চলতি বছর কলেজে আসন খালি থাকবে আট লাখের বেশি
ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছর এসএসসি পাস করা সব শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পরও আট লাখের বেশি আসন খালি থাকবে। তবে মানসম্পন্ন কলেজে ভর্তিতে প্রতিযোগিতা থাকবে।
শিক্ষা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২৫ লাখ। এসএসসি পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এসএসসি পাস সবাই কলেজে ভর্তি হলেও আট লাখের বেশি আসন খালি থেকে যাবে।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
এবারও শিক্ষার্থীদের ফলের ভিত্তিতে তিন পর্যায়ে আবেদন নেওয়া হবে। আগামী ২৬ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ১৫ জুলাই থেকে, যা চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। আর ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে।
মন্তব্য করুন
এইচএসসি শুরু রোববার, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষা আগামী রোববার (৩০ জুন) শুরু হবে।
এবার ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিবেন। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি/আলিম/এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল)/ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষা ২ হাজার ৭২৫টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ৯ হাজার ৪৬৩টি। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৯১,৪৪৮ জন।
এদিকে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে ২৯ জুন থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
এ ছাড়া সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা সম্পন্নের লক্ষ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়–
এর মধ্যে রয়েছে, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিখে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন অথবা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না; শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন (তবে ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন)।
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (যেমন: পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক (ইনভিজিলেটর), মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
এ ছাড়া বিশেষ সক্ষম (ডিফারেন্টলি অ্যাবল) পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, সেরিব্রালপালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতিলেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট বাড়ানো হয়েছে।
প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউনসিন্ড্রম, সেরিব্রালপালসি) পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বাড়ানোসহ শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহযোগিতায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
![এইচএসসি শুরু রোববার, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/28/image-280273-1719570488.jpg)
‘শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফার গল্প’ শীর্ষক বহুল আলোচিত গল্পটি বাদ দেওয়াকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘নতজানু’ সিদ্ধান্ত বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
শুক্রবার (২৮ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি।
গণমাধ্যমে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বলেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের ‘নতজানু’ সিদ্ধান্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষদের সংগ্রাম ও ইতিহাসকে অশ্রদ্ধারই শামিল। হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার যে নীতিমালা গ্রহণ করেছে, তার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
এর আগে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ৩৯ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ নামক অধ্যায়ে থাকা পাঠ্যবইতে থাকা ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। পরে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুর রশীদকে আহ্বায়ক করে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশে গত ৪ জুন পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফার গল্প’ বাদ দিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়।
ওই বিশেষজ্ঞ কমিটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বলেছে, উচ্চপর্যায়ের এই বিশেষজ্ঞ কমিটিতে কোনো চিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও হিজড়া সম্প্রদায়ের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।
সংগঠনটি মনে করে, ‘শরীফার গল্প’টি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে বহুত্ববাদের তত্ত্বের ভিত্তিতে যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হলো, তা প্রথম পর্যায়েই বড় ধাক্কা খেল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গল্পটিকে বাদ দেওয়ার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা প্রমাণ করে মৌলবাদ আর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার যে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণুতা) নীতিতে এগিয়ে চলছে, মন্ত্রণালয় তার গুরুত্ব অনুধাবন করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এই বিবৃতিতে শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুন নবী, ফওজিয়া মোসলেম, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরসহ অনেকে সই করেছেন।
![‘শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/06/28/image-280306-1719583836.jpg)
এসএসসিতে বাদ যাচ্ছে জিপিএ, আসছে লেটার গ্রেড
