড গরম পড়ায় একদিন নবী (সা.) এর কাছে কিছু লোক এলো। (গরমের তীব্রতায়) তারা কাঁদছিল। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তাদের জন্য এভাবে দোয়া করলেন-
اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْثًا مُغِيثًا مَرِيئًا نَافِعًا غَيْرَ ضَارٍّ عَاجِلاً غَيْرَ آجِلٍ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাস কিনা গাইসান মুগিসান মুরিয়্যান নাফিয়ান গাইরা দাররিন আজিলান গাইরা আজিলিন।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদেরকে বিলম্বে নয় বরং তাড়াতাড়ি ক্ষতিমুক্ত-কল্যাণময়, তৃপ্তিদায়ক, সজীবতা দানকারী, মুষল ধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করো।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তাদের ওপর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায় (এবং বৃষ্টি হয়)। (আবু দাউদ ১১৬৯, ইবনু খুযাইমাহ ১৪১৬)
হাদিসে গরমকে আল্লাহর ক্রোধ বলা হয়েছে। আর আল্লাহর ক্রোধ থেকে বাঁচার জন্য নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেমন দান সদকা করতে বলেছেন, তেমনি দোয়াও শিখিয়ে গেছেন।
দোয়াটি হলো-
اَللهم إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ، وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ، وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ، وَجَمِيعِ سَخَطِكَ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আউজুবিকা মিন যাওয়ালি নি-মাতিকা ওয়া তাহাউলি আফিয়াতিকা ওয়া ফুজাআতি নিকমাতিকা ওয়া জামিয়ি সাখাতিকা।
অর্থ: হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি আপনার নিকট আপনার অনুগ্রহের অপসরণ, নিরাপত্তার প্রত্যাবর্তন, আকস্মিক পাকড়াও এবং যাবতীয় অসন্তোষ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (মুসলিম ২৭৩৯, আবু দাউদ ১৫৪৫)
তাই আসুন দুর্বিষহ এ সময়ে শান্তির বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করি। সম্ভব হলে ‘সালাতুল ইসতিসকা’ বা বৃষ্টির নামাজ পড়ি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
তীব্র গরম থেকে বাঁচার দোয়া
রাজধানীসহ সারাদেশেই চলছে তীব্র তাপদাহ। তাপদাহের কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর অতিরিক্ত গরমের ফলে ডায়রিয়া, ঠান্ডা-কাশিসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নানা বয়সি মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে বাঁচার জন্য রাসুল (সা.) আমাদের বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন গরম বেশি পড়বে, তখন বেশি নামাজ আদায় কর। কারণ অতিরিক্ত গরম হলো জাহান্নামের নিশ্বাস। (মিশকাত : ৫৯১)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে হে রব, আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। মহান আল্লাহ তখন তাকে দুটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে, আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো (বোখারি, হাদিস : ৩২৬০)।
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে- আবু জার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। এক সময় মুয়াজ্জিন জোহরের আজান দিতে চেয়েছিল। তখন নবিজি (সা.) বলেন, গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মুয়াজ্জিন আজান দিতে চাইলে নবিজি পুনরায় বলেন, গরম কমতে দাও। এভাবে তিনি (নামাজ আদায়ে) এত বিলম্ব করলেন যে, আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম। এরপর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা হয় জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচণ্ড হলে উত্তাপ কমার পর নামাজ আদায় কর। (বোখারি ৫৩৯)।
তীব্র গরম থেকে বাঁচার দোয়া:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ زَوَالِ نِعْمَتِكَ وَتَحَوُّلِ عَافِيَتِكَ وَفُجَاءَةِ نِقْمَتِكَ وَجَمِيعِ سَخَطِكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন যাওয়ালি নি'মাতিকা ওয়া তাহাওউলি আফিয়াতিকা ওয়া ফুজাআতি নিক্বমাতিকা ওয়া জামি'য়ি সাখাত্বিকা
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আপনার নিয়ামতের বিলুপ্তি, আপনার অনুকম্পার পরিবর্তন, আকস্মিক শাস্তি এবং আপনার সমস্ত ক্রোধ থেকে।
اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْثًا مُغِيثًا مَرِيئًا نَافِعًا غَيْرَ ضَارٍّ عَاجِلاً غَيْرَ آجِلٍ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাস কিনা গাইসান মুগিসান মুরিয়্যান নাফিয়ান গাইরা দাররিন আজিলান গাইরা আজিলিন।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমাদেরকে বিলম্বে নয় বরং তাড়াতাড়ি ক্ষতিমুক্ত-কল্যাণময়, তৃপ্তিদায়ক, সজীবতা দানকারী, মুষল ধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করুন।
যে কারণে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন
জাকাত মানে পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি। যা ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি। আল-কোরআনে নামাজের নির্দেশ যেমন ৮২ বার রয়েছে, অনুরূপ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাকাতের নির্দেশনাও রয়েছে ৮২ বার। জাকাত আদায় না করলে আল্লাহর কঠিন শাস্তি রয়েছে। এটি আদায়ে গড়িমসি করলেও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।
হযরত আবদুল্লাহ বিন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত আর জাকাত আদায় না করলে তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তার রসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০১৯)
পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! পণ্ডিত ও সংসারবিরাগীদের অনেকে লোকদের মালামাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে চলছে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে। আর যারা স্বর্ণ ও রুপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আজাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। (সুরা: তাওবাহ, আয়াত: ৩৪)
সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার। (সূরা তাওবা, আয়াত ৩৫)
তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। চলমান এই অবস্থা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর, ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও তিন দিন বাড়িয়েছে। দেশের নানান জায়গায় ইসতিসকা বা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ আদায় করা হচ্ছে।
ওমরাহর সুযোগ আরও সহজ করল সৌদি
বিদেশিদের জন্য পবিত্র ওমরাহ পালনের সুযোগ আরও সহজ করেছে সৌদি আরব। এখন থেকে যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরব গেলেই বিদেশিরা ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন। লাগবে না কোনো বিশেষ ভিসা।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো দেশ থেকে এবং যেকোনো ভিসায় সৌদি আরবে আগতরা এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করতে পারবেন।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ট্রানজিট, শ্রম ও ই-ভিসাসহ যেকোনো ভিসাধারী ব্যক্তি এ সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া ওমরাহ পালনের অনুমতি ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য ‘নুসুক’ অ্যাপ ব্যবহার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এদিকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে হজ ও ওমরা পালনকারীদের ইবাদত সহজ করতে ‘ডিজিটাল ব্যাগ’ চালু করেছে সৌদি সরকার। দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ব্যাগ প্রোগ্রাম হজ ও ওমরাযাত্রীদের জীবনমান সহজ করবে। তাদের হজ ও ওমরা পালন সহজ করবে। মুসল্লিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে এর মাধ্যমে। বিশেষ করে কখন তারা কোন বিধান পালন করবে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে।
কর্মীদের সঙ্গে যেমন আচরণ করতে বলেছেন রাসুল (সা.)
