পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের প্রতি কঠোরতা নয়, পাশে দাঁড়ান
এ বছর এইচএসসি ও সমামান পরীক্ষায় পাসের হার ৬৬.৬৪ শতাংশ। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু পাসের হার কমলেও তাতে হতাশ হননি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কঠোরভাবে খাতা দেখার জন্যই এবার পাসের হার কমেছে। তবে তাতে গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, যারা ফেল করেছে বা কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি, তাদের যেন বকাঝকা করা না হয়।
কিন্তু বাস্তবতা কী বলছে? যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেনি বা কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি তাদের অভিভাবকরা মুখ বন্ধ করে বসে থাকেননি।
সেরকম ভুক্তভোগী একজন মিলা (ছদ্মনাম) এইচএসসিতে অল্প কিছু নম্বরের জন্য জিপিএ ৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এতে সে কলেজ থেকে রেজাল্ট নিয়ে বাসায় ফিরবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়। তবে সাহস জুগিয়ে বাসায় ফেরে। কিন্তু বাসায় যেতেই বাবা মা’র বকাঝকা শুরু হয়ে যায়।সবার আশা ছিল মেয়েকে মেডিকেলে পড়াবে। সেই আশা প্রায় গুড়েবালি।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার পরপরই স্বভাবতই মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। সেসময় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না হলে তাকে সমবেদনা না জানিয়ে যদি তার প্রতি কঠোর হন, তাহলে তার ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
তারা মনে করেন, পয়েন্টে এগিয়ে থেকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়তো হওয়া যায়। কিন্তু পয়েন্টে পিছিয়ে থেকেও যে ভালো করা যায় তার উদাহরণ সমাজে হিসেব ছাড়া, বা বিশ্বের সফল ব্যক্তিদের জীবনীর দিকে তাকালেও দেখা যায় শীর্ষ সফল ব্যক্তিরাও কিন্তু পয়েন্টে নিচের ফলাফল নিয়ে র্শীর্ষে চলে এসেছেন।
মুনমুন (ছদ্মনাম), একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো অবস্থানে চাকরি করেন। তিনি জানান, এইচএসসি পরীক্ষায় তার ফলাফল ভালো ছিল না।
কিন্তু তাতে কী, দুইবারের চেষ্টায় এইচএসসিতে মোটামুটি ফলাফল করে নিজ যোগ্যতায় এখন ভালো অবস্থানে চাকরি করছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল আহমেদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, মানুষের জীবনে সফলতা ব্যার্থতা দুইটাই থাকে। বাবা-মার ভাবা উচিত একটা পরীক্ষায় খারাপ করলে জীবনের সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। সে হয়তো এই পরীক্ষায় খারাপ করেছে কিন্তু ভবিষ্যতের ফল ভালো হবে। পরিবার থেকে বকাঝকা করলে সেটা মানসিক বিপর্যয় নিয়ে আসে। এমনকি আত্মহত্যাও হতে পারে। জীবনের থেকে পরীক্ষার ফলটা বড় না।
আরসি/এমকে
মন্তব্য করুন