দীর্ঘদিন পর্যালোচনার পর অবশেষে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু নম্বরের ভিত্তিতে জিপিএর মাধ্যমে ফল প্রকাশের ধারা থেকে বেরিয়ে আসছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি। এর পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে লেটার গ্রেডে। সাতটি স্কেলে আলাদা ইংরেজি বর্ণে প্রকাশ করা হবে এসএসসির ফলাফল।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এসএসসির মূল্যায়নে লিখিত অংশের ওয়েটেজ হবে ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ হবে ৩৫ শতাংশ। একেকটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে সর্বোচ্চ এক স্কুল দিবস (দিনে যতক্ষণ স্কুল চলে)।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মূল্যায়ন–কাঠামো অনুমোদন দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক স্তর এবং কারিগরি ও মাদরাসা স্তরের যৌথ জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভা অনুষ্ঠিত হয় গতকাল সোমবার। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের মূল্যায়ন কৌশলের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় কমিটি।
এনসিসিসির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, খসড়া মূল্যায়ন–কাঠামোয় একেকটি বিষয়ে পাঁচ ঘণ্টায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা আলোচনা হয়েছিল বৈঠকে। তবে এনসিসিসির সভায় এ বিষয়ে আরও নমনীয় হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ে সর্বোচ্চ এক স্কুল দিবসে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়।
নতুন কাঠামোর খসড়ায় বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীর নির্ধারিত পারদর্শিতা অনুযায়ী সাতটি স্কেল বা সূচকে ফল বা রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হবে। এই সাত স্কেলের নাম হবে অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। যেমন সর্বোচ্চ স্কেল ‘অনন্য’ বলতে বোঝানো হবে শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পারদর্শিতার চূড়ান্ত স্তর অর্জন করেছে। পক্ষান্তরে প্রারম্ভিক স্তর বলতে পারদর্শিতার সবচেয়ে নিচের স্তরকে বোঝানো হবে। রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের ফলাফল আলাদাভাবে প্রকাশিত হবে।
তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার এই সাত স্কেল বোঝানো হবে সাতটি ইংরেজি বর্ণ দিয়ে। এখনকার মতো নম্বরের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হবে না এ লেটার গ্রেড। মূলত অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষ যেন সহজে ফলাফল বুঝতে পারে, সেজন্য এই পদ্ধতি অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, কোনো শিক্ষার্থী যদি এসএসসি পরীক্ষায় এক বা দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়, তাহলে শর্ত সাপেক্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে তাকে এসএসসি পরীক্ষায় ওই বিষয়ে পাস করতে হবে। আর তিন বা তার বেশি বিষয়ে অকৃতকার্য হলে একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে না।
মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসছে প্রশ্নের ধরনেও। কার্যক্রমভিত্তিক (অ্যাসাইনমেন্ট করা, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যার সমাধান করা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি) বিষয়ের সঙ্গে মিল রেখে হবে লিখিত অংশের মূল্যায়ন।
চলমান পদ্ধতিতে দশম শ্রেণিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় (টেস্ট) উত্তীর্ণ হলে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে আর নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। কোনো শিক্ষার্থী যদি দশম শ্রেণিতে ৭০ শতাংশ কর্মদিবস উপস্থিত না থাকে, তাহলে সে পাবলিক মূল্যায়ন বা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।
এ ছাড়া নতুন নিয়মে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনা হলেও এখনকার মতো শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনেই এখনকার মতো কেন্দ্রভিত্তিতে হবে এই পরীক্ষা বা মূল্যায়ন।
তবে মাদরাসায় এখন পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত হয়নি, তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে দাখিল পরীক্ষা আগের নিয়মেই হবে। তবে বিশেষায়িত বিষয়গুলো বাদে বাকি বিষয়গুলোর মূল্যায়ন শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে।
এদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে আগামীকাল (৩ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে অর্ধবার্ষিক (ষাণ্মাসিক) মূল্যায়ন। পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন–কাঠামোর খসড়ার সঙ্গে মিল রেখে হচ্ছে এই পরীক্ষা। এনসিসিসির সবশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই সামষ্টিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়ন চূড়ান্ত হবে।
প্রসঙ্গত, প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে গত বছর। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতেও চালু হয় এ শিক্ষাক্রম। ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম।
এছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারাই প্রথমবারের মতো নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্বে থাকা সংস্থাটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, মূল্যায়নের বিষয়ে এনসিটিবি যে কৌশল ঠিক করেছিল, সেখানে কিছু সংশোধনী নিয়ে এনসিসিসির সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন কার্যপত্র হলে সবাইকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
![এসএসসিতে বাদ যাচ্ছে জিপিএ, আসছে লেটার গ্রেড](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/02/image-280823-1719904925.jpg)
কোটাবিরোধী আন্দোলন / আজ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক অবরোধ
কোটা বাতিলের এক দফা দাবিতে এবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের সড়ক, নৌ ও রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, সারাদেশের সব মহাসড়ক, নৌ ও রেলপথ এ ব্লকেডের আওতাভুক্ত থাকবে।
সমন্বয়কারীরা সাংবাদিকদের জানান, আজ দেশের বিভিন্ন জায়গার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গণসংযোগ করেছেন তারা। আদালতের নির্দেশের বাইরেও তারা সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস চান কোটা বাতিলের বিষয়ে। এ কারণে তারা বুধবার সকাল-সন্ধ্যা ব্লকেড পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
