• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনাভাইরাস থেকে উষ্ণমণ্ডলীয় দেশগুলো কী তুলনামূলক নিরাপদ?

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ০৫ এপ্রিল ২০২০, ১৬:৫৮
করোনাভাইরাস থেকে উষ্ণমণ্ডলীয় দেশগুলো কী তুলনামূলক নিরাপদ

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতে সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক বলছেন, ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি তাপমাত্রায় কোনো বস্তু বা বাতাসে করোনাভাইরাস টিকতে পারে না। ফলে বাংলাদেশের মতো উষ্ণমণ্ডলীয় দেশকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে করছেন তারা। তবে আবহাওয়ার সুফল পেতে, পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি, এয়ার কন্ডিশন ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাস এবার সেসব অঞ্চলেই বেশি ছড়িয়েছে, যেসব অঞ্চলে গড় তাপমাত্রা ৫ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবার এসব এলাকায় আর্দ্রতাও কম। এতেই বলে দেওয়া যায় না যে করোনা ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে তার পথ পরিবর্তন করবে না কিংবা উষ্ণঅঞ্চলে ছড়াবে কম মাত্রায়। এখনো তা বলার সময় আসেনি। বরং অপেক্ষাকৃত উষ্ণ এলাকায় ছড়ানোর রেকর্ড আছে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একদল গবেষক এশিয়ার দেশগুলোতে এই মহামারির বিস্তার নিয়ে কাজ করছেন। তাদের কথা, উষ্ণ অঞ্চলে ছড়াবে না বলে যে আশা করা হচ্ছে তা আসলে ক্ষীণ।

এ বিষয়ে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর বলেন, গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজে বিজ্ঞানীরা ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় করোনভাইরাস সংরক্ষণ করেন। যা পরে গবেষণার কাজে লাগানো হয়। ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ ভাইরাসের মৃত্যু হয়। তবে ৬৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়ও এর শতভাগ মৃত্যু নিশ্চিত হয় না। তাই যারা বলেন যে, গ্রীষ্মকালে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটবে না, তাদের তথ্য সঠিক নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ভাইরোলজি বিষয়ে পিএইচডি ও পোস্টডক্টরেট করা এ গবেষক বলেন, ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার উপরের তাপমাত্রায় এ ধরনের ভাইরাসের কার্যকারিতা কমতে থাকে। তবে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় না। বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গরম সবচেয়ে বেশি। এ সময়েই ভাইরাসজনিত ইনফ্লুয়েঞ্জায় মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। অর্থাৎ বাংলাদেশের সামগ্রিক তাপমাত্রা নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য উপযোগী সময়।

তিনি আরও বলেন, তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চীনের সংক্রমণ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতি একজন থেকে কোভিড-১৯ রোগটি চারজনের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে। সেজন্যই রোগীদের আইসোলেশনে রাখা হয়। এতে ৫০ শতাংশ সংক্রমণ কমানো সম্ভব। এ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন সর্বোত্তম পন্থা।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলামের বলছেন, ‘এটা বলার সময় এখনো আসেনি। শুধু ঋতু পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে এ ধরনের একটি উপসংহারে আসার কোনো অবকাশ নেই। আর এ নিয়ে এখন কাজে ঢিলা দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর, বি) ভাইরোলজি ল্যাবরেটরির প্রধান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্বের সব ভাইরোলজিস্ট বলছেন, এটা নভেল ভাইরাস। সেখানে তাপমাত্রা কোনো বিষয় না। আমিও তাদের সঙ্গে একমত। তবে প্রবণতা বলছে ঠান্ডার প্রকোপ যেখানে বেশি সেখানে অপেক্ষাকৃত বেশি ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। কিন্তু এখানে তাপমাত্রা কোনো ভূমিকা রেখেছে কিনা, তা বলা এখন অসম্ভব।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • স্বাস্থ্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আগে ঘরের ছেলেরা নিরাপদে ঘরে ফিরুক
২০ বছরে সিসিমপুর
ইন্টারনেটে শিশুদের নিরাপদ থাকতে শেখাবে সিসিমপুর
‘ঈদে রেল যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরেছেন’
X
Fresh