জাবিতে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম জিসান আহম্মেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলবেরুনি হলের কর্মচারী মো. নজরুল ইসলামের মেজো ছেলে।
সোমবার (৬ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাম বরকত ও তাজউদ্দীন হল সংলগ্ন সড়কের পার্শ্ববর্তী একটি গাছে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান পথচারীরা।
খবর দেওয়ার পর আশুলিয়া থানা পুলিশ সকাল ৭টায় মরদেহটি উদ্ধার করে।
আলবেরুনী হলের কর্মচারীদের সূত্রে জানা গেছে, জিসান পরিবারের সঙ্গে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কলাবাগান এলাকায় আনসার ক্যাম্পের পেছনে থাকতেন। তাদের পৈতৃক নিবাস শেরপুর জেলার সদর থানায়। স্থানীয় একটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে তিনি একটু গরুর খামার দেখাশোনা করতেন। পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জিসানের বড় ভাই ওলিউল্লাহ জানান, রোববার সন্ধ্যায় ঝড়ের আগে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়৷ পরে ঝড় থামলে বাড়িতে ফিরলে মা তাকে এতক্ষণ কোথায় ছিল এটা জিজ্ঞেস করে? গরুকে পানি খাওয়ানো হয় নাই এজন্যে বকাঝকা করে৷ পরে সে আবার রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়।
আশুলিয়া থানার এসআই জি এম আসলামুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে। কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা মরদেহ দাফনের অনুমতি চেয়েছে পরিবার। তবে এখনও মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসকের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জিসানের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, সে সন্ধ্যার সময় বাসা থেকে বেরিয়েছিল এবং আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টায় বাসায় ফিরে আসে। তার মা তাকে বলেছিল এত রাতে কোথায় ছিলি, গরুগুলোকে এখনও পানি খাওয়ানো হয়নি, এ বিষয়ে তার মায়ের সঙ্গে একটু কথা কাটাকাটি হয় এবং সে পুনরায় বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। পরে রাতে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হলেও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর দাবি, জিসান কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। নেহাত ভদ্র ছেলে হিসেবেই তিনি সবার কাছে পরিচিত। কিন্তু এরকম কেন করলো এলাকাবাসী বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে পারছে না।
ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা শাখার প্রধান সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘এই ছেলেকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি, সে খুবই ভদ্র ছেলে। মায়ের সঙ্গে হালকা কথা কাটাকাটির পর ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে তার খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। এখানে তার পরিবারের কারও কোন অভিযোগ নেই। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়ে মরদেহ দাফনের অনুমতি দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আনসার ক্যাম্পের পেছনে ঘটনাস্থল হওয়ায় তাদের এখানে থেকে সরাসরি দেখা যায়। আমি এসে দেখে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মরদেহ নামায়।’
মন্তব্য করুন