পরে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। এর প্রতিবাদে গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা।
![আজ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক অবরোধ](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/09/image-281911-1720529361.jpg)
শিক্ষকদের সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষকদের বেতন চলতি বাজেটে বাড়ানো না গেলেও আগামী বাজেটে তা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে নৈপুণ্য অ্যাপ, জাতীয় পাঠ্যক্রম পোর্টাল ও বিষয়ভিত্তিক অনলাইন ট্রেনিং কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো প্রয়োজন। তবে আমরা এই বাজেটে সেটা অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। আশা করছি আগামী বাজেটে এটা করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ব্যয় কমিয়ে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি করলে শিক্ষকদের বেতন সহজেই বাড়ানো যায়।’
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষকদের পুরস্কার দিতে শিগগিরই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সারাদেশের শিক্ষকরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতাটি হবে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের কত ভালো এবং সহজভাবে পাঠদান করতে পারেন তার ওপর। শিক্ষকরা পাঠদানের ভিডিও করে সেটি জমা দেবেন।’
শুধুমাত্র জ্ঞানমুখী নয়, উদ্ভাবনী চিন্তায় রূপান্তর আনতেই নতুন শিক্ষা-কার্যক্রম তৈরি করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
![শিক্ষকদের সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/10/image-282091-1720632944.jpg)
মাঝরাতে উত্তাল ঢাবি, পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ছাত্রলীগের চার নেতা
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে এমন অভিযোগে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সেইসঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের চার নেতা। ফেসবুকে তারা পদত্যাগের এ ঘোষণা দেন।
রোববার রাত ১১টার পর থেকে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’- এরকম বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিল বের করতে গিয়ে কয়েকটি হলে ছাত্রলীগের নেতা এবং পদপ্রত্যাশীদের বাঁধার মুখে পড়েন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের তোড়ে পিছু হটতে বাধ্য হন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আন্দোলনকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন। এর প্রতিবাদেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মিছিল শুরু করেছে।
এদিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের চার নেতা পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের গণ যোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা উপ সম্পাদক রাতুল আহমেদ শ্রাবণ এবং কবি জসীমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের দুই নেতা রাসেল হোসেন ও রাফিউল ইসলাম রাফি।
![মাঝরাতে উত্তাল ঢাবি, পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ছাত্রলীগের চার নেতা](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/15/image-282675-1720982776.jpg)
রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়: শিক্ষামন্ত্রী
জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘এদের আওয়াজে বিভ্রান্ত হলে চলবে না! এ যুগের রাজাকারদের পরিণতি ওই যুগের রাজাকারদের মতই হবে! ঘৃণা, ধিক্কার, আর ক্রোধ এদের প্রতি! রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়!’
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা উল্লেখ করেছেন
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা করেছে, আন্দোলন করেছে। এটি অবশ্যই নাগরিক অধিকার। এ ব্যাপারে কারও কোনো দ্বিমত নেই।
কিন্তু যারা প্রকাশ্যে নিজের আত্মপরিচয়, জন্ম পরিচয়, ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে, ‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার! রাজাকার!’ স্লোগান দিয়েছে, এরা সবাই এই যুগের রাজাকার।
এরা রাষ্ট্র মানে না, আদালত মানে না, ইতিহাস মানে না, এবং সর্বোপরি এই দেশকেই মানে না!
আর ফেসবুকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই যুগের রাজাকারেরা একটু সক্রিয় বেশি। কারণ, কিছু একটা মন্তব্য লিখে, একটা স্ট্যাটাস দেওয়ার ভার্চুয়াল রাজাকারি করা অনেক সহজ।
তিনি বলেন, রাজাকার আগেও ছিল এবং এর ধারাবাহিকতায় এখনও আছে! ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে প্রায় ২০% শতাংশ ভোট পড়েছিল নেজামি ইসলামি, মুসলিম লীগ ইত্যাদি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষ তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এই ২০% এর অর্ধেক ১০% ধরে আজকের ১৬ কোটি মানুষের সাথে মেলালে আসবে ১.৬ কোটি। এর মধ্যে ০.৬ কোটিও যদি সারাদিন নিজের রাজাকারির অরাজকতা প্রকাশ করে, বাকি জনগোষ্ঠীর তুলনায় এরা নগণ্যই থাকবে!
এদিকে রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।’
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য ঘিরে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে, আমি কে; রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে; স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের খবর ছড়িয়ে পড়লে বুয়েট, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতে একই স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতরা। পরে তারা প্রধানমন্ত্রীকে তারা বক্তব্য প্রত্যাহারে আলটিমেটামও দেন। এরপর সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ ইস্যুতে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
![রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়: শিক্ষামন্ত্রী](https://www.rtvonline.com/assets/news_photos/2024/07/15/image-282739-1721030618.jpg)