মহান আল্লাহ তা’আলা বৈচিত্র্য দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন মানুষকে। কাউকে সম্পদশালী করেছেন আবার কাউকে করেছেন দীনহীন। কাউকে বেশি মেধা দিয়েছেন, কাউকে দিয়েছেন কম। কেউ বাস করছে সমাজের উচ্চস্তরে, তো কেউ নিম্নস্তরে। বাহ্যত মানুষে মানুষে মেধা-সম্পদ-সম্পত্তির পার্থক্য দেখা গেলেও, আমরা একে-অপরের মুখাপেক্ষী। একজনের প্রয়োজনে আরেকজনকে সহযোগিতার দরকার হয়। কেউ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
আমাদের সমাজে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যারা অন্যের অধীনে কাজ করেন, বিশেষ করে কায়িক শ্রম নির্ভর যারা, তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। তাদের অধিকার আদায় হয় না ঠিকমতো। মজুরি মেলে না ঠিকঠাক, পেটের দায়ের সুযোগ নিয়ে কম মজুরিতে অতিরিক্ত খাটানো হয় শ্রমিকদের। শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশার এই চিত্র শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী। অথচ ইসলাম সমাজের-উঁচু-নিচু, জাতপাতের ভেদাভেদ, বৈষম্য কখনোই প্রশ্রয় দেয় না।
সবসময় শ্রমিক বা অধীনস্ত কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করতে বলেছেন আল্লাহর রাসূল (সা.)। যারা শ্রমিকের অধিকার আদায়ে অবহেলা করে তাদের সর্তক করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কঠিন শাস্তির।
এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে, তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তোমরা যা খাবে, তা থেকে তাদের খাওয়াবে এবং যা পরিধান করবে, তা তাদের পরিধান করতে দেবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
অপর এক হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অধীনস্তদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদের কোনো রকমের কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জানো না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথাদানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্টবোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করো না।’ (বুখারি)
রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয়, তবে নিজে সাহায্য করো।’ (বুখারি)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কোনো শ্রমিককে এমন কোনো দুঃসাধ্য কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না, যা তাকে অক্ষম ও অকর্মণ্য বানিয়ে দেবে।’ (বুখারি)
শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করার পরিণাম সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে স্বীয় দাস-দাসীকে (শ্রমিককে) প্রহার করবে, কিয়ামতের দিন তাকে তার পরিণাম ভোগ করতে হবে।’ (বায়হাকি)
শ্রমিকের মজুরি যথাসময়ে পরিশোধ করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন বিশ্বনবী। তিনি বলেছেন, ‘মজুরকে তার শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)
হজ পালনে এবার লাগবে বিশেষ ডিজিটাল কার্ড
বৈধ ও অবৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবারের হজ মৌসুমে প্রত্যেককে আলাদা করে একটি ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হবে। মূলত, অবৈধভাবে হজপালন নিরুৎসাহিত করতেই দেশটির এই উদ্যোগ। খবর গালফ নিউজের।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি হজযাত্রীদের প্রথম দলটি সৌদি আরবে পৌঁছাবে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। ঠিক তার আগেই অবৈধ বিদেশি হজযাত্রীদের রুখতে নতুন উদ্যোগ নিল দেশটি। চলতি সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় বৈধ হজযাত্রীদের জন্য একটি করে ডিজিটাল নুসুক কার্ড দেওয়ার প্রকল্প শুরু করেন সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ। এই কার্ডগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে সৌদি আরব যাওয়া হজযাত্রীদের দেওয়া হবে।
ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য মজুত থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই ডিজিটাল কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। এছাড়া হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় এই ডিজিটাল কার্ড দেখাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট দেশের হজযাত্রীদের জন্য ভিসা ইস্যু করার পর এই কার্ডটি সংশ্লিষ্ট হজ অফিস বিদেশি হজযাত্রীদের কাছে হস্তান্তর করবেন। আর সৌদির স্থানীয় হজযাত্রীরা হজ পারমিট ইস্যু হওয়ার পর দেশটির সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যালয় থেকে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
এর আগে গত মাসের শেষ দিকে হজযাত্রীদের প্রতারণা থেকে বাঁচাতে অননুমোদিত হজ অপারেটর ও ভুয়া অ্যাপের ব্যাপারে সতর্ক করে সৌদি আরব সরকার। পাশাপাশি সরকার অনুমোদিত বৈধ অপারেটর ও ওয়েবসাইট ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।