‘শোকজ’এর উত্তরে অসন্তুষ্ট
এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপে যাচ্ছে ইউজিসি
কথিত ভিসি ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেকের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এবার কঠোর পদক্ষেপের দিকে যাচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভিভাবক প্রতিষ্ঠান ইউজিসি। মূলত এই করোনা মহামারিতে গেলো ঈদুল ফিতরে ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও বোনাস না দেয়ায় ভুক্তভোগীরা ইউজিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এই প্রেক্ষিতে গত ৭ মে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর কথিত ভিসি ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেককে নোটিশ দিয়ে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চায় ইউজিসি। কিন্তু সেই নোটিশের উত্তরে চরম অসন্তুষ্ট হয় প্রতিষ্ঠানটি এবং ধীরে ধীরে কঠোর পদক্ষেপে দিকে যাবেন বলে ইউজিসির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
অসন্তুষ্ট হবার কারণ সম্পর্কে ইউজিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যে বেতন ও বোনাস দিয়েছেন সেটার কোনো দালিলিক প্রমাণ সংযুক্ত করেননি ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক। যেমন সেলারি শিট বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট। এজন্যই আমরা গত ২৩ জুন চিঠি দিয়ে মাস ভিত্তিক বেতনের তথ্য সম্বলিত তালিকা, সেলারি শিট বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট চিঠি দেয়ার পরবর্তী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কথিত ভিসি ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এই প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেছেন, বেতন ও বোনাস না দেয়ার বিষয়ে ইউজিসির কাছে অভিযোগ করায় ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়েছেন ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক এবং আমাদের কারো কারো কাছ থেকে জোড় করে সাদা কাগজেও স্বাক্ষর নিয়েছেন। অথচ এখনো অনেক কষ্টে চলছে আমাদের সংসার।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ৩১(২) অনুযায়ী ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী এবং একাডেমিক কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্যের স্বাক্ষর ছাড়া সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য হবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসি কর্তৃক স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট অবৈধ হবে। একই সাথে অর্থ সংক্রান্ত চেক এবং কোনো দলিলপত্র স্বাক্ষর করাও বৈধ হবে না।
সেক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেরণ করা যেকোনো দলিলপত্র অবশ্যই বেধ নয় এমনকি যে সার্টিফিকেটগুলো নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা গর্ব বোধ করছে সেগুলোও বৈধ নয় বলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক বহু বছর ধরেই এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ করা ভিসি বা উপাচার্য নন এবং তার বিরুদ্ধে গত ২৫ বছর ধরেই বহু অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রযেছে। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং করেছেন মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায়।
সি/
মন্তব্য